ইকুয়েডরে মোরগ লড়াইয়ের আসরে বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত ১২

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২২ পিএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম

দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডর এখন রীতিমতো গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত। মাদক চোরাচালানের রুট দখলে রাখতেই একের পর এক হামলা আর হত্যাকাণ্ড দেশটিকে অস্থির করে তুলছে। এবার সেই সহিংসতার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ল বিনোদনের আঙিনায়। একটি মোরগ লড়াই চলার সময়ই বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। এ ঘটনায় গোটা দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সহিংসতা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছে।

 

গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইকুয়েডরের পশ্চিমাঞ্চলের মানাবি প্রদেশের লা ভ্যালেন্সিয়া নামক গ্রামীণ এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সময় রাতে একটি জনাকীর্ণ মোরগ লড়াইয়ের আয়োজনে অংশ নিতে অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন। সেই সময়ে হঠাৎ করে কিছু বন্দুকধারী রিংয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। তাদের টার্গেট ছিল, ধারণা করা হচ্ছে, মাদক গ্যাংয়ের প্রতিপক্ষ সদস্যরা। হামলায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ১২ জন। এ হামলার পরদিন পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে, উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভুয়া ইউনিফর্ম।

 

হামলার সময় ধারণকৃত একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, বন্দুকধারীরা সেনা পোশাকে মোরগ লড়াইয়ের রিংয়ে প্রবেশ করে গুলি চালায় এবং দর্শকরা প্রাণভয়ে ছুটোছুটি করেন। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এ হামলার পেছনে সক্রিয় রয়েছে দেশের অন্যতম বড় মাদক গ্যাং। প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপরাধ তদন্ত শুরু করেছে। প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া জানিয়েছেন, ইকুয়েডর বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম মাদক ট্রানজিট হাব হয়ে উঠেছে—প্রায় ৭০ শতাংশ কোকেন এখানকার বন্দর হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পাচার হয়। প্রতিবেশী কলম্বিয়া ও পেরু, যারা কোকেন উৎপাদনে শীর্ষে, সেখান থেকেই এসব মাদক আসে।

 

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, ইকুয়েডরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গভীর সংকট রয়েছে এবং গ্যাং ও মাদকচক্রের দৌরাত্ম্য এখন বিনোদনের মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। শুধু চলতি বছরের জানুয়ারিতেই দেশটিতে ৭৮১টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে, যার বেশিরভাগই ছিল মাদক ব্যবসা ও গ্যাং বিরোধের ফসল। সাধারণ মানুষ এখন চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং পুরো নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে এখন একটাই দাবি—এই সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্রকে আরও দৃঢ় ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বেলগোরোড, কুরস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সেনা
সুনাম হারাচ্ছে এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো
চীনের মধ্যস্থতায় ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান
কাতারের কাছ থেকে বিলাসবহুল জেট গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে সান দিয়েগোর একটি আবাসিক এলাকায় বাড়িঘরের ওপর বিমান বিধ্বস্ত!
আরও
X

আরও পড়ুন

জাতীয় স্বার্থে দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য সবার প্রতি জামায়াত আমিরের আহবান

জাতীয় স্বার্থে দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য সবার প্রতি জামায়াত আমিরের আহবান

বেলগোরোড, কুরস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সেনা

বেলগোরোড, কুরস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সেনা

সুনাম হারাচ্ছে এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো

সুনাম হারাচ্ছে এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো

চীনের মধ্যস্থতায় ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান

চীনের মধ্যস্থতায় ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান

বিশাল বহর নিয়ে ৩১ মে ঢাকায় আসছেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী

বিশাল বহর নিয়ে ৩১ মে ঢাকায় আসছেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী

কাতারের কাছ থেকে বিলাসবহুল জেট গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প

কাতারের কাছ থেকে বিলাসবহুল জেট গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প

মাওবাদী নেতাসহ ৩০ জনকে হত্যা করেছে ভারত : বিরোধী দলগুলোর নিন্দা

মাওবাদী নেতাসহ ৩০ জনকে হত্যা করেছে ভারত : বিরোধী দলগুলোর নিন্দা

গণ-অভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা দিল সেনাবাহিনী

গণ-অভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা দিল সেনাবাহিনী

অধ্যাপক ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ : নাহিদ ইসলাম

অধ্যাপক ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ : নাহিদ ইসলাম

ঈদের আগেই বাজারে মিলবে যেসব নতুন নোট

ঈদের আগেই বাজারে মিলবে যেসব নতুন নোট

প্রধান উপদেষ্টার কাছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের স্মারকলিপি

প্রধান উপদেষ্টার কাছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের স্মারকলিপি

জানতে দেয়া হয়নি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সিদ্ধান্ত

জানতে দেয়া হয়নি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সিদ্ধান্ত

পুঁজিবাজারে লেনদেন সূচক বেড়েছে

পুঁজিবাজারে লেনদেন সূচক বেড়েছে

কালোবাজারি রোধে কঠোর রেল

কালোবাজারি রোধে কঠোর রেল

বিদেশে খেলনার বাজার ৪০ হাজার কোটি টাকা

বিদেশে খেলনার বাজার ৪০ হাজার কোটি টাকা

অবৈধ রেলিক সিটিতে রাজউকের অভিযান, কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

অবৈধ রেলিক সিটিতে রাজউকের অভিযান, কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ ৫ দফা দাবি গণ অধিকার পরিষদের

সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ ৫ দফা দাবি গণ অধিকার পরিষদের

দেশের সংকটময় যেকোনো পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব দেন জিয়া পরিবার -ব্যারিস্টার অমি

দেশের সংকটময় যেকোনো পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব দেন জিয়া পরিবার -ব্যারিস্টার অমি

বন্দরে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

বন্দরে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

চালককে হাতুড়িপেটা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই

চালককে হাতুড়িপেটা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই