ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

প্রশ্ন: চার তরিকা (৩) বনাম ইসলামের চার পরিভাষা বলতে কি বোঝায়?

Daily Inqilab ইনকিলাব

১১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৩ এএম

দ্বিতীয় দল : এ দলে রয়েছে শুকনো মগজের একশ্রেণির আলেম। তারা সরাসরি তরিকতকে অস্বীকার করে। সুফিবাদ আর ইলমে তাসাউফের মধ্যে পার্থক্য করতে না পেয়ে সব একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। ইলমে তাসাউফ আর ইলমে তাজকিয়ায়ে নফস বা বাংলায় আত্মশুদ্ধি একই বিষয়। কিন্তু সুফিবাদ বৈরাগ্যবাদেরই একটি শাখা। যারা ফকির, সন্ন্যাসী, বাউল নানা নামে সমাজে পরিচিত। যারা শরিয়তের ধার ধারে না। যাদের আকিদা-বিশ^াসে নানা গোমরাহি রয়েছে। তাদেরকে আমরাও গোমরাহ বলি। কিন্তু আত্মশুদ্ধির পথ-পদ্ধতি সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে যত বর্ণনা এসেছে সেগুলো একজন জানলেওয়ালা ব্যক্তির কাছ থেকে শিখে তার পরামর্শ মোতাবেক জীবন-জিন্দেগি পরিচালনা করলে তা গোমরাহি হবে কেন! আসলে তারা শুকনো জ্ঞানের অধিকারী। তারা বলে, ‘সুলুক বা তরিকত বলতে কিছু নেই। এগুলো অলস ও দুর্বলদের কাজ। গা বাঁচানোর জন্য মসজিদে বসে ‘ইল্লাল্লাহ’র জিকির টানা। মধ্যেপ্রাচ্যে এ ধরণের শুকনো মগজধারীর সংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের বাংলাদেশেও এ ধরণের একটি শ্রেণি আছে। তারা অনেক সময় সমাজে বিদ্বেষ তৈরির জন্য এসব বলে থাকে। সাবধান! তরিকত যেহেতু আত্মশুদ্ধিরই অপর নাম তাই বিষয়টিকে অবহেলো করা নিতান্তই গোমরাহি। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে অনেকগুলো আয়াত বর্ণিত হয়েছে। আমরা কয়েকটি উল্লেখ করছি। ইরশাদ হয়েছেÑ

‘সে ব্যক্তিই সফল হয়েছে যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে। এবং সে ব্যক্তিই বিফল হয়েছে যে তার আত্মাকে কুলুষিত করেছে।’ (সুরা শামস : ৯-১০) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছেÑ ‘আল্লাহতায়ালা মুমিনদের ওপর তাদের থেকে একজন রাসুল পাঠিয়ে অনুগ্রহ করেছেন। যে রাসুল তাদের কাছে আল্লাহর আয়াত তেলাওয়াত করেন, তাদের আত্মাকে সংশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেন। যারা ছিল ইতিপূর্বে চরম গোমরাহিতে নিমজ্জিত।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৬৪)

আরও ইরশাদ হয়েছেÑ ‘সেদিন কারো ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি কোনো কাজে আসবে না; তবে যে ব্যক্তি বিশুদ্ধ ও সুস্থ অন্তর নিয়ে হাজির হবে সে উপকৃত হবে।’ (সুরা শুয়ারা : ৮৮-৮৯)

নবী করিম সা. ইরশাদ করেছেনÑ ‘আল্লাহতায়ালা তোমাদের আকার-আকৃতি ও সম্পদের দিকে তাকান না। তিনি তাকান তোমাদের অন্তরের দিকে।’ (সহিহ মুসলিম : ২৫৬৪) আরেক হাদিসে এসেছে, নবীজি সা. ইরশাদ করেছেনÑ ‘জেনে রেখো, মানবদেহে এমন একটি গোশতের টুকরা আছে যদি তা সুস্থ হয় তাহলে পুরো দেহ সুস্থ থাকে; আর যদি তা রুগ্ন হয় তাহলে পুরো দেহ রুগ্ন হয়ে যায়। জেনে রেখো, সেই টুকরাটি হলো কলব।’ (সহিহ বোখারি : ৫২)

উপর্যুক্ত আলোচনা দ্বারা পরিস্কার হলো যে, তরিকত বা আত্মশুদ্ধির বিষয়টি ইসলামি শরিয়তের প্রধান দুই দলিল কোরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ও সমর্থিত। শরিয়তের তৃতীয় দলিল ‘ইজমায়ে উম্মত’ দ্বারাও তরিকত প্রমাণিত। কারণ ‘আহলে সুফফা’র সদস্যবৃন্দের মাধ্যমে তাসাউফের যে ধারার জন্ম হয়েছিল কালপরিক্রমায় তারই পরিমার্জিত রূপ আজ তরিকত, আত্মশুদ্ধি বা পীর-মুরিদি নামে পরিচিত। শরিয়তের চতুর্থ দলিল কিয়াস বা যুক্তি। আর যুক্তি বলেÑ পীর-মুরিদির দরকার আছে। কারণ শুধুমাত্র দেহকে মানুষ বলে না। বরং দেহ ও কলব দু’টির সমন্বয়ে মানুষ। দেহের নানা রকমের রোগব্যাধি রয়েছে। তেমনিভাবে কলবেরও বিভিন্ন রকমের রোগব্যাধি রয়েছে। দেহের রোগ হলে মানুষ ডাক্তারের কাছে যায়। সুতরাং কলবের রোগ হলেও কলবের ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার। আর কলবের ডাক্তার হলেন খাঁটি পীর-আওলিয়ারা। কারণ তারা আত্মার সাধনা করেই এ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছেন।

প্রশ্ন থাকতে পারে, কোনো ব্যক্তি খাঁটি পীর বা বুজুর্গ হয় কী করে? তিনি যে খাঁটি বা সঠিক সেটা তিনি জানেন কীভাবে বা দাবি করেন কীভাবে? যৌক্তিক প্রশ্ন। আমরা বলি, সেটা কোনো ব্যক্তি দাবি করলেই হয় না। বাজারে সবাই তো নিজের সওদা খাঁটি দাবি করে। কিন্তু আসলে কি সবারটিই খাঁটি হয়! সেটা যারা চিনে তারা চিনে নিতে পারে। তবে কিছু আলামত বা নিদর্শন তো অবশ্যই থাকে। কোরআন-হাদিসে খাঁটি মুমিনের, খাঁটি মুসলিমের যত গুণ বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর প্রিয় হওয়ার যত সিফত বর্ণিত হয়েছে তা যদি কারো মধ্যে থাকে তাহলে তাকেই আমরা খাঁটি পীর বা বুজুর্গ বলে ধরে নিই। তাঁর কাছেই আমরা সুহবত নিতে যাই। দ্বীনধর্মের উন্নতির পরামর্শ চাই। ইবাদতে এখলাস তৈরির পরামর্শ নিই। কীভাবে ঈমান-আমল ঠিক রাখা যায়, সুন্দর করা যায় সে পরামর্শ চাই। এসবের নামই তো পীর-মুরিদি। সুতরাং কলবের রোগ সারাতে বুজুর্গের সান্নিধ্যগ্রহণ অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের শরানাপন্ন হওয়ার মতো। এতসব দলিল-প্রমাণ থাকার পরও যদি কোনো মানুষ তরিকত, আত্মশুদ্ধি, ইলমে তাসাউফ বা পীর-মুরিদিকে অস্বীকার করে তাহলে আমরা বলব, তারা আসলেই কপালপোড়া। আল্লাহতায়ালা আমাদের হেদায়েত নসিব করুন! যে ভাইয়েরা বুঝে না তাদেরকেও দ্বীনের সহিহ বুঝ দান করুন!

তৃতীয় দল : এ দলে রয়েছেন গভীর জ্ঞানের অধিকারী বুজুর্গ শ্রেণির ওলামায়ে কেরাম। তাঁরা শরিয়ত ও তরিকতের মধ্যে সমন্বয় করে আল্লাহকে পাওয়ার সাধনায় লিপ্ত থাকেন। মূলত তাঁরাই ‘আহলে হক ও আহলে ইলম’। তাঁদেরকে অনুসরণ করাই আমাদের কর্তব্য।

হাকিকতের পরিচয় : হাকিকত মানে প্রত্যেক বস্তুর মূল অবস্থা। অন্তর্নিহিত রহস্য। পরিভাষায় হাকিকত বলতে বোঝায়, প্রত্যেক বস্তুর ওইসব মৌলিক উপাদানকে যা দ্বারা বস্তুটি অস্তিত্বে আসে। যেমন ধরুন একটি দেয়াল। এটিকে আমরা উপর থেকে যা দেখছি ভেতরে কিন্তু তেমন না। এটির ভেতরে অনেক রকমের মালপত্র রয়েছে। যেমনÑ রট, সুরকি, সিমেন্ট, বালি ইত্যাদি। এগুলো হলো বিল্ডিংয়ের হাকিকত। যারা বিল্ডিং বানানো কোনোদিন দেখেনি তাদের কাছে কিন্তু এটি একটি আশ্চর্র্য বিষয়। কিন্তু যারা তার হাকিকত বা উপাদান সম্পর্কে জানে তাদের কাছে কিন্তু বিষয়টি একদম স্বাভাবিক। বিশ^ চরাচরে যা কিছু আছে সবকিছুরই এক বা একাধিক হাকিকত রয়েছে। এমনকি শরিয়তের প্রতিটি হুকুমÑ হালাল, হারাম কিংবা প্রতিটি ইবাদতÑ নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, অজু, গোসল অথবা যে কোনো অদৃশ্য বস্তুর বর্ণনাÑ নেকি, বদি ইত্যাদি বিষয়াবলিরও হাকিকত রয়েছে। ইলমে তাসাউফে হাকিকত বলতে বোঝায়Ñ এমন একটি নুরকে যা কোনো ব্যক্তির পূর্ণভাবে শরিয়ত-তরিকত অর্জিত হলে অন্তরে পয়দা হয়। সেটি প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তির ঈমান ও আমলের নুর। এর মাধ্যমে ব্যক্তির অন্তরের ফলক সবসময় আলোকিত থাকে। সেই আলোর মাধ্যমে বিশ^সৃষ্টির নিগূঢ় রহস্যাবলি দেখতে পারে। যেমন ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে, তিনি অজুর পানিতে গোনাহের ময়লা দেখতে পেতেন!

মারেফতের পরিচয় : মারেফত অর্থ চেনা, জানা, পরিচয় লাভ করা। শরিয়ত, তরিকত ও হাকিকত অর্জিত হলে কোনো ব্যক্তি সেই স্তরে পৌঁছায়। তখন সে অন্তরচোখে বিশ^ সৃষ্টির নিগূঢ় রহস্যাবলি সঠিকভাবে চিনতে পারে, জানতে পারে। এবং এগুলো দ্বারা আল্লাহকেও সে সঠিকভাবে চিনতে পারে। আল্লাহর বড়ত্ব, মহিমা অনুধাবন করতে পারে। তখন আল্লাহ ও ওই বান্দার মধ্যে একটি গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। ওই বান্দাকে তখন ‘আরেফ বিল্লাহ’ বলা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখন মানুষ ‘আরেফ বিশ শরিয়াহ’ অর্থাৎ শরিয়ত সম্পর্কে সঠিক পরিচিতি না পেয়েই লাফালাফি করে এবং বলে বেড়ায়Ñ সে ‘আরেফ বিল্লাহ’ হয়ে গেছে। আসলে এরাই ভ-। এরাই প্রতারক। এদের কারণেই তরিকত কুলুষিত। তাই আমাদেরকে এদের থেকে সাবধান হতে হবে।

উত্তর দিচ্ছেন: আবদুল আউয়্যাল, কবি ও সাহিত্যিক।


বিভাগ : ইসলামী প্রশ্নোত্তর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

প্রশ্ন : কোনো লোকের নামাজে জানাজায় কেউ যদি লোকটি সম্পর্কে তিনবার প্রশ্ন করে যে, ‘লোকটি কেমন ছিল?’, আর যদি তিনবারই জনগণ উত্তর দেয় যে, ‘লোকটি ভালো ছিল।’ তাহলে নাকি লোকটি জান্নাতি। এর ব্যাখ্যা চাই। কারণ এখানে তো হাক্কুল্লাহ্ ও হাক্কুল ইবাদের ব্যাপার রয়েছে। কেউ যদি তা সঠিকভাবে পালন না করে, তাহলে জনগণের কথায় কেমনে জান্নাতি হয়ে যাবে?
প্রশ্ন : আশারায়ে মুবাশশরাহ অর্থাৎ বেহেশতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ব্যক্তির কে কখন কি কারণে এ সুসংবাদ পেলেন? জানালে খুশি হবো।
প্রতি ওয়াক্তের নামাজে কি মসজিদে ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ পড়া প্রসঙ্গে।
অসম্পূর্ণভাবে বিয়ে করা একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করা প্রসঙ্গে।
মৃত কাউকে বারবার অসুস্থ অবস্থায় স্বপ্নে দেখা প্রসঙ্গে।
আরও

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা