গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে নিহত ৮৪, মানবিক সংকট চরমে

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৪ এএম | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪১ এএম

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর (আইডিএফ) হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৪ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬৮ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে এই তথ্য। তবে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে ঢুকে হঠাৎ আক্রমণ চালায়, যাতে ১,২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে এবং তা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রয়েছে। ২০২৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৪০০ জনে এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জন মানুষ। এই সংখ্যার মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু, যা এই সংঘর্ষের ভয়াবহ মানবিক দিকটি স্পষ্ট করে তোলে।

 

যদিও ১৯ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল একবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল, কিন্তু মাত্র দুই মাসের মাথায় তা ভঙ্গ করে ১৮ মার্চ থেকে আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে ইতিমধ্যে ৩৮ দিনে নিহত হয়েছেন ২,০৬০ জন এবং আহত হয়েছেন ৫,৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, এখনও কমপক্ষে ৩৫ জন জিম্মি জীবিত রয়েছেন এবং তাদের মুক্ত করাই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য। এই যুক্তিতে নেতানিয়াহুর সরকার হামলার গতি আরও জোরদার করছে, যদিও এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ গাজাবাসী।

 

এই অব্যাহত সহিংসতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্র ইসরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে) পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’র অভিযোগে মামলা নিয়েছে। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাস পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত এবং সব জিম্মি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান বন্ধ হবে না।

 

এই অবস্থায় গাজা উপত্যকা ক্রমেই একটি মানবিক বিপর্যয়ের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটানো হাজার হাজার পরিবার কেবল বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত। এখন সময় হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরও সক্রিয়ভাবে এই সংকট নিরসনে এগিয়ে আসুক। যুদ্ধ নয়, দরকার মানবতার—এই বার্তাই হোক আমাদের সামষ্টিক অবস্থান। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি 

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

‘মরিয়ম মির্জাখানি ইরানি নারীদের বৈজ্ঞানিক রোল মডেল’
গুরুত্বপূর্ণ বিদেশিদের জন্য ব্লু ভিসা চালু করল আমিরাত
গাজায় পিট হেগসেথের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও গণহত্যার অভিযোগ তোলায় তিন মার্কিন সেনা গ্রেফতার
আফ্রিকার স্বনির্ভর ঝুঁকি হ্রাস কৌশল বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের নেতৃত্বে মরক্কো
নিষেধাজ্ঞা উঠতেই ট্রাম্প-আল শারার ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ, সম্পর্কের নতুন অধ্যায়
আরও
X
  

আরও পড়ুন

উলিপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি গঠন

উলিপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি গঠন

সাভার ও আশুলিয়ায় লাইসেন্স বিহীন এলপি গ্যসের দোকান, বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা

সাভার ও আশুলিয়ায় লাইসেন্স বিহীন এলপি গ্যসের দোকান, বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা

ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এ দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের ব্যুফেতে বিকাশ পেমেন্টে ‘বাই ওয়ান গেট থ্রি’ অফার

ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এ দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের ব্যুফেতে বিকাশ পেমেন্টে ‘বাই ওয়ান গেট থ্রি’ অফার

প্রাথমিক শিক্ষায় ২০ বছরের অর্জন, জেএসপি৩ সমাপ্তিতে জাইকা ও ডিপিই’র সেমিনার

প্রাথমিক শিক্ষায় ২০ বছরের অর্জন, জেএসপি৩ সমাপ্তিতে জাইকা ও ডিপিই’র সেমিনার

সিংগাইরে সালাউদ্দিনের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

সিংগাইরে সালাউদ্দিনের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

গুগল সার্চে শীর্ষে পাক এয়ার ভাইস মার্শাল, আরও যা ছিল আগ্রহের শীর্ষে

গুগল সার্চে শীর্ষে পাক এয়ার ভাইস মার্শাল, আরও যা ছিল আগ্রহের শীর্ষে

জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন করা হবে -এ্যাডভোকেট এম.এ. হান্নান খান

জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন করা হবে -এ্যাডভোকেট এম.এ. হান্নান খান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যার দায় ভিসি এড়াতে পারেন না বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যার দায় ভিসি এড়াতে পারেন না বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি

১০০ টাকার জন্য শিশু অটোচালক হত্যা, ২ আসামির স্বীকারোক্তি

১০০ টাকার জন্য শিশু অটোচালক হত্যা, ২ আসামির স্বীকারোক্তি

বিরামপুরে আলুর বাজারে ধ্বংস

বিরামপুরে আলুর বাজারে ধ্বংস

রাস্তা নির্মাণ শেষ হলেও অধিগ্রহণের টাকা পায়নি জমির মালিকরা,  অধিগ্রহণের পাওনা টাকার দাবিতে মানববন্ধন

রাস্তা নির্মাণ শেষ হলেও অধিগ্রহণের টাকা পায়নি জমির মালিকরা, অধিগ্রহণের পাওনা টাকার দাবিতে মানববন্ধন

জকিগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন : ১৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো

জকিগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন : ১৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো

সদরপুরে আট মাস ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন দেড় হাজার পরিবারে, ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ

সদরপুরে আট মাস ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন দেড় হাজার পরিবারে, ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ

খেলার মাঠ বন্ধ কওে প্রাচির নির্মান চেষ্টার প্রতিবাদে শিশু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

খেলার মাঠ বন্ধ কওে প্রাচির নির্মান চেষ্টার প্রতিবাদে শিশু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

মাদ্রাসার সুপার এ.বি.এম আমিনুল হক আর নেই

মাদ্রাসার সুপার এ.বি.এম আমিনুল হক আর নেই

ঢাবি ভিসির পদত্যাগ ও সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বেরোবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ঢাবি ভিসির পদত্যাগ ও সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বেরোবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জে অটোরিকশা চালক হত্যার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

নারায়ণগঞ্জে অটোরিকশা চালক হত্যার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

এয়ারপোর্টে যাত্রীসেবার মান আরো বাড়ানো হবে- রাগিব সামাদ

এয়ারপোর্টে যাত্রীসেবার মান আরো বাড়ানো হবে- রাগিব সামাদ

নকলায় ভিক্ষুকের বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাঁই

নকলায় ভিক্ষুকের বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাঁই

নকলায় ভিক্ষুকের বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাঁই

নকলায় ভিক্ষুকের বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাঁই