অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি ব্যাংকের ৮৭০ কোটি টাকা ঋন বিতরন
১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:০৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৮ পিএম
অর্থ বছরে প্রথম ৯ মাসে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রায় ৮৭০ কোটি টাকা কৃষি ও শষ্য ঋন সহ সরকারের কারোনাকালীন প্রনোদনার আওতায় বিভিন্ন ধরনের ঋন বিতরন করেছে। চলতি অর্থ বছরে ১ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ঋন বিতরন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সার্বিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি ব্যাংক প্রায় ১৮ কোটি টাকা নীট মুনফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। যা অর্থ বছর শেষে প্রায় ৫০ কোটি অতিক্রম করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ঋন বিতরন ছাড়াও এ ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসিরা গত ৯ মাসে ১৫৯ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১২% বেশী। বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলে রাষ্ট্রয়ত্ব এ বিশেষায়িত ব্যাংকটির মোট আমানত স্থিতির পরিমান প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০২ কোটি টাকা বেশী বলে জানা গেছে।
কৃষি নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি সচল রাখতে রাষ্ট্রয়ত্ব বিশেষায়িত এ ব্যাংকটি সরকারের করোনা প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায় মাত্র ৪% থেকে ৭% সুদে চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ১৫ হাজার উদ্যোক্তার মাঝে পৌনে ২শ কোটি টাকা ঋন বিতরন করেছে। গ্রাম বাংলার এ ব্যাংকটি অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১শ কোটি টাকা এসএমই ঋন বিতরন করেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা বেশী।
এমনকি চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে নতুন প্রায় ১৯ হাজার সহ দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি ব্যাংকের একক ঋন গ্রহিতার সংখ্যা এখন সাড়ে ৪ লাখেরও বেশী। অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাংকটির ১২৯টি শাখায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ প্রায় ৩৫ হাজার নতুন সঞ্চয়ী ও চলতি হিসেব খুলেছেন বলেও জানা গেছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলার সুদুর পল্লী এলাকাতেও কৃষি ব্যাংক-এর সবগুলো শাখাই ইতোমধ্যে অন-লাইন সুবিধার আওতায় এসেছে। ফলে এ অঞ্চলের ১২৯টি শাখাই এখন অন লইনে বিশে^র যেকোন প্রান্তের ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করছে। কৃষি ব্যাংক সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচীর আওতায় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত বিহীন ঋন প্রদান করছে। এ কর্মসূচীর আওতায় গত ৯ মাসে প্রায় ৭শ জনকে প্রায় ৬ কোটি টাকা ঋন বিতরন করা হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাংকটির প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আমানত স্থিতির মধ্যে অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে নতুন সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য ৫৮৫ কোটি। অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে ব্যাংকটি নতুন প্রবর্তিত ৬টি স্কিমের আওতায় দক্ষিণাঞ্চলে গত ৯ মাসে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার নতুন হিসেব খুলতে সক্ষম হয়েছে। ত্রৈমাসিক, মাসিক, মিলিয়নিয়ার, ডাবল, বিকেবি লাখপতি ও মাসিক মুনফা প্রকল্পে গ্রাম বাংলার মানুষের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি ব্যাংকের বরিশালের বিভাগের প্রধান নির্বাহী ও জিএম সালাহ উদ্দীন রজিব ।
ব্যাংকটি স্বল্প সুদে শষ্য ঋন বিতরনের পাশাপাশি মাত্র ৪% সুদে মসলা জাতীয় ফসল আবাদে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋন বিতরন করেছে। করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরে ফেরাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ঋনদান কর্মসূচীর আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষের মাঝে কৃষি ব্যাংক মাত্র ৬% সুদে ঋন বিতরনের পাশাপাশি বিশেষ এসএমই কর্মসূচীর আওতায়ও ৪% সুদেও আরো বিপুল সংখ্যক উদ্যোক্তার মাঝে ১শ কোটি টাকা ঋন বিতরন করেছে বলে জানা গেছে।
একইভাবে যে কোন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষ বিশেষ ঋন সুবিধা লাভ করছেন। রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত এ বানিজ্যিক ব্যাংকটি ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে নিজস্ব তহবিল ছাড়াও করোনা মহামারীতে সরকারী প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায়ও সবগুলো ঋন বিতরন করেছে।
তবে ব্যাংকটিতে অনাদায়ী ঋনের পারিমান প্রায় ২ হাজার ৮শ কোটি টাকা হলেও আদায়যোগ্য অনাদায়ী বা খেলাপী ঋনের পরিমান মাত্র ৯৫ কোটি টাকার মত। অনাদায়ী ঋনের একাটি বড় অংশই মেঘনা ও তেতুলিয়া বেষ্টিত ভোলায়। দ্বীপ জেলাটির নদী ভাঙনে হাজার হাজার কৃষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ায় তাদের অনেকেরই খোজ পাওয়াও দুস্কর। যাদের অস্তিত্ব আছে, তারাও কৃষিজমি সহ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে হারিয়ে উদ্বাস্তুতে পরিনত হয়েছেন। ফলে বাস্তুচ্যুত নিত্য অভাবী ঐসব মানুষের কাছ থেকে বকেয়া ঋন আদায় দুরুহ হলেও ইতোমধ্যে বিপুল পরিমান আদায়যোগ্য অনাদায়ী ঋন আদায় সম্ভব হয়েছে। এমনকি এ জেলাটিতেও যারা ঋন পরিশোধ করেছেন, তাদের নতুন করে ঋন প্রদানও করেছে কৃষি ব্যাংক। ফলে অনেকেই পূণর্বাশিত হয়েছেন।
তবে দেশের সর্ববৃহত বিশেষায়িত রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটির লক্ষ্যে পৌছানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা জনবল সংকট। এ অঞ্চলের ৪২টি উপজেলার ১২৯টি শাখা সহ বিভাগীয় ও আঞ্চলিক অফিসগুলোর জন্য কৃষি ব্যাংকের ১ হাজার ৬২৮ জনের মঞ্জুরিকৃত জনবলের মধ্যে ইতোপূর্বে কর্মরত ছিলেন মাত্র ৭২৩জন। সম্প্রতি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ৮১ জনকে দক্ষিণাঞ্চলে পদায়ন করার পরেও বর্তমানে কর্মরত মাত্র ৮শ’র মত। এখনো শূণ্য পদের সংখ্যা ৫০%-এরও বেশী। এমনকি ব্যাংকটির অনেক শাখাই মাত্র ৩জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে কাজ করছে। উপজেলা পর্যায়ে বেশীরভাগ শাখায়ই জনবল মাত্র ৩Ñ৫ জন। ফলে রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটির সার্বিক কার্যক্রম যথেষ্ঠ ব্যাহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ব্যাংকটির বরিশাল বিভগীয় জেনারেল ম্যানেজার সালাহ উদ্দীন রজিব-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষিÑঅর্থনীতি সচল রাখতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রতিটি কর্মী নিরলশ পরিশ্রম করছে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী সব ধরনের ঋন বিতরনের সাথে আদায়ে অন্য যে কোন ব্যাংকের তুলনায় কৃষি ব্যাংক ভাল করছে বলেও দাবী করেন তিনি। ১৭-৪-২০২৩.
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তোফাজ্জলের জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন হলো বাবা-মা ও ভাইয়ের কবরের পাশে
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
গণপিটুনিতে হত্যা: ঢালাওভাবে ছাত্রদের বিজয়কে খাটো করতে আওয়ামী মিডিয়ার আস্ফালন, সমালোচনার ঝড়
সাবেক এমপি ইয়াকুবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে
ভারতকে ৩৭৬ রানে গুটিয়ে দিল বাংলাদেশ, হাসানের ৫
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরো ১৫০ অনিয়মিত বাংলাদেশি
দোয়ারাবাজার সীমান্তে মহিষসহ মাছের চালান জব্ধ
সিলেটে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার, নারী গ্রেফতার
আশ্বিনকেও ফেরালেন তাসকিন
কক্সবাজার পাহাড়তলীতে অনৈতিক কাজে অতিষ্ঠ মানুষ, বাধা দেয়ায় বাসার মালিকের উপর হামলা
অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির খসড়া পাঠিয়েছে ইইউ
তাসকিনের জোড়া আঘাত, লিটনের রেকর্ড
ডিবির আলোচিত ডিসি মশিউর গ্রেপ্তার
১৯৯ রানের জুটি ভাঙলেন তাসকিন
গণপিটুনিতে দুই মাসে ৩৩ জনের মৃত্যু
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন জয়
মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন খুলছে আজ
বিচিত্রার সম্পাদক দেওয়ান হাবিব আর নেই
জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হত্যা : ৮ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ