ভূমিকম্পে ভবন ধসের দায়, গ্রেপ্তার চীনা কর্মকর্তা
২১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৭ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে একটি সুউচ্চ ভবন ধসে পড়ে, যার ফলে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পেছনে নির্মাণ ত্রুটি এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগে এখন গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন চীনা নাগরিক। দেশটির সরকার এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, ভবনের নির্মাণে একাধিক অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে—যা শুধু প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং আইনি ও নৈতিক লঙ্ঘনের দিকেও ইঙ্গিত করছে।
গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারের কেন্দ্রস্থলে একটি ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পের কম্পন পৌঁছে যায় থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও। সেদিনই ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা বিশিষ্ট সুউচ্চ ভবন মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে। ভয়াবহ সেই ধ্বংসযজ্ঞে এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আরও ৪৭ জন এখনো নিখোঁজ। চারদিকে ধুলোর ঘন মেঘ ও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা মানুষের আতঙ্কিত চিৎকার সে সময় পুরো শহর কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এনডিটিভি-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভবন ধসের ঘটনাটি তদন্ত করে থাই কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তার করেছে একটি চীনা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তা ঝ্যাংকে, যিনি চীন রেলওয়ে নম্বর ১০ নামের একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ৪৯ শতাংশ শেয়ারধারী।
থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী তাবি সোদসঙ জানান, ব্যাংককের আদালত এই কোম্পানির চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে—যাদের মধ্যে তিনজন থাই এবং একজন চীনা নাগরিক। অভিযোগ হচ্ছে, এই কোম্পানি থাইল্যান্ডের বিদেশি বিনিয়োগ আইন লঙ্ঘন করেছে, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে কোনো কোম্পানিতে বিদেশিরা ৪৯ শতাংশের বেশি মালিকানা রাখতে পারবে না। যদিও বাকি ৫১ শতাংশ শেয়ার তিনজন থাই নাগরিকের নামে ছিল, তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, এই থাইরা আসলে প্রক্সি হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত লোহা ও কংক্রিটের মান নিম্ন ছিল, প্রকৌশলীদের চুক্তিপত্রে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে, এমনকি দরপত্র জমা দিতেও নকল স্বাক্ষরের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
এই ধসের ঘটনার পর পরই ৩১ মার্চ থাই পুলিশ চারজন চীনা নাগরিককে আটক করে, যারা অনুমতি ছাড়াই ধসে পড়া ভবনটিতে প্রবেশ করে নথিপত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এই ঘটনা একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তোলে, অন্যদিকে তা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ এবং নির্মাণ শিল্পে স্বচ্ছতার বিষয়েও নতুন করে আলোচনার দরজা খুলে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সেটি হতে হবে আইনগত ও নৈতিক কাঠামোর মধ্যে। এই ঘটনায় থাইল্যান্ডের সরকার যেমন সাহসিকতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে, তেমনি এ থেকে ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষা পাওয়া গেল—নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি কখনোই উপেক্ষা করা যায় না। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা কুফর ও শিরক জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান

ধামরাইয়ে ছাত্র হত্যা চেষ্টা মামলায় ৫ আসামী গ্রেফতার

নিষেধাজ্ঞার ২ মাসে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ৯৪ জেলের দণ্ড

ইন্টারন্যাশনাল ইয়্যুথ প্রজেক্ট সাবমিশনে সেরা দশে শাবি শিক্ষার্থী মোফাজ্জল

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন-এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্কিীতে তারেক রহমান

কুষ্টিয়ায় নাশকতার মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

ঈশ্বরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে দু'পক্ষের সংঘর্ষ: গ্রেপ্তার-১০, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের

আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে - দুলু

নাসিরনগরে মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

আড়াইহাজারে জায়গা নিয়ে বিরোধের জের হামলায় আহত ৬

পাবিপ্রবিতে গুচ্ছের বি ইউনিটে উপস্থিতি ৯২.৩৫ শতাংশ

দ্রুতই দেশে নির্বাচন হবে এর বিকল্প নাই- এ এম এম বাহাউদ্দীন

১৫ বছরে সাংবাদিকদের ভূমিকা মূল্যায়নে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হবে: প্রেস সচিব

কলাপাড়ায় মাহেন্দ্র -মোটর সাইকেলে মুখোমুখি সংঘর্ষে শিক্ষকের মৃত্যু

টাঙ্গাইলে মাওলানা রহিস উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন

কর্ণফুলীতে এক শিক্ষার্থীর হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ

জিএসটি গুচ্ছভূক্ত ১৯টি বিশ^বিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত

গাজায় 'নজিরবিহীন' মানবিক বিপর্যয় থামাতে আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা করুন

মোরেলগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের যৌথ সভা