ইমরান খান-বুশরা বিবির বিয়ের অজানা অধ্যায় প্রকাশ

ইনকিলাব ডেস্ক

১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১০ এএম | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১০ এএম

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার তৃতীয় স্ত্রী বুশরা বিবির দাম্পত্য জীবন নিয়ে নানা সময়ে নানা জল্পনা-কল্পনা দেখা গেছে। এবার সেই গল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন বুশরার ছোট বোন মরিয়ম রিয়াজ বাত্তু। সম্প্রতি জিও নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি শুধু ইমরান-বুশরার সম্পর্কের সূচনার পেছনের গল্পই বলেননি, বরং জাদুবিদ্যা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংসার জীবনের নানা দিক নিয়েও সরাসরি মন্তব্য করেছেন। তার ভাষায়, "বুশরার কাছে কোনো জাদুর কাঠি নেই, বরং তার ধর্মীয় জ্ঞান ও চরিত্রই ইমরানকে আকৃষ্ট করেছিল।"

এই সাক্ষাৎকারে মরিয়ম জানান, ইমরান খান ও বুশরা বিবির পরিচয়ের শুরু হয় ২০১৫ বা ২০১৬ সালে, যখন তিনি নিজেই তাদের একে অপরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সে সময় ইমরান খান বেশ চিন্তিত ছিলেন, একদিন তাকে টিভিতে দেখে খুব খারাপ অবস্থায় মনে হয়েছিল। তাই বুশরাকে অনুরোধ করেন যেন ইমরানকে আধ্যাত্মিকভাবে সাহায্য করেন। শুরুতে বুশরা মিডিয়ায় আসতে কিংবা ইমরানের সঙ্গে কথা বলতেও রাজি ছিলেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মরিয়মের পীড়াপীড়িতে তিনি রাজি হন। মরিয়ম বলেন, "এরপর আল্লাহ এই সম্পর্ক কবুল করেন।"

মরিয়মের মতে, ইমরান ও বুশরা এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা দম্পতি, কারণ প্রচণ্ড প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা একে অপরের পাশে রয়েছেন। এমনকি ইমরান খান নিজে ইমেইল করে মরিয়মকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন, লিখেছিলেন—“আমার জীবন বদলে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।” উল্লেখ্য, বুশরার সঙ্গে ইমরান খানের বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। তার আগে ২০১৪ সালে প্রথম স্ত্রী জেমিমার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়, এরপর তিনি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রেহাম খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তবে এই বিয়ে ও বুশরাকে ঘিরে বহু বিতর্ক ও গুজবও তৈরি হয়েছে। কেউ বলেন, বুশরা কালা জাদু জানেন, জিনের বাহিনী পোষেন, এমনকি তার প্রভাবে ইমরান নানা কুসংস্কারাচ্ছন্ন আচরণ করেন। যেমন—দাফনে যোগ না দেওয়া, মৃতদেহের পাশে না থাকা, এমনকি ইসলামিক স্টেটের হাতে নিহত হাজারা খনি শ্রমিকদের পরিবারকে সাক্ষাৎ না করা। পাকিস্তানে এমন ধারণাও আছে যে, বুশরা বিবি সুফি ঐতিহ্যের অনুসারী এবং আধ্যাত্মিক স্বপ্নে দেখেন, কেবল তাদের বিয়েই ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী করতে পারে। যদিও ২০১৮ সালে বুশরা একমাত্র টিভি সাক্ষাৎকারে এসব অস্বীকার করেছিলেন।

এই পুরো ঘটনা একদিকে যেমন পাকিস্তানের সমাজ ও রাজনীতিতে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার ভূমিকা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি একটি নেতার ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও তার রাজনৈতিক পরিণতির মধ্যকার সম্পর্ককেও সামনে এনেছে। মরিয়মের কথায় যেভাবে ইমরান-বুশরার সম্পর্ক ও বিয়ে গড়ে উঠেছে, তা মানুষের মধ্যকার আস্থা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও পারস্পরিক সমর্থনের গুরুত্বকেও তুলে ধরে। তবে এসবের পেছনে থাকা জাদুবিদ্যা বা গুজবের গল্প সমাজে বিভক্ত মতামতের জন্ম দিচ্ছে। ইমরান খানকে ঘিরে এমন বিতর্ক হয়তো সহজে থামবে না, কিন্তু তার জীবনের এই অধ্যায়টি ইতিহাসে এক অনন্য নাটকীয় দৃষ্টান্ত হিসেবেই থেকে যাবে। তথ্যসূত্র : জিও নিউজ

বিভাগ : আন্তর্জাতিক