চীনের হুঁশিয়ারি: “আমাদের স্বার্থে আঘাত এলে প্রতিক্রিয়া আসবেই”

ইনকিলাব ডেস্ক

২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৩ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৮ পিএম

নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য অঙ্গনে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর প্রতি এক কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। বেইজিংয়ের মতে, যদি কোনো দেশ এমন কোনও চুক্তিতে যায় যা চীনের স্বার্থে আঘাত হানে, তাহলে তার ফল ভালো হবে না। চীনের পক্ষ থেকে দেওয়া এই স্পষ্ট বার্তাটি এসেছে এমন এক সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্র নানা কৌশলে বিশ্ববাজারে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এবং চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব নতুন রূপ নিচ্ছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “চীন প্রত্যাশা করে সব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধ সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করবে। কিন্তু কেউ যদি চীনের স্বার্থের ক্ষতি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে, তাহলে চীন তার কঠোর বিরোধিতা করবে।” এই হুঁশিয়ারির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী শুল্কনীতি এবং চীনের প্রতি একচেটিয়া চাপ প্রয়োগের কৌশল। চীনের মতে, এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী এবং বিশ্ব বাণিজ্যের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রায় ৫০টি দেশ বাড়তি শুল্ক ও বাণিজ্য ছাড়পত্র নিয়ে আলোচনা করছে। অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চীনকে বাণিজ্যিকভাবে দূরে সরিয়ে রাখার কৌশল নিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, জাপান এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন ও চাল আমদানির কথা ভাবছে, আর ইন্দোনেশিয়া মার্কিন খাদ্যপণ্যের উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে অন্যান্য উৎস কমানোর পরিকল্পনা করছে। অথচ ট্রাম্প প্রশাসন ২ এপ্রিল বিশ্বের অধিকাংশ দেশের ওপর শুল্কের ঘোষণা স্থগিত করলেও, চীনের ওপর সেই বাড়তি কর বহাল রেখেছে। চীনকে লক্ষ্য করেই এই নীতি তৈরি করা হয়েছে বলে চীনা নেতৃত্বের বিশ্বাস।

এমন প্রেক্ষাপটে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশের সফরে গিয়ে আঞ্চলিক ঐক্য ও অংশীদারিত্বকে জোরদার করার আহ্বান জানান। ভিয়েতনামের একটি সংবাদপত্রে লেখা এক প্রবন্ধে তিনি বলেন, “বাণিজ্য যুদ্ধ ও শুল্ক যুদ্ধের কোনও বিজয়ী নেই।” যদিও তিনি সেখানে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি, তবু তাঁর বার্তাটি ছিল স্পষ্ট—আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরিবর্তে একচেটিয়া শুল্কনীতি গ্রহণ করলে সকল পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব এখন চীনের হুঁশিয়ারি কতটা কার্যকর হয় এবং অন্যান্য দেশ কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে আছে।

বিভাগ : আন্তর্জাতিক