আঁধারি স্বপ্ন
০৩ মে ২০২৪, ১২:২১ এএম | আপডেট: ০৩ মে ২০২৪, ১২:২১ এএম
অজান্তেই আইজ যেন জীবনের সব স্বপ্নগুলা নিভে গেছে বড় বউ! মায়া বড্ড মায়া বড় বউ !
জীবনের পাওয়া- নাপাওয়ার হিসাবগুলো স্বপ্ন হয়ে আকাশে উড়ে গেছে....
নিভৃতে পড়ন্ত বিকেলকে সাক্ষী রাইখা।
বড়বউ, আমার অন্তর ডুবন্ত সূর্যের সাথে কথা কয় বার বার !
জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোকে খুঁজে না পাইয়া জীবনটাকে আজ বড্ড অসহায় লাগে ,
আজও প্রচন্ড তাপপ্রবাহ চলছে মনের মধ্যে! আইজ দেখি, পুলার-বউ উলঙ্গ শরীরে রাজপথে এসে দাঁড়ায়! আধুনিক কালের রোজগারের আশায়।
খোলা চোখের স্বপ্নগুলো আইজও যেন মিছিলের প্রথম সারিতে দাঁড়াইয়া আছে...
পথবাতির সবুজ আলোর প্রতীক্ষায়! যদিও শপথ নিয়েছিলাম, নতুন স্বপ্নকে জাগাব বলে কিন্তু তা আর হইলো কোথায় ?
অপুর মা, ছেঁড়া কাঁথার স্বপ্ন দেখে বড়লোক হওয়ার,।
অভিপ্রায়
নিঃশব্দ আহামদ
চুপসে যাওয়া ফুলের কাছে,শুকিয়ে যাওয়া শিশিরের কাছে-আর পাতাঝরা দিন-সাতরাঙা আকাশখানি হলে মলিন,কান্নার রোল ভেঙে আসা সে সুদিন
চেনে আমায়,চেনে আমায়-উত্তরের পঁচা ভুঁইয়া
যেতে যেতে ক্লান্ত পথিক, উদ্দেশহীন দিগ্বিদিক
পারাপারের হুড়োহুড়ি,ছেলেবেলার লুকোচুরি
এপ্রোন খসে বিচলিত সে কিশোরীর কর্ণে বাজা
শিস চেনে আমায়-ঠাড়া পড়া রোদ,সোনালি ধানের আলা
রেখেছিলাম নাম ছায়াবীথি,
ফুটেছিলো জংলায় কাশের ফুল
তিনটে ফুলের স্তবক
শুকিয়ে যেতে যেতে সুপারি বনের ছায়ায়
সমর্পিত বিকেল চেনে আমায়,প্রশ্ন রেখেছিলো ছায়াবীথি-সে কি যুবায়া
এখন শব্দের শরীরে ,গেঁথে দিই বাগিতা
না কবি,না প্রেমিক-না কোনো কবিতা
কেবল ধরে রাখি পুরনো উৎকর্ষ
ছেড়েছুঁড়ে
ফিরে আসি,প্রয়াণের অভিপ্রায়ে।
সোনারঙা ঘড়ি
আরিফ হাসান
সকলাবেলা ঝালোপাড়ার সামান দিয়া যাইতেই
পরথম যৌবনের কথা মনে পড়ে পান্নার
সেই দিনগুলা আইজো আয়নার নাহান
চকচক করে, তাজ্জব কারবার!
সেও হাত বাড়ায়ে দিছিলো জীবনের কাছে
ধনুকের ছিলার মতো টানটান ছিলো যৌবন...
মাতবরের বেডা, দেয়ানির ভাই, পুবপাড়ার দুদু সকালেই তারে নিয়া এক্কাদুক্কা খেলাইছে
মনের পাখিডারে উড়ায়ে দিছে
কেউ ঘরো জাগা দেয় নাই--
তার বিছনায় সোহাগের চাদ্দর নাই
আদর করি কেউ কিনি দেয় নাই নাল শাড়ি
সোয়ামি নাই, ঘর নাই, সংসার নাই
মনে হইলেই কইলজ্যাটা মুচুড় দিয়া উডে...
মায়ে কইতো,
যার হয় না নয়ে, তার হয় না নব্বইয়ে
জীবনের আইল-বাতরে ঘুরি
ম্যালা সুময় নষ্ট করছে পান্না
এহন আর বুকের খাঁচায় পুষে না
পিরিতের ময়না
মন এহন বৃষ্টিহীন বৈশেখি দিন
মাঝে মইধ্যে ছাড়ে ততা নিহেশ
বাঁ হাতের সোনারঙা ঘড়ির দিক চায়ে
সুময় দেহে পান্না,
যৌবনের সইন্ধ্যাকালে আসি বুঝি গেছে
সময়ের ম্যালা দাম!
বৃদ্ধাশ্রম
আবির হাসান
যেটুকু অবশিষ্ট আছি, তার ভেতর বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করেছে হৃদয়! ভাঙা নোঙরের মতো ভয়ে থরথর কইরা কাঁপতেছে দুই চোখ, যেভাবে রিমা খালা দুঃখ বিসর্জন দিয়া মৃত্যুর মুখোমুখি বইসা থাকে আর বিগত স্মৃতির হলুদ দৃশ্য কল্পনা কইরা একটা সাদা কাফনের মর্মে লুকিয়ে পড়ে!
জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ মুহুর্তকে অদৃশ্য যন্ত্রণার নোনাজলে কাগুজে নৌকার মতো ভাসিয়ে দিতে চায় পরিত্যক্ত অস্তিত্ব। যে ত্রিশ বসন্ত ধইরা ডানা ভাঙা শালিকের মতো হীনমন্যতায় ভোগে আর গভীর অন্ধকারের ভেতর করিম চাচার আত্মহত্যার কথা চিন্তা করে! যেখানে যন্ত্রণার বৃদ্ধাশ্রমে মৃতপ্রায় বার্ধক্যের আর্তচিৎকার শোনা যেতো প্রতিদিন!
একফোঁটা ঘাম
তুহীন বিশ্বাস
সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের জটিল অংক;
ঘড়ির কাঁটার গতি হার মানে নিত্যদিন,
দ্বায়িত্ব ও কর্তব্যে নিষ্পেষিত স্বপ্নগুলোয়-
রক্ত নিঃসৃত একফোঁটা ঘাম সস্তায় বিকোয়।
কাঁধে ভর করে দাঁড়িয়ে থাকে মহাজন;
প্রতিনিয়ত হত-দরিদ্র দৈন্যতায় পরাস্ত,
পারিবারিক দায়বদ্ধতায় বাধাগ্রস্ত সুখ
মুকুলেই বিনষ্ট জীবনে নামে অসুখ।
দাম দিয়ে ঘাম কিনে দাও শ্রমের মর্যাদা
হাসিখুশি ফিরিয়ে দিয়ে হও শাহজাদা।
আমরাও বনসাই এখন
জাহাঙ্গীর চৌধুরী
অরণ্যের মুক্ত বৃক্ষকে
কেটেকুটে ছেঁটে গুটিয়ে করেছে
লিলিপুট উচ্চতায় বনসাই,
বন্দী থাকে কারাগার ন্যায়।
বেষ্টনীকৃত অলিন্দের ভেতর
মিলে তার আহার অম্বু
চব্বিশ ঘণ্টা পরপর।
দেখে না দিবাকর সুধাকর
ছড়ায়না ডালপালা শিকড় মূল,
তবু বেঁচে থাকে সেজে পুতুল।
আমরা মানুষ বটে,
গোটানো বনসাইয়ের মতন,
মূলত আমরাও বনসাই এখন।
ঘড়িনির্ভর স্মৃতি
আনজুম কাইফ
ক.
সহস্র বছর ধরে বায়না ধরেছি মেঘের কাছে
মেঘ, আমি তোমার হবো।
বৃষ্টির মতোন ঝরে পড়বো ঝুপ ঝুপ করে।
মায়ে আমারে তোমার হতে দেয় না,
বাবার কড়া শাসন ব্যবস্থায় আমি চুপ
তোমার সখায় বাতাস আইলো না কোনোদিন,
আমার জানালায়, আমার দুয়ারে।
উঠোনভর্তি খালি কটকটে দুপুর।
আজিজ চাচা উদোম গায়ে ঘুমোচ্ছে গাছের ছায়াকোলে
অপরদিকে,
একটা দুরন্ত ধানশালিকের ছায়া পড়েছে দুপুরের দেহে।
সেই আন্ধার ধরে সমস্ত পথ পাড়ি দিচ্ছে পিপিলিকা।
খ.
দুয়ার, বুকের কপাট খুইলা রাখো। রোইদের প্রেমে পইড়া
আমার বইন ক্লান্ত প্রাণ। তুমি আর আইসো না।
ঘড়ির দিকে তাকায়া ধর্ষিতা রাইতের অপেক্ষায় রইলাম।
রাইত আমার বইন,
চান্দের লগে বিয়ে বস্।
তোর লেইগা আঁজলা ভরে জোছনা আনমু কসম!
প্রভাতের অপেক্ষায় থাকিস না বইন,
জানালার গ্রিল ধইরা আর করিস না প্রেম লতিফের লগে
তোর দোহাই লাগে।
বিপিন কাকার বিড়ির আগুন
মোখলেসুর রহমান
রাইতে কিছু খায়নি এখনো
খিদেরে খিল দিয়া বন্দি কইরা রাখছে পেটের ভেতর
খিদেরা তবু উঁকি মারে বাদে বাদে
বেড়ার ফাঁক দিয়া দেখা যায় দূরে দালানকোঠা।
ওগো দালানকোঠা আমগো কী!
শুইয়া শুইয়া চালের ছাউনির ছেদা দিয়া
হায়াত-মউতের তারা দেখা যায়,
গত বছর শফির সাথে চাল ছাইছে
শালা মইরা গিয়া ভালই করছে
বাইচ্চা আছি বইল্যা-
পেন্দনের লুঙ্গি ছেঁড়া.... দেইখ্যা
পোলাপাইনেরা হাসাহাসি করছে।
এ্যার থেকে মরণও ভালো। ঠিক তখনি-
আরেক টানে দপ করে জ্বলে উঠে বিড়ির আগুন।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদালের ওপর গুলিবর্ষণ
খুলনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু
বাড়তি মেদ কমাতে ‘খাওয়া কমানো’ কতটা কার্যকর
কিশোরগঞ্জে সড়ক সংস্কার দাবিতে মানববন্ধন
আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর রাতে বিক্ষোভ
নগর ভবনের দায়িত্বশীলদের অবহেলায় নগরবাসীর দূর্ভোগসহ ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়ছে
গ্যাস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা থাকবে না যেসব এলাকায়
চিন্ময় দাস ইস্যুতে উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্নে মামলার তথ্য নেই বলে জানালো যুক্তরাষ্ট্র