কাল্পনিক নামে খাদ্য বিক্রি করলেই কারাদণ্ড : মন্ত্রিপরিষদ সচিব

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১০ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০৬ পিএম

 

 খাবারের প্রকৃত নাম পরিবর্তন করে কোনো কাল্পনিক নাম ব্যবহার করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। খাদ্যশস্য ব্যবসায় বিভিন্ন অনিয়ম শনাক্ত ও তার সাজা নির্ধারণে সোমবার (১০ এপ্রিল) মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া খাদ্যে এমন বিধান রাখা হয়েছে। সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন-২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। আইনটি তুলেছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ধান চাল গম আটা ও ভুট্টাসহ দানাদার খাদ্যদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধ চিহ্নিতকরণ ও শাস্তি নিশ্চিতকরণে এই আইনটি করা হয়েছে। এখানে অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তির বিধান করা হয়েছে। ‌‘আগে এ সংক্রান্ত দুটি আইন ছিল। ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যান্ড ১৯৫৬ ও ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাক্টিভিটিস অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯। এই দুটি আইনকে মিশ্রণ করে নতুন আইন করা হয়েছে। আইনে মোট ২০টি ধারা রয়েছে।’ এর আগে ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

কী কী করলে এই আইনের আওতায় অপরাধী হবেন উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো অনুমোদিত জাতের শস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য সেই জাতের উপজাতপণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে, কোনো খাদ্যদ্রব্যের স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করে বা পরিবর্তন করে এর উপাদান নষ্ট করে উৎপাদন বা বিপণন করলে, খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করে উৎপাদন বা বিপণন করলে, খাদ্য অধিদপ্তরের ইস্যু করা লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা চালালে, অনুমোদিত সীমার অধিক পরিমাণে খাদ্য বিপণন করলে এই আইনের আওতায় অপরাধী হবেন। এতে দুই বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, কোনো ব্যক্তি সময়ে সময়ে সরকার নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অধিক খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ‘এজন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন বা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হতে পারে। আদালত অর্থদণ্ডের পরিমাণ নির্ধারণ করবে। তবে কোনো ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো লাভের উদ্দেশ্য ছাড়াই মজুত করেছেন তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব তিনমাস কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’

মাহবুব হোসেন জানান, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন মজুত বা স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন পর্যায়ে কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ বা বিতরণ করলে ৫ বছর কারাদণ্ড বা ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংগঠিত হলে ওই অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন প্রত্যেক প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা বা কর্মচারী ওই অপরাধ সংগঠন করেছে বলে গণ্য হবেন। যদি না তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে ওই অপরাধ তার অজ্ঞাতসারেই সংগঠিত হয়েছে। অথবা ওই অপরাধ রোধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। এই আইনে অর্থদণ্ডের পরিমাণটা বেশি বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে হাজার টাকা ছিল এখন সেখানে লাখ টাকা করা হয়েছে।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিন
সা'দ পন্থীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও আশুলিয়া থানায় স্মারক লিপি প্রদান
গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল
আরও

আরও পড়ুন

ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের ইত্তেফাক মোড়ে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি-র

ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের ইত্তেফাক মোড়ে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি-র

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি  বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

২০২৫ সালে নিম্নমাধ্যমিক-মাধ্যমিকে ৭৬ দিনের ছুটির তালিকা প্রকাশ

২০২৫ সালে নিম্নমাধ্যমিক-মাধ্যমিকে ৭৬ দিনের ছুটির তালিকা প্রকাশ

খুলনা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার পথে যুক্ত হচ্ছে ট্রেন জাহানাবাদ

খুলনা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার পথে যুক্ত হচ্ছে ট্রেন জাহানাবাদ

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিন

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিন