গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৫২, আগ্রাসন বাড়ানোর নির্দেশ নেতানিয়াহুর

ইনকিলাব ডেস্ক

২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪২ এএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৩ এএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১,৮০০ জন। এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধ আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই নতুন দফার হামলার পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মতানৈক্য। জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয় নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিলে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সম্প্রতি হামাস এক বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে এবং আক্রমণ আরও তীব্র করে তোলে।

আল জাজিরা এবং আনাদোলু বার্তা সংস্থা জানায়, শনিবার দিনভর ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে গাজা শহরে ব্যাপক ধ্বংস সাধিত হয় এবং নিহত আরও ৫২ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া সামরিক আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫১ হাজার ১৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২৪ জন। শুধু গত ৪৮ ঘণ্টাতেই ২১৯ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা এখনো বহু মানুষকে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনতে পারেননি, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

হামাস জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা একটি প্রহরীর লাশ উদ্ধার করেছে, যিনি ইসরায়েলি-আমেরিকান বন্দি এডান আলেকজান্ডারের রক্ষী ছিলেন। তবে বন্দির বর্তমান অবস্থান বা অবস্থা সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলেনি। আন্তর্জাতিক মহলে এর মধ্যেই চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই আক্রমণে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এই বর্বর আগ্রাসনের ফলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার মামলা চলছে। বর্তমান অবস্থা আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রচেষ্টার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত না করলে গাজা আরেকটি অপ্রতিরোধ্য মানবিক বিপর্যয়ের দিকে এগোবে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, আল-জাজিরা

বিভাগ : আন্তর্জাতিক