স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তে সব জিম্মি মুক্তির প্রস্তাব দিল হামাস
১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৭ এএম

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ঘোষণা করেছে, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়, তাহলে তারা আটক থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। হামাসের সিনিয়র নেতা ও আলোচক দলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এই প্রস্তাব প্রকাশ করেন। তার বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায়, হামাস আর কোনো অস্থায়ী বা ধাপভিত্তিক চুক্তিতে আগ্রহী নয়, তারা একটি স্থায়ী ও পূর্ণাঙ্গ সমাধান চায়।
খলিল আল-হাইয়া স্পষ্টভাবে বলেন, হামাস কোনো ‘স্বল্পমেয়াদী সমাধান’ চায় না, যা ইসরায়েলের বর্তমান সরকারকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত জোগাতে পারে। তিনি বলেন, গাজা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান, বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজার পুনর্গঠন—এই তিন শর্ত পূরণ হলে, হামাস তাদের হাতে থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। এ প্রস্তাবকে ‘বিস্তৃত প্যাকেজ চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হামাস এখনই এ ধরনের আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
হামাস নেতার বক্তব্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দায়িত্ব ও উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আল-হাইয়া দাবি করেন, নেতানিয়াহু ও তার সরকার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং কোনো ধরনের মানবিক সমাধানে তারা আগ্রহী নয়। তিনি আরও বলেন, যতদিন ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূমি দখলে রাখবে, ততদিন হামাসও প্রতিরোধের অস্ত্র রাখবে। এরই মধ্যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের নতুন দফার হামলায় ইতোমধ্যে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, এবং খাদ্য ও জরুরি ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না দখলদার বাহিনী।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় শুক্রবার সকালে খান ইউনিসে একটি পরিবারের ১৩ সদস্য নিহত হন। এর আগের দিন, বৃহস্পতিবার, আরও অন্তত ৩৫ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। একই সময়ে, ইসরায়েলের ভেতরেও যুদ্ধবিরতির দাবি জোরালো হচ্ছে। ‘রিস্টার্ট ইসরাইল’ নামের একটি জনসচেতনতামূলক প্ল্যাটফর্মে ইতোমধ্যে ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ ৪৩টি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক, সেনাপ্রধান, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, লেখক ও শিল্পীরাও। তারা যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন।
এই অবস্থান ও প্রস্তাবনাগুলো গাজা সংকটের একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমাধানের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চক্র থেকে বেরিয়ে একটি টেকসই যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি এখন সময়ের দাবি। কূটনৈতিকভাবে সাহসী পদক্ষেপ, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাই পারে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান এনে দিতে—যা শুধু ফিলিস্তিন নয়, ইসরায়েল ও গোটা বিশ্বের জন্যই শান্তির বার্তা হয়ে উঠতে পারে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ভারত ও চীনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধানোর চেষ্টা করছে পশ্চিমা বিশ্ব : রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভিডিও করার অভিযোগ, রাজবাড়িতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

সরকারি অফিস-ব্যাংক আজ খোলা

ওড়িশায় বজ্রপাতে একদিনেই ৯ জনের মৃত্যু

বিবর্ণ ইউনাইটেডকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থে চেলসি

পানিকে মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত

আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ

এক হাজার বন্দি বিনিময়ে সম্মত রাশিয়া-ইউক্রেন, শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি

জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করা কর্মকর্তাদের শরয়ি দায়িত্ব : আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী

আফগানিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে ৫টি চুক্তি স্বাক্ষর, নতুন যুগের সূচনা

যুক্তরাষ্ট্রে ঝড়ের তাণ্ডবে নিহত অন্তত ৪

ফের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনে নিহত ১১৫ ফিলিস্তিনি

সাভারে ছাত্র জনতা হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সচিত্র দলিল

এনসিপির ‘জাতীয় যুবশক্তি’র ১৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

ওড়ার পর খুলে পড়ল বিমানের চাকা, ঢাকায় জরুরি অবতরণ

ফারাক্কা বাঁধ এদেশে কারবালা তৈরি করেছে -উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

মু’মিন হওয়ার জন্য শরিয়তের শিক্ষাকে আঁকড়ে ধরতে হবে : জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলো সরকার

বিপ্লবের পরে বাংলাদেশ : সংস্কারের পথে আশা, আন্দোলন ও আলোচনা