বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে কেউই লাভবান হবে না: ইইউ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪১ এএম | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন। তার এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন এবং একে “বাণিজ্য যুদ্ধ” শুরুর শঙ্কা হিসেবে দেখছেন।

 

গত বুধবার (২ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, ইউরোপসহ প্রায় ১০০টি দেশের পণ্যের ওপর ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে “আবার সম্পদশালী” করার কথা বলেন। তবে অর্থনীতিবিদরা ও আন্তর্জাতিক নেতারা বলছেন, এই ধরনের শুল্ক ব্যবস্থা বৈশ্বিক বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং এর ফলে ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস জানান, “বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ বিজয়ী হয় না।” পোল্যান্ডে ইইউ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকের আগে তিনি বলেন, “এই শুল্ক ভোক্তাদের জন্য পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেবে এবং আমাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।”

 

তিনি আরও জানান, ইউরোপীয় দেশগুলো ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা দিচ্ছে এবং এই সহযোগিতা আরও জোরদার করা দরকার। তার মতে, ইউক্রেনে সাহায্য যত দ্রুত পৌঁছানো যায়, যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন ততটাই শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিশালী দেশ আলোচনার টেবিলেও বেশি সুবিধা পায়।

 

ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধানের বক্তব্যে প্রতীয়মান হয় যে, বাণিজ্যিক ও প্রতিরক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই ইউরোপ এখন একটি চ্যালেঞ্জের মুখে। তিনি বলেন, ইউরোপকে কেবল আমেরিকান সামগ্রী নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়।

 

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করছেন, এই ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে বড় ধাক্কা আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা এই শুল্ক নীতির ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অবনতি হতে পারে এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

 

বিশ্বজুড়ে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার সময়েও এই ধরনের শুল্ক আরোপ আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমেই এই সংকট নিরসনের পথ বের করা উচিত, নইলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

 

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সউদীতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করল চীন
‘খুব ভালো চুক্তি’র ভবিষ্যদ্বাণী, চীনা প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প
নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মারা গেলেন গায়ক রুবিও, নিহত বেড়ে ১৮৪
ডোমিনিকান রিপাবলিকে নাইটক্লাবের ছাদ ধস : নিহত বেড়ে ১২৪
আরও
X

আরও পড়ুন

সউদীতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প

সউদীতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করল চীন

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করল চীন

‘খুব ভালো চুক্তি’র ভবিষ্যদ্বাণী, চীনা প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

‘খুব ভালো চুক্তি’র ভবিষ্যদ্বাণী, চীনা প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মারা গেলেন গায়ক রুবিও, নিহত বেড়ে ১৮৪

নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মারা গেলেন গায়ক রুবিও, নিহত বেড়ে ১৮৪

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাস অভিমুখে মার্চ ফর প্যালেস্টাইনে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাস অভিমুখে মার্চ ফর প্যালেস্টাইনে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

সড়কে ছিল না যানজট, পরীক্ষার্থীদের মুখে ছিল স্বস্তির হাসি

সড়কে ছিল না যানজট, পরীক্ষার্থীদের মুখে ছিল স্বস্তির হাসি

হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির কেউ আমার কথা ভাবেনি–জিৎ

হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির কেউ আমার কথা ভাবেনি–জিৎ

প্লট দুর্নীতি : হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্লট দুর্নীতি : হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি,  ২৮তম ঢাকা

বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, ২৮তম ঢাকা

ডোমিনিকান রিপাবলিকে নাইটক্লাবের ছাদ ধস : নিহত বেড়ে ১২৪

ডোমিনিকান রিপাবলিকে নাইটক্লাবের ছাদ ধস : নিহত বেড়ে ১২৪

গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত অন্তত ৩৮

গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত অন্তত ৩৮

দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

টঙ্গীতে র‌্যাবের অভিযান মহানগর তাঁতীলীগের  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ৫জন গ্রেফতার

টঙ্গীতে র‌্যাবের অভিযান মহানগর তাঁতীলীগের  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ৫জন গ্রেফতার

হিলিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা

হিলিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা

সুন্দরবনে ডাকাতদের কবল থেকে ছয় নারীসহ ৩৩ জেলে উদ্ধার

সুন্দরবনে ডাকাতদের কবল থেকে ছয় নারীসহ ৩৩ জেলে উদ্ধার

ইয়েমেনের বন্দরশহরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা : নিহত বেড়ে ১৬

ইয়েমেনের বন্দরশহরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা : নিহত বেড়ে ১৬

গাজায় অভিযানে আপত্তি, পাইলটসহ বিমানবাহিনীর ৯৭০ কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি ইসরাইলের

গাজায় অভিযানে আপত্তি, পাইলটসহ বিমানবাহিনীর ৯৭০ কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি ইসরাইলের

শহীদদের রক্তের সাথে কোন আপোষ বরদাস্ত করা হবে না: ইশরাক

শহীদদের রক্তের সাথে কোন আপোষ বরদাস্ত করা হবে না: ইশরাক

মেসির জোড়া গোলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে সেমিতে মায়ামি

মেসির জোড়া গোলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে সেমিতে মায়ামি

সৌদি আরবে নতুন ১৪টি তেল ও গ্যাসের খনির সন্ধান

সৌদি আরবে নতুন ১৪টি তেল ও গ্যাসের খনির সন্ধান