ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের হিপোক্রেসি আমাদের আহত করে -কৃষিমন্ত্রী

Daily Inqilab বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

০৬ জুন ২০২৩, ০২:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩, ০২:৫৭ পিএম

বাংলাদেশের র‍্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা ও আমেরিকার নতুন ভিসানীতিসহ নানা বিষয়ে কড়া সমালোচনা করে আমেরিকার উদ্দেশ্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন "আপনাদের হিপোক্রেসি আমাদের আহত করে, এতে আমাদের রক্তক্ষরণ হয়।"

মঙ্গলবার (০৬জুন) ছয় দফা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আপনারা (আমেরিকা) মানবতার কথা বলেন, বাক-স্বাধীনতার কথা বলেন; আপনারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কী করেছেন? লিবিয়ায় একটি দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে! সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক সাহায্য আপনারা মিশরে দেন। মিশরে কি গণতন্ত্র আছে? সিরিয়াসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে আপনারা ধ্বংস করেছেন। ইরাকের মত একসময়ের জ্ঞান বিজ্ঞানের রাজধানী আজ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কোথায় আপনাদের গণতন্ত্র? প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হয়েছে ; কই মধ্যপ্রাচ্যে গণতন্ত্র তো দেখি না! আপনাদের হিপোক্রেসি আমাদের আহত করে, এতে আমাদের রক্তক্ষরণ হয়।

ডঃ মো. আব্দুর রাজ্জাক আক্ষেপ করে বলেন, কী কারণ থাকতে পারে র‍্যাবের বিরুদ্ধে স্যাংশন দেয়ার? ৮৫ শতাংশ মুসলমানদের দেশ পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আফগানিস্তানে এতদিন যুদ্ধ করে আবার বাধ্য হয়েছেন তালেবানদের হাতে দেশ ছেড়ে দিতে। আমরা আওয়ামী লীগ ওই সন্ত্রাসীদের কাছে আত্মসমর্পণ করি নাই। আফগানিস্তান থেকে আপনারা পালিয়ে গেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন! আপনি দেখেছেন কিভাবে আপনার সৈন্যরা দৌড়ে গিয়ে প্লেনে উঠেছে। কিভাবে তাড়িত হয়েছে। আমরা পালিয়ে যাই নাই। আমরা তাদেরকে মোকাবেলা করেছি। যারা সামনের কাতারে থেকে মোকাবেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আপনারা স্যাংশন দেন!

গাদ্দাফির হত্যার পেছনে আমেরিকাকে দায়ী করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, লিবিয়ায় একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রকে একটি জাতি রাষ্ট্র করেছিল মুয়াম্মর গাদ্দাফি। কী বিচার আপনারা করেছেন? দৌড়িয়ে তাকে হত্যা করেছেন! সাদ্দাম হোসেনের বিচারের নামে প্রহসন করেছেন। আপনারা ইরাকে আক্রমণ করেছেন। সেই যুদ্ধে যে চিফ অফ স্টাফ ছিল তিনি মৃত্যুর আগে বলেছিলেন, আমি জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি। কোন অস্ত্র আমরা ইরাকে পাই নাই। অথচ একটি দেশকে আমরা ধ্বংস করলাম। সে সারা পৃথিবীর মানবজাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে। এই মধ্যপ্রাচ্যকে যারা ধ্বংস করেছে তাদেরও আমি মনে করি যুদ্ধাপরাধি হিসেবে বিচার করা উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী আরও বলেন, আপনারাই বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলছেন। আপনাদেরই একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (হেনরি কিসিঞ্জার) মুক্তিযুদ্ধের সময় পরাজিত হয়েছেন পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়ে। বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য পাকিস্তানকে অস্ত্র দিয়েছেন, খাদ্য দিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে যখন পারেননি তখন সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিলেন। সপ্তম নৌবহরও পাকিস্তানকে রক্ষা করতে পারেনি, আমরাই বিজয়ী হয়েছি। পরাজয়ের গ্লানি মেনে নিতে পারে নাই। তাই প্রতিশোধের স্পৃহা থেকে বলেছিল বাংলাদেশ একটি তলাবিহীন ঝুড়ি।
তিনি বলেন, অক্সফোর্ড, হারবার্ডের একজন প্রফেসর বলেছিল বাংলাদেশ যদি উন্নয়ন করে তাহলে পৃথিবীর যেকোনো দেশে উন্নয়ন সম্ভব হবে। আল্লাহর ইচ্ছায় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কৌশলে আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে উন্নয়ন করেছে। আজকে যুক্তরাজ্যের ইকোনমিক রিসার্চ সেন্টার থেকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তারা বলেছে আগামী ৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর ২০তম ধনী দেশ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মশিউর রহমান। এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬

সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?

সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন

ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান

ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান

জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত

জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু

আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক

যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার

গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান

সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’

সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’

বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল

৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল

১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে

১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল