যুক্তরাষ্ট্রের হিপোক্রেসি আমাদের আহত করে -কৃষিমন্ত্রী

Daily Inqilab বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

০৬ জুন ২০২৩, ০২:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩, ০২:৫৭ পিএম

বাংলাদেশের র‍্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা ও আমেরিকার নতুন ভিসানীতিসহ নানা বিষয়ে কড়া সমালোচনা করে আমেরিকার উদ্দেশ্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন "আপনাদের হিপোক্রেসি আমাদের আহত করে, এতে আমাদের রক্তক্ষরণ হয়।"

মঙ্গলবার (০৬জুন) ছয় দফা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আপনারা (আমেরিকা) মানবতার কথা বলেন, বাক-স্বাধীনতার কথা বলেন; আপনারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কী করেছেন? লিবিয়ায় একটি দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে! সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক সাহায্য আপনারা মিশরে দেন। মিশরে কি গণতন্ত্র আছে? সিরিয়াসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে আপনারা ধ্বংস করেছেন। ইরাকের মত একসময়ের জ্ঞান বিজ্ঞানের রাজধানী আজ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কোথায় আপনাদের গণতন্ত্র? প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হয়েছে ; কই মধ্যপ্রাচ্যে গণতন্ত্র তো দেখি না! আপনাদের হিপোক্রেসি আমাদের আহত করে, এতে আমাদের রক্তক্ষরণ হয়।

ডঃ মো. আব্দুর রাজ্জাক আক্ষেপ করে বলেন, কী কারণ থাকতে পারে র‍্যাবের বিরুদ্ধে স্যাংশন দেয়ার? ৮৫ শতাংশ মুসলমানদের দেশ পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আফগানিস্তানে এতদিন যুদ্ধ করে আবার বাধ্য হয়েছেন তালেবানদের হাতে দেশ ছেড়ে দিতে। আমরা আওয়ামী লীগ ওই সন্ত্রাসীদের কাছে আত্মসমর্পণ করি নাই। আফগানিস্তান থেকে আপনারা পালিয়ে গেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন! আপনি দেখেছেন কিভাবে আপনার সৈন্যরা দৌড়ে গিয়ে প্লেনে উঠেছে। কিভাবে তাড়িত হয়েছে। আমরা পালিয়ে যাই নাই। আমরা তাদেরকে মোকাবেলা করেছি। যারা সামনের কাতারে থেকে মোকাবেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আপনারা স্যাংশন দেন!

গাদ্দাফির হত্যার পেছনে আমেরিকাকে দায়ী করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, লিবিয়ায় একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রকে একটি জাতি রাষ্ট্র করেছিল মুয়াম্মর গাদ্দাফি। কী বিচার আপনারা করেছেন? দৌড়িয়ে তাকে হত্যা করেছেন! সাদ্দাম হোসেনের বিচারের নামে প্রহসন করেছেন। আপনারা ইরাকে আক্রমণ করেছেন। সেই যুদ্ধে যে চিফ অফ স্টাফ ছিল তিনি মৃত্যুর আগে বলেছিলেন, আমি জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি। কোন অস্ত্র আমরা ইরাকে পাই নাই। অথচ একটি দেশকে আমরা ধ্বংস করলাম। সে সারা পৃথিবীর মানবজাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে। এই মধ্যপ্রাচ্যকে যারা ধ্বংস করেছে তাদেরও আমি মনে করি যুদ্ধাপরাধি হিসেবে বিচার করা উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী আরও বলেন, আপনারাই বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলছেন। আপনাদেরই একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (হেনরি কিসিঞ্জার) মুক্তিযুদ্ধের সময় পরাজিত হয়েছেন পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়ে। বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য পাকিস্তানকে অস্ত্র দিয়েছেন, খাদ্য দিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে যখন পারেননি তখন সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিলেন। সপ্তম নৌবহরও পাকিস্তানকে রক্ষা করতে পারেনি, আমরাই বিজয়ী হয়েছি। পরাজয়ের গ্লানি মেনে নিতে পারে নাই। তাই প্রতিশোধের স্পৃহা থেকে বলেছিল বাংলাদেশ একটি তলাবিহীন ঝুড়ি।
তিনি বলেন, অক্সফোর্ড, হারবার্ডের একজন প্রফেসর বলেছিল বাংলাদেশ যদি উন্নয়ন করে তাহলে পৃথিবীর যেকোনো দেশে উন্নয়ন সম্ভব হবে। আল্লাহর ইচ্ছায় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কৌশলে আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে উন্নয়ন করেছে। আজকে যুক্তরাজ্যের ইকোনমিক রিসার্চ সেন্টার থেকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তারা বলেছে আগামী ৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর ২০তম ধনী দেশ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মশিউর রহমান। এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
আ.লীগের দোসর সালাম আলী এখন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী!
আরও

আরও পড়ুন

আসাদের পতন, নিজের বেঁচে থাকার গল্প বললেন এক সিরিয়ান শরণার্থী

আসাদের পতন, নিজের বেঁচে থাকার গল্প বললেন এক সিরিয়ান শরণার্থী

গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক

গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক

বঙ্গতে আসছে 'ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ'

বঙ্গতে আসছে 'ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ'

সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন

সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন

পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, ভর্ৎসনা পানামার প্রেসিডেন্টের

পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, ভর্ৎসনা পানামার প্রেসিডেন্টের

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা

পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ

পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ

পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়

নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়

জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া

জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া

স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু

গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু

নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭

নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭

রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ

রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ

ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা

ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা

উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা

ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা

উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল

উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া

বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া