মহানবীর (সা.) অনুসরণেই দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা
১০ মার্চ ২০২৩, ০৮:২১ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম
আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার বুকে লক্ষাধিক পয়গাম্বর প্রেরণ করেছেন। প্রত্যেক নবীর জন্য সময় ও কর্মক্ষেত্রের পরিধি ছিল নির্দিষ্ট। আবার একই সময়ে কয়েকজন নবীও আবির্ভূত হয়েছেন। কিন্তু বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কোন কাল কিংবা দেশের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে প্রেরিত হননি, বরং কিয়ামত পর্যন্ত তিনি সকল যুগের মানুষের নবী। তাঁর পর কোন নবী আসবে না। এজন্য আল্লাহ তাআলা তাঁকে সর্বগুণে গুণাম্বিত করে দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করেছেন। মুসলমানগণ কিভাবে জীবন পরিচালনা করবে? উন্নতি সাধন করবে? এর জন্য আল্লাহ তাআলা একটি নমুনা প্রেরণ করেছেন, আদর্শ পাঠিয়েছেন। যার অনুসরণ অনুকরণ করে মুসলমানগণ নিজেদের জীবন গড়বে। আল্লাহ তাআলা এ আদর্শ ও নমুনার জন্য শুধু দর্শন-ই দেননি, বরং বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ ও রুপায়ন করে দেখানোর জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে প্রেরণ করেছেন। পবিত্র কুরআনুল কারীমে এরশাদ হয়েছে : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন দর্শনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াত : ২১)।
আল্লাহপাক রাসূলুল্লাহ (সা.) কে এত উত্তম বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী দিয়েছেন, যা গণনা করে বয়ান করে শেষ করা যাবে না। সবদিক থেকে তাঁকে পরিপূর্ণ করে প্রেরণ করেছেন। গোটা বিশ্বজগতে আল্লাহ তাআলা যাকে সবচেয়ে উন্নত ও মহান গুণাবলী ও অনন্য বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তিনি হলেন শ্রেষ্ঠনবী ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। যার প্রশংসায় স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় তোমাদেরই মাঝ থেকে এক রাসুল তোমাদের কাছে এসেছে। তোমাদের কষ্ট ভোগ করা তার কাছে অসহনীয় এবং তিনি তোমাদের কল্যাণের পরম আকাঙ্ক্ষী। তিনি মুমিনদের প্রতি অতি মমতাশীল ও বার বার কৃপাকারী’ (সুরা আত তাওবা, আয়াত : ১২৭)।
এটি সেই গুণ এবং আদর্শ যার ভিত্তিতে তার মাঝে বিনয়, নম্রতা এবং প্রতিশোধের পরিবর্তে মার্জনা এবং উপেক্ষা করার বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়েছে। এটিই সেই দারিদ্রতার মাঝেও গৌরবের পরিচয়, তিনি এক ব্যক্তিকে যে মহানবীর (সা.) প্রভাব ও শক্তির ভয়ে ভীত হয়ে কাঁপছিল, সে সময় মহানবী (সা.) তাকে বলেন, এত ভয় পেও না, আমি তো এমন এক মায়ের সন্তান যিনি শুকনো মাংশের টুকরো খেতেন। এটিই সেই সহানুভূতি আর দয়া যার ফলে তিনি (সা.) একজন শ্রমিকের ঘর্মাক্ত শরীর জড়িয়ে ধরেন আর দারিদ্র ও কষ্টের জীবন বেছে নেন আর দোয়া করেন, আল্লাহ যেন তাকে দরিদ্র এবং অসহায়দের সাথে রাখেন আর তাদের মধ্য হতেই উত্থিত করেন। আর এটি সেই মহান বৈশিষ্ট্য যার ভিত্তিতে তিনি (সা.) বলেছেন, আমাকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করো না আমার উপাধি ‘আবদ’। আর এভাবে এই পার্থিব জগতের আকর্ষণ ও আকাঙ্ক্ষার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। হে আমার আল্লাহ! শান্তি, আশিস ও কল্যাণ বর্ষণ কর মুহাম্মদ (সা.) এবং তার বংশধরদের প্রতি, নিশ্চয় তুমি মহা প্রশংসিত ও মর্যাদাবান।
শিশুকাল থেকেই তিনি (সা.) স্বল্পেতুষ্ট আর বিনয়ের উন্নত মানে অধিষ্ঠিত ছিলেন। হযরত উম্মে আইমন (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আমি কখনোই মহানবীকে (সা.) ক্ষুৎপিপাসার জন্য অভিযোগ করতে শুনিনি।’ ইতিহাস সাক্ষী, মহানবী (সা.) সবচেয়ে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তিনি কোন বস্তুর ভালো গুণাগুণ বর্ণনার পাশাপাশি যদি তার মধ্যে কোন খুঁত থেকে থাকে তাহলে তাও বলে দিতেন। খোদার ইচ্ছানুসারে তিনি (সা.) আরবের পবিত্র এবং ধনী নারী হযরত খাদিজা (রা.) এর সাথে সর্বপ্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। হযরত খাদিজাকে (রা.) বিবাহ করার সুবাদে তিনি (সা.) অঢেল ধন-সম্পদের মালিকানা লাভ করেন, কিন্তু তিনি বলেন, তিনি তা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিতে চান, তার পুণ্যবতী সহধর্মিণী একান্ত বিনয়ের সাথে তাতে সম্মতি প্রকাশ করেন আর বলেন, আপনি যেভাবে খুশী তা ব্যবহার করুন। এরপর তিনি (সা.) তা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেন।
অনুরূপভাবে এই বিবাহের ফলে সদাপ্রস্তুত সারি সারি কৃতদাসের দল তিনি লাভ করেন কিন্তু এই মানবদরদী রাসুল স্বীয় স্ত্রীকে বলেন, আমারই মত মানুষকে কৃতদাস বানিয়ে রাখা আমার পছন্দ নয়। তখন মহানবীর (সা.) অনুগতা স্ত্রী এসব কৃতদাসকে স্বাধীন করে দেয়ার অধিকার তাকে প্রদান করেন। ফলে তিনি (সা.) সকল কৃতদাসকে মুক্ত করে দেন। মানুষের হয় ধন-সম্পদের অহংকার থাকে অথবা বংশ মর্যাদার কিন্তু কতই না মহান আমাদের মহানবী (সা.), তিনি এত ধন-সম্পদ, অর্থ-কড়ি এবং চাকর-বাকর পাওয়া সত্তেও কখনো অহংকার বা গর্ব করেন নি বরং বিনয় ও নম্রতার একান্ত উন্নত এবং উত্তম আদর্শ স্বীয় অনুসারীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন, সুবহানাল্লাহ।
মহানবী (সা.) শান্তির ধর্ম ইসলামকে বিশ্ববাসীর মাঝে শান-শওকত, ঐশ্বর্য ও প্রতাপের সাথে তুলে ধরেছেন তা একান্ত বিনয় এবং নম্রতার বৈশিষ্ট্য নিজের মাঝে ধারণ করে, কোনোক্রমেই জোর-জবরদস্তি, উগ্রতা, অবজ্ঞা, ঘৃণা-বিদ্বেষের মাধ্যমে নয়। আমরা যদি মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণ করে চলি তাহলে প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি শহর এবং প্রতিটি দেশ হতে পারে শান্তিময়। তাই বিশ্বময় শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত করার জন্য চাই বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শ মুতাবেক জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে চলার তাওফীক দান করুন, আমীন।
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চিকিৎসার খরচ সামলাতে না পেরে হাসপাতালের মধ্যেই স্ত্রীকে হত্যা মার্কিন স্বামীর
বাল্টিক অঞ্চলের সুরক্ষা মজবুত করতে চায় জার্মানি
কুয়াকাটা ঢেউয়ে তোরে হারিয়ে যাওয়া পর্যটক উদ্ধার, পটুয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি
ঢাবি প্রফেসর বাহাউদ্দীনের চৌর্যবৃত্তি তদন্তে কমিটি গঠন
আক্রমণের ঝড় তুলেও হারল পিএসজি,১১ বছর পর ফাইনালে ডর্টমুন্ড
মাইশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ পুতিনের, ছয় বছর ভোগ করবেন একচ্ছত্র ক্ষমতা
রাত পোহালেই ফরিদপুর ৩ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন
বিএনপির সমাবেশ: সবকিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত দেবে ডিএমপি
সোনার দাম এবার ভরিতে বাড়লো ৪৫০২ টাকা
সিরি-এ বর্ষসেরা মিডফিল্ডার ফার্গুসন
আগামীকাল হরিরামপুর উপজেলা ভোটগ্রহণ : ত্রিমুখী লড়াইেয়র সম্ভাবনা
স্কটল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে হুইল ও জোন্স
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে একজন কেএনএফ সদস্য নিহত, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার
মেসিদের লিগকে যে পরামর্শ দিলেন ফিফা সভাপতি
বজ্রপাতে নগরকান্দায় ২১ মাদ্রাসা ছাত্র আহতের ১১ জন এখনও হাসপাতালে
গোদাগাড়ীতে ৩ কেজি ৪শ’ গ্রাম হেরোইনসহ ২ জন গ্রেফতার
উপজেলা নির্বাচনে ইভিএমে প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছে মতলব উত্তরবাসী
১ বছরে আদানি গ্রিনের ২৫ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধি
শপআপ-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগদান করলেন মামুন রশীদ