বিচার না পেয়ে যোগী আদিত্যনাথের অফিসের সামনে নারীর শরীরে আগুন, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও

অনলাইন ডেস্ক

০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত,যার প্রচারের থেকে অপপ্রচারই বেশি। প্রোপাগাণ্ডায় নিজেদেরকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছে দেশটি। বাংলাদেশ থেকে মোদির এজেন্ট হাসিনা পালানোর পর থেকে যেন ঠিক মতো একবেলা ঘুমাতেও পারছে না ভারতের কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দল বিজেপির সভাসদরা। যে দেশে অহরহ ঘটছে সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী নির্যাতন, মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো এবং চরম মুসলিম নির্যাতন।
যেখানে বিচার না পেয়ে মুখ্য মন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয় নারী-শিশু,এমনকি যে দেশে তথাকথিত নিম্নবর্গের হিন্দুদের পর্যন্ত করা হয় চরম নির্যাতন। যেখানে কারনে অকারণে চলে মুসলিমদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এমনকি মসজিদের মতো ধর্মীয় পবিত্র স্থানগুলো বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার মতো জঘন্য কার্যক্রম সেখানে তারা বিশ্ব দরবারে নাকে কান্নায় ভেঙে পরে নিজেদের ইলেকশন ক্যাম্পেইনের জন্য। যদিও এটা বিজেপির পুরনো স্ট্রাটেজি,তবে দেশটির সাধারণ জনগণ ধীরে ধীরে এই কট্টরপন্থীদের ধর্ম ব্যবসা বুঝতে সক্ষম হচ্ছে,তারা ক্রমান্বয়ে হয়ে উঠছে সচেতন।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিজেপির নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার। এমনকি ভারতের উত্তর প্রদেশে বারংবার বিচার চেয়েও বিচার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কট্টর বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথের পালিত পুলিশ এবং লাঠিয়াল বাহিনীর অন্যায়ের প্রতিবাদের জীবন দিতে হয়েছিল এক মা এবং তার কন্যাকে। ১৭ জুলাই,২০২০ সালের ঘটনা। ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অফিসের সামনেই গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন মা ও মেয়ে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ওই দুই মহিলা আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার পাশে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের সামনে সেই ঘটনা ঘটেছিল।

তখন জানা যায়, ১৭ জুলাই বিকেলে মা ও মেয়ে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সামনে একটি জার থেকে নিজেদের গায়ে কেরোসিন তেল ঢালে। পুলিশকর্মীরা তাদের কাছে ছুটে যাওয়ার আগেই তারা দেশলাই কাঠি দিয়ে আগুন জ্বেলে দেয় নিজেদের শরীরে। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা। তাদের অভিযোগ ছিল, প্রতিবেশীদের সঙ্গে একটি নর্দমা তৈরি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। ওই দুই মহিলার বাড়িতে কোন পুরুষ নেই। সে কারণে স্থানীয় বিজেপি নেতারা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে এবং তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে তৎকালীন সময়ে আমেঠি থানায় অভিযোগ জানানো হলেও এ ব্যাপারে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সে কারণেই তাঁরা বাধ্য হয়ে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবিষয়ে রাজ্যটির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, যোগীর রাজ্যে এমনই। এখানে গরিবের জীবনের কোনও মূল্য নেই।

নানা সময়ে মুসলিম সংখ্যালঘুদেরকে নানাভাবে হুমকি ধমকি, মুসলিম নারীদেরকে অত্যাচার করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই যোগীর গুন্ডা বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রায়শই মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতেও দেখা গেছে যোগীকে। বিচার না পাওয়া যেন স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে যোগীর দরবারে। এমনকি পুলিশ প্রশাসনও নিশ্চুপ নির্বিকার। যেন যোগী ছাড়া কারো কথা আমলেই নেন না তারা। তাইতো বারবার এই দরজা থেকে ওই দরজায় মাথা ঠুকে শেষ পর্যন্ত আবারও রাগে ক্ষোভে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন এক নারী।

সম্প্রতি স্যোশাল হ্যান্ডেল ইন্সটাগ্রামে ছড়িয়ে পরেছে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশে যোগীর অফিসের সামনে আবারও আগুনে দাউদাউ করে জ্বলছে এক নারী। পাশে অবস্থান করা কতিপয় পুলিশ সদস্য কাপড় দিয়ে আগুন নিভৃত করার চেষ্টা করছে। বেশ কয়েক মিনিট চেষ্টার পর আগুন নিভে গেলেও ততক্ষণে আগুনে পুড়ে বিভৎস অবস্থা হয়েছে ঐ নারীর।
সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা তার শরীরে কালো কাপড় মুড়িয়ে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এদিকে তিনি বেঁচে আছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অ্যাডভোকেট দীপক বাবু নামে একটি আইডি থেকে পোষ্ট করা ওই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, এক নারী বিচার না পেয়ে লক্ষৌয়ে যোগী আদিত্যনাথের অফিসের সামনে নিজের শরীরে আগুন দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ওই নারী একাধিকবার পুলিশের সাহায্য চাইলেও কোন কথাই শোনোননি জেলা পুলিশ ক্যাপ্টেন। এসময় ওই আইনজীবী দাবি করেন যে,পুলিশ কেবল বিজেপি নেতা-কর্মীদের জন্য কাজ করে,রাজ্যের সাধারণ মানুষের বেলায় থাকে নির্বিকার।

বিভাগ : আন্তর্জাতিক