ভরসা একমাত্র আল্লাহর ওপর-১
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
‘তাওহীদ’ শব্দের সাথে আমরা সকলেই পরিচিত এবং সম্ভবত এর মৌলিক অর্থও আমাদের অজানা নয়। তাওহীদের মৌলিক অর্থ জানার ও বোঝার পর আমাদের বিশ্বাস ও কর্মে এবং সমগ্র ব্যবহারিক জীবনে আকীদায়ে তাওহীদের কী প্রভাব পরিলক্ষিত হওয়া দরকার সে সম্পর্কেও সচেতন হওয়া কর্তব্য। ইসলামের এ মৌলিক আকীদার সুফল ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা অর্জন করে সে আলোকে নিজের বিশ্বাস ও কর্মের পরীক্ষা নেয়া এবং বাস্তব ও প্রায়োগিক জীবনে এর প্রভাবগুলো আনার চেষ্টা করা কর্তব্য।
এতে আকীদায়ে তাওহীদের যে বীজ আমাদের হৃদয়ভূমিতে রয়েছে তা অঙ্কুরিত হবে এবং পত্র-পল্লবে বিকশিত হয়ে আমাদের সমগ্র জীবনে ছায়া বিস্তার করবে। এ দিক থেকে তাওহীদ-প্রসঙ্গ অনেক ব্যাপক এবং এর ক্ষেত্রও অনেক বিস্তৃত। ঈমান ও তাওহীদের বিশ্বাস যখন মজবুত হয় তখন অন্তরের অবস্থায় পরিবর্তন আসে এবং বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্য আল্লাহপাক দান করেন। তেমনি বাহ্যিক কাজ-কর্মেও পরিবর্তন আসে এবং বিশেষ বিশেষ গুণ আল্লাহপাক দান করে থাকেন।
তাওহীদের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ও সুফল ‘তাওয়াক্কুল আলাল্লাহ’। ‘তাওয়াক্কুল’ আরবি শব্দ। এর অর্থ, ভরসা করা। অর্থাৎ, দুনিয়া-আখেরাতের সকল কাজে, সকল মকসুদ হাসিল করার জন্য এবং সকল বিপদ-মুসীবত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একমাত্র আল্লাহপাকের উপর ভরসা রাখা। এটা ইসলামের শিক্ষা। ঈমানের শিক্ষা।
এ শিক্ষার অনেক সুফল এমন আছে যা দুনিয়ার জীবনেই পাওয়া যায়। আল্লাহপাক যে আমাদের কুরআন-সুন্নাহর বিধান দান করেছেন এ শুধু আখেরাতের সফলতার জন্য নয়, দুনিয়া-আখেরাত উভয় জাহানের সফলতার জন্য। তাই কুরআন-সুন্নাহর শিক্ষা ও বিধান সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে দেখা যাবে, দুনিয়াতে যত অশান্তি, যত অনাচার তার মূলে রয়েছে কুরআন-সুন্নাহর শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাওয়া।
আল্লাহপাকের বন্দেগী ও আনুগত্য ত্যাগ করা। আমরা যদি আল্লাহপাকের আনুগত্যের দিকে ফিরে আসি এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষাকে অবলম্বন করি তাহলে আখেরাতের জীবন তো সফল হবেই আমাদের দুনিয়ার জীবনও সুন্দর ও শান্তিময় হবে। এটা ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। তবে ইসলামের শিক্ষা অনুসরণের ক্ষেত্রে দুনিয়ার উপকারিতা লাভ করা মুখ্য উদ্দেশ্য হবে না। আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হবে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি পাওয়া এবং আখেরাতের কামিয়াবী অর্জন করা।
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন জায়গায় তাওয়াক্কুল-প্রসঙ্গ আছে। হাদিস শরীফেও আছে। তাওয়াক্কুল কী, এর উপকারিতা কী, দুনিয়ার উপায়-উপকরণ অবলম্বনের সাথে তা সাংঘর্ষিক কি না এ ধরনের অনেক বিষয়ের সমাধান কুরআন-সুন্নাহয় আছে। সূরায়ে যুমারে আল্লাহ তায়ালার ইরশাদ : আপনি যদি মক্কার মুশরিকদের জিজ্ঞাসা করেন আসমান ও জমিন কে সৃষ্টি করেছেন? অবশ্যই তারা বলবে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। (সূরা যুমার : ৩৭)।
তারা তো বিভিন্ন দেবদেবীর উপাসনা করে, কারো কাছে জ্ঞান চায় কারো কাছে স্বাস্থ্য চায়, কারো কাছে রিযিক চায়, কারো কাছে সন্তান-সন্তুতি চায়, কারো কাছে আয়-উপার্জন চায়, কারো কাছে বালামুসিবত থেকে আশ্রয় চায় এভাবে অনেক খোদা, অনেক মাবুদ, একেক প্রয়োজনের জন্য একেক মাবুদ বানিয়ে রেখেছে। কিন্তু যখন জিজ্ঞাসা করবেন, ‘আসমান-যমীন কে সৃষ্টি করেছেন’ উত্তরে একথাই বলবে যে, আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন।
অর্থাৎ তাদেরও বিশ্বাস ছিল, আসমান যমীনের সৃষ্টিতে এই সকল দেব- দেবীর কোনো হিস্যা নেই এবং আসমান-যমীনে মানুষের জীবনধারণের যত উপকরণ এগুলোও আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সৃষ্টি করেননি। আল্লাহই সকল কিছুর ¯্রষ্টা। তাহলে এত দেব-দেবীর পূজা তারা কেন করত? তারা মনে করত কিছু কিছু কল্যাণ-অকল্যাণের ক্ষমতা এই সকল দেব- দেবীর আছে, যদিও সে ক্ষমতা স্বয়ংসম্পূর্ণ না, আল্লাহ প্রদত্ত।
এজন্য তারা তালবিয়ায় ‘লা শারীকা লাক’ (‘তোমার কোনো শরীক নেই’) বাক্যের সাথে নিজেদের পক্ষ থেকে এ বাক্যটি জুড়ে নিয়েছিল- ‘ইল্লা শারীকান হুয়া লাক্ তামলিকুহূ ওয়ামা মালাক্’ অর্থাৎ, তবে এমন শরীক আছে যার মালিক অবশ্য তুমি আর ওদের যা কিছু ক্ষমতা-কর্তৃত্ব সেগুলোরও মালিক তুমি (নাউযুবিল্লাহ)। এ ছিল তাদের শিরকের ধরন। তারা নাস্তিক ছিল না, মুশরিক ছিল।
আল্লাহপাক তাদের এ বিভ্রান্তি সমূলে উৎপাটন করে তাঁর রাসূলকে বলেছেন, ‘হে রাসূল, আপনি তাদের প্রশ্ন করুন, তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের কাছে প্রার্থনা কর, বল তো, আল্লাহ যদি আমার ব্যাপারে কোনো অকল্যাণের ইচ্ছা করেন তোমাদের এই দেব-দেবী কি আমাকে ওই অকল্যাণ থেকে রক্ষা করতে পারবে? তেমনি আল্লাহ যদি আমার ব্যাপারে কোনো কল্যাণের ফায়সালা করেন সমস্ত দেব-দেবী মিলেও কি তা প্রতিরোধ করতে পারবে?’
অর্থাৎ আমি তো এই সমস্ত মূর্তি ও দেব-দেবীর সবচেয়ে বড় শত্রু। এদের বিরুদ্ধেই তো আমার দাওয়াত। এরা কি পারবে আমার কোনো ক্ষতি করতে কিংবা পারবে কোনো উপকার করতে? পারবে না। আমার কল্যাণ-অকল্যাণ সবই হবে একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায়। এদের ইচ্ছায় নয়। তাহলে তোমাদেরও কোনো কল্যাণ-অকল্যাণের ক্ষমতা এদের নেই। যখন নেই তখন হে রাসূল আপনি বলুন, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট আর আল্লাহর উপরেই প্রত্যেক ভরসাকারীর ভরসা করা উচিত।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রেসিডেন্টর সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
নিজ্জর হত্যায় মোদীর সংশ্লিষ্টতার দাবি কানাডার সংবাদমাধ্যমের ,‘হাস্যকর’ দাবি ভারতের
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে গুলি, নিহত ৪২
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক সংঘাতে পরিণত হচ্ছে : পুতিন
মুরগি-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, আলু এখনো চড়া
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ
পার্থে শুরুতেই চাপে ভারত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা
সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমীরের কুশল বিনিময়
সিঙ্গেল সিটের দাবিতে গভীর রাতেও হলের বাইরে ছাত্রীরা
ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করলো
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অ্যার্টনি জেনারেল পাম বন্ডি
‘আ.লীগকে রাজনীতিতে সুযোগ দেওয়া মানে শহীদদের সঙ্গে গাদ্দারি করা’
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ