গাজার সাথে জড়িত 'সব পক্ষ'কে যুদ্ধ বিষয়ক আইন মানতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪১ পিএম

গাজার সার্বিক পরিস্থিতির সাথে জড়িত 'সব পক্ষ' যুদ্ধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে বলে আশা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৫ জনের বিষয়ে দেশটি কোনও মূল্যায়ন করেছে কী না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা।

 

নিহতদের মাঝে কেউ ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, কেউ আবার বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী ও একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা।

 

এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, "এ মুহূর্তে গাজায় যা কিছু ঘটছে, সেই সবকিছুর জন্যই হামাস দায়ী।"

 

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, গত ২৩শে মার্চ পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স, একটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাক এবং একটি জাতিসংঘের গাড়ি একের পর এক হামলার শিকার হয়েছে।

 

এই ঘটনায় ১৫ জন নিহত হন এবং তাদের সকলকে একত্রিত করে গণকবরে দাফন করা হয়েছে।

 

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা এমন কিছু যানবাহনের ওপর গুলি চালিয়েছে, যেগুলো 'সন্দেহজনকভাবে' অগ্রসর হচ্ছিলো।

 

কারণ ওই যানবাহনগুলো তাদের হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখেনি বা যানবাহনগুলোতে কোনও জরুরি সংকেতও চালু ছিল না। তাদের দাবি, নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন হামাস সদস্য।

 

তবে মরদেহগুলোকে একসাথে বালিতে কবর দেওয়া নিয়ে তারা কোনও মন্তব্য করেনি।

 

যুদ্ধ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।

 

একই সাথে চিকিৎসা সেবার সাথে যুক্ত মানুষদের ব্যাপারেও এই আইনে বিশেষ সুরক্ষা দেবার কথা বলা হয়েছে।

 

ইসরাইলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও তার নিজের আইনের কাছে বাধা।

 

আইন অনুযায়ী, যুদ্ধ বিষয়ক আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি সামরিক বাহিনী এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে না।

 

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান জনাথন হুইটল জানিয়েছেন, ইসরাইলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটু অ্যাম্বুলেন্সের জরুরি আলোর সাহায্যে গণকবরটি চিহ্নিত করা হয়েছে।

 

"এখানে যা হয়েছে, তা পুরোপুরিভাবে একটি ভয়াবহ ঘটনা," এক্স-এ প্রকাশিত এক ভিডিওতে বলেন মি. হুইটল।

 

তিনি যোগ করেন, "স্বাস্থ্যকর্মীরা কখনোই লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।"

 

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর গত ১৮ই মার্চ থেকে ইসরাইল ফের গাজায় আকাশ ও স্থল অভিযান চালানো শুরু করে।

 

সেই থেকে গাজায় এক হাজার জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

 

এদিকে, নতুন করে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার বেশকিছু স্থান খালি করার নির্দেশনা দিয়েছে তেলআবিব।

 

নোটিশে বলা হয়েছে, 'সন্ত্রাসী'দের নিরস্ত্র করার জন্য ইসরাইলি সেনাবাহিনী বড় ধরনের অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে, ফলে রাফা এবং পার্শ্ববর্তী খান ইউনিসের স্থানীয় বাসিন্দারা যেন দ্রুত আল-মাওয়াসি অঞ্চলে সরে যান।

 

এরপর ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সাম্প্রতিক দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় রাফায় নিজেদের বাড়িতে ফেরত আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন।

 

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে গাজার এক পঞ্চমাংশ এলাকা এখন খালি করে ফেলা হয়েছে।

 

এদিকে জরুরি ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে ওষুধ স্বল্পতা। যুদ্ধবিরতি ভেঙে লাগাতার ১৫ দিনের মতো চলছে ইসরাইলি আগ্রাসন।

 

২০২৩ সালের সাতই অক্টোবর সীমান্ত পার করে ইসরাইলের ওপর হামাসের এক নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরাইল গাজায় এই অভিযান শুরু করে।

 

ওই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জন ইসরাইলিকে জিম্মি করা হয়।

 

এরপর থেকে চলমান যুদ্ধে ৫০ হাজার ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সূত্র: বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ড. ইউনূস এর অনুরোধেই কি ট্রাম্প ৯০ দিন পেছালো শুল্ক আরোপ!
ভারতের মত অন্য কোনও দেশ বাংলাদেশের এতটা মঙ্গল চায় না : জয়শঙ্কর
ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে ভারতজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ, বন্ধ ইন্টারনেট
সউদীতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করল চীন
আরও
X

আরও পড়ুন

রামুতে সা,কা চৌধুরীর বিরোদ্ধে মানবতা বিরোধী সাজানো মামলায় স্বাক্ষ্যদানকারী আটক

রামুতে সা,কা চৌধুরীর বিরোদ্ধে মানবতা বিরোধী সাজানো মামলায় স্বাক্ষ্যদানকারী আটক

রাজবাড়ীতে ছেলে-পুত্রবধূর নির্যাতন ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে মায়ের আত্মহননের চেষ্টা

রাজবাড়ীতে ছেলে-পুত্রবধূর নির্যাতন ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে মায়ের আত্মহননের চেষ্টা

পাঁচবিবিতে ১লা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সভা

পাঁচবিবিতে ১লা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সভা

দাউদকান্দিতে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ২

দাউদকান্দিতে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ২

ড. ইউনূস এর অনুরোধেই কি ট্রাম্প ৯০ দিন পেছালো শুল্ক আরোপ!

ড. ইউনূস এর অনুরোধেই কি ট্রাম্প ৯০ দিন পেছালো শুল্ক আরোপ!

মেঘবালিকা'য় দর্শক মুগ্ধ,ভিউ সাড়ে ছয় মিলিয়ন

মেঘবালিকা'য় দর্শক মুগ্ধ,ভিউ সাড়ে ছয় মিলিয়ন

রায়পুরে দু'গ্রুপের সংঘর্ষ-হত্যার ঘটনায় মামলা, বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী বহিষ্কার

রায়পুরে দু'গ্রুপের সংঘর্ষ-হত্যার ঘটনায় মামলা, বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী বহিষ্কার

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় ৮শ' জনকে আসামী করে মামলা

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় ৮শ' জনকে আসামী করে মামলা

সারা দেশের ন্যায় কলাপাড়ায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

সারা দেশের ন্যায় কলাপাড়ায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

ভারতের মত অন্য কোনও দেশ বাংলাদেশের এতটা মঙ্গল চায় না : জয়শঙ্কর

ভারতের মত অন্য কোনও দেশ বাংলাদেশের এতটা মঙ্গল চায় না : জয়শঙ্কর

সাভারে চাঁদা না পেয়ে গুলি ছুড়ে খেয়া ঘাটের নৌকা লুট, অস্ত্র হাতে ভিডিও ভাইরাল

সাভারে চাঁদা না পেয়ে গুলি ছুড়ে খেয়া ঘাটের নৌকা লুট, অস্ত্র হাতে ভিডিও ভাইরাল

আনোয়ারায় এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৫ হাজার ৩শ পরীক্ষার্থী

আনোয়ারায় এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৫ হাজার ৩শ পরীক্ষার্থী

কিশোরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতায় এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারেনি ১০ শিক্ষার্থী

কিশোরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতায় এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারেনি ১০ শিক্ষার্থী

ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে ভারতজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ, বন্ধ ইন্টারনেট

ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে ভারতজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ, বন্ধ ইন্টারনেট

সউদীতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প

সউদীতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করল চীন

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করল চীন

‘খুব ভালো চুক্তি’র ভবিষ্যদ্বাণী, চীনা প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

‘খুব ভালো চুক্তি’র ভবিষ্যদ্বাণী, চীনা প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মারা গেলেন গায়ক রুবিও, নিহত বেড়ে ১৮৪

নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মারা গেলেন গায়ক রুবিও, নিহত বেড়ে ১৮৪

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাস অভিমুখে মার্চ ফর প্যালেস্টাইনে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাস অভিমুখে মার্চ ফর প্যালেস্টাইনে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

সড়কে ছিল না যানজট, পরীক্ষার্থীদের মুখে ছিল স্বস্তির হাসি

সড়কে ছিল না যানজট, পরীক্ষার্থীদের মুখে ছিল স্বস্তির হাসি