ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৪ মাঘ ১৪৩১

শয়তানের ওয়াসওয়াসা : ক্ষতিকর প্রভাব

Daily Inqilab আবদুর রশীদ

২৪ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৮ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪১ এএম

বছর ঘুরে আসা এই রমজান মাস প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মহিমান্বিত মাসের লাইলাতুল কদর রজনীতে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল করা হয় যা মানবজাতীর জন্য হেদায়াতস্বরূপ। পথহারা পথিকের জন্য, হতাশার জালে বন্ধি থাকা ব্যক্তির মুক্তির জন্য এই মাস হল একটি নেয়ামত। জীবন পরিবর্তনের এক বিশেষ প্রশিক্ষনের মাস। তাকওয়া অর্জনের মাস। একটি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলে সুন্দর জীবন উপহার দিতে পারে এই রমজান মাস। প্রতিটি মুহূর্তে ঘটে যাচ্ছে কত হৃদয়বিদারী ঘটনা। এই যে হাসি মুখে কথা বলতে না বলতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে কত প্রাণ! জুয়ার আসরেও দেখা যাচ্ছে নাচ আর গাইতে-গাইতে মৃত্যুর কূপে ঢলে পড়তে। কত এক্সিডেন্ট! কত আহাজারি! কতই না মোহনীয় এই দুনিয়া! অতচ, সেকেন্ডেরও বিশ্বাস নেই। তাই পরকালকে ভুলে থাকার কোনো অর্থ নেই। লালসাপূর্ণ ফেতনার এই দুনিয়ায় যদি সেকেন্ডেরও বিশ্বাস না থাকে, তাহলে এর জন্য এত মায়ার কি দরকার! পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে প্রবৃত্তির ভালবাসা- নারী, সন্তানাদি, রাশি রাশি সোনা-রূপা, চিহ্নিত ঘোড়া, গবাদি পশু ও শস্যক্ষেত। এগুলো দুনিয়ার জীবনের ভোগসামগ্রী। আর আল্লাহ, তাঁর নিকট রয়েছে উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল। (সূরা-ইমরান, আয়াত : ১৪)। সুতরাং, একটু ভাবুন না ! প্রকাশ্যে এবং অপ্রকাশ্যে কত অন্যায়, কত পাপ করেছেন ! কত মানুষের অশ্রু নিজের হাত দ্বারা ঝরালেন ! চোখের প্রতি কত যুলুম করেছেন ! জিহ্বা দ্বারা কত মিথ্যা কথা ও সাক্ষ্য দিয়েছেন ! পা দ্বার কত অন্যায় কাজে এগিয়ে গেলেন ! ওমর ফারুক (রা.) বলেছেন, ‘মৃত্যুর আগে একবার মৃত্যু বরণ করে দেখো।’ অতএব, দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে রবের দিকে ফিরে আসতে একটি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিন আর পরিবর্তনের জন্য রমজানের এই দীর্ঘ সময়কে প্রশিক্ষনের কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করুন। সুন্দর জীবন গঠনের জন্য কিছু ধাপ মেনে চললে ভালো ফলাফলের আশা রাখতে পারেন, ইনশাআল্লাহ! যেমন: প্রাথমিকভাবে নিয়ত করুন যে, অন্তত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করতে। বিশেষ করে রমজানের রোজাগুলো রাখার চেষ্টা করুন। কুরআন পড়তে পারেন কিংবা না পারেন, অন্তত যে সূরাগুলো জানেন সেগুলো বেশি বেশি পড়ার চেষ্টা করুন। যদি কোনো অবৈধ সম্পর্ক থাকে, তাহলে সিদ্ধান্ত নিন ধীরে ধীরে কথা বলা কমিয়ে নিতে এবং কৌশল অবলম্বনে তা মেনে চললে অবশ্যই মাস শেষ হতেই ভালো ফলাফলের দেখা পাবেন, ইনশা’আল্লাহ। আর সামর্থ্যের মধ্যে যতটুকু পারেন দান করার চেষ্টা করুন। এতে আল্লাহ তা’য়ালা খুশি হন ও বান্দার গুনাহ মাপ করে দেন। ভালো বন্ধুর সাথে মিশতে চেষ্টা করুন যারা আপনাকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। কিছু ইসলামী বই পড়ার চেষ্টা করুন। এতে জীবনের সংশোধনীগুলো শিখতে পারবেন। সরাসরি কিংবা ফোনে কুরআন তিলাওয়াত শুনার চেষ্টা করুন। কেননা কুরআনের সুর অন্তরে প্রশান্তি সৃষ্টি করে। গান বাঁজনা পরিহার করুন। কেননা তা আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেই। অর্থাৎ, আল্লাহর নৈকট্য লাভে যা যা ভালো কিছু রয়েছে সামর্থ্যের ভিতরে সেগুলো পালন করাই হল জীবন পরিবর্তনের নিয়ম। মনে রাখতে হবে, শয়তান সবসময় ধোঁকা দিতে চেষ্টা করবে। তাই, কখনো যদি পাপ কাজে লিপ্ত হন, তবুও গাফেল হওয়া যাবে না।

বরং, ইবাদতের মাত্রা আরো দিগুন করে দিতে হবে। দেখবেন, শয়তান পরাজিত হবে। সবসময় তাওবার দরজা খোলা রয়েছে। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু। অতএব, আল্লাহর নিকট তাওবা করুন ও সাহায্য প্রার্থনা করুন যেন দ্বীনের উপর অবিচল থাকতে পারেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন ও সাহায্য করবেন। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা-নিসা, আয়াত : ১০৬)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সংশোধন হওয়ার এবং দ্বীনের উপর অবিচল থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন!

 


বিভাগ : ইসলামী জীবন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আল মাহানী: দিগংশ এবং ভেক্টর রাশির আবিস্কারক
অলৌকিক ও ফজিলতপূর্ণ অনন্য রাত শবে মিরাজ
শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ মুজিযা
শীতকালের অজু ও গোসলে বিশেষ সতর্কতা
মানুষের জীবন আল্লাহর দেওয়া অতি মূল্যবান
আরও

আরও পড়ুন

প্রথমবারের মতো ভারত থেকে আমদানি হলো মসুর ডাল

প্রথমবারের মতো ভারত থেকে আমদানি হলো মসুর ডাল

নরসিংদীতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত মা

নরসিংদীতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত মা

কর্মবিরতি : সারা দেশে বন্ধ হলো ট্রেন চলাচল

কর্মবিরতি : সারা দেশে বন্ধ হলো ট্রেন চলাচল

ইউরো জেতানো দে লা ফুয়েন্তে ২০২৮ পর্যন্ত স্পেনের কোচ

ইউরো জেতানো দে লা ফুয়েন্তে ২০২৮ পর্যন্ত স্পেনের কোচ

সিলেটকে হারিয়ে প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে গেল রাজশাহী

সিলেটকে হারিয়ে প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে গেল রাজশাহী

টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ

রূপালী ব্যাংকের ‘রূপালী ই-ব্যাংক’ অ্যাপ উদ্বোধন

রূপালী ব্যাংকের ‘রূপালী ই-ব্যাংক’ অ্যাপ উদ্বোধন

বেলকুচিতে ব্রোকলি চাষে সাফল্য

বেলকুচিতে ব্রোকলি চাষে সাফল্য

সালথায় যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা : তিনজন কারাগারে

সালথায় যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা : তিনজন কারাগারে

তাহসিনের পাশে বিসিবি

তাহসিনের পাশে বিসিবি

তামাক কোম্পানির ফাঁদে পড়ে মাদকে আসক্ত হচ্ছে তরুণ সমাজ; প্রতিরোধে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

তামাক কোম্পানির ফাঁদে পড়ে মাদকে আসক্ত হচ্ছে তরুণ সমাজ; প্রতিরোধে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

জিরা চাষে স্বপ্ন দেখছেন গোদাগাড়ীর কৃষকরা

জিরা চাষে স্বপ্ন দেখছেন গোদাগাড়ীর কৃষকরা

ন্যায়বিচারের স্বার্থে হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে ভারত

ন্যায়বিচারের স্বার্থে হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে ভারত

দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছি, নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ: কাহের শামীম

দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছি, নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ: কাহের শামীম

হাতিয়ায় বন্দোবস্তকৃত ভূমি বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি

হাতিয়ায় বন্দোবস্তকৃত ভূমি বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি

আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন, সচিব হাসনাইন তৌফিক

আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন, সচিব হাসনাইন তৌফিক

শৈশবের ক্লাবে ফিরছেন নেইমার

শৈশবের ক্লাবে ফিরছেন নেইমার

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

পাকুন্দিয়ায় ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই চলছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি

পাকুন্দিয়ায় ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই চলছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি

পঞ্চগড়ে চার বিচারকের অপসারণ দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

পঞ্চগড়ে চার বিচারকের অপসারণ দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ