বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জানাযার অধিকার হরণ করেছে সরকার: রিজভী
১৫ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৪০ পিএম | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৪০ পিএম
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, সভা-সমাবেশ এমনকি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জানাযার অধিকারটুকুও হরণ করা হয়েছে। নরঘাতক সরকার এখন জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সরকার ২০১৮ সালের মতো আবারো নির্বাচনী মাঠ শূণ্য করার কৌশল গ্রহণ করেছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিশিরাতের সরকার বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে অদৃশ্য করা, গায়েবী মামলা দেয়া, পাইকারী হারে গ্রেফতার, বাসায় বাসায় হানা দেয়া, পরিবারের লোকজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করা, পেন্ডিং মামলায় জেলগেট থেকে বারবার গ্রেফতার করে কারাগারে আটকিয়ে রাখা ইত্যাদি সর্বনাশা খেলায় মেতেছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। মূলত: ২০১৮ এর নির্বাচনটি কোন নির্বাচনই ছিল না, এটি ছিল জনগণের সাথে প্রতারণা এবং ভোটের নামে অভিনব প্রহসন। কারণ ব্যালট বাক্স ভর্তি হয়েছিল আগের রাতের অন্ধকারে। বর্তমান আওয়ামী সরকার অবৈধ ও দখলদার সরকার। আগামী নির্বাচনেও তারা দখলের মহাপরিকল্পনা চুড়ান্ত করছে। আওয়ামী লীগ এমন একটি দলে পরিণত হয়েছে যে দলটি প্রমাণ করে তারা কোন মানবিক পরিবেশ থেকে উৎসারিত নয়। এদের কাছে গণইচ্ছার কোন দাম নেই। এরা এমন একটি নিপীড়ক দল যারা বহু মত ও পথকে শত্রুজ্ঞান করে। তাই ক্ষমতায় এসেই তারা জনগণকে ত্যাজ্য করে দেয়। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকার উদগ্র লালসা এদেরকে হিং¯্র ও রক্তপিপাসুতে পরিণত করে। এরা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক মনে করে। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনাকে তারা রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ বলে বিবেচনা করে। এ কারণেই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের লাশ পাওয়া যায় নদী-নালা-খালে-বিলে। অনেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় চিরদিনের জন্য। দুর্বিনীত দুঃশাসনের যাঁতাকলে ‘নির্বাচিত সরকার কথা’ টি জনগণকে ভুলিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন-নির্বাচন কমিশন সংবিধানের বাইরে যাবে না। আপনাদের সংবিধান যে কোথা থেকে নাজিল হয় তা জনগণ জানে। আওয়ামী চেতনায় জারিত কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে নিশিরাতের সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। সুতরাং সরকারের গানের সুরেই যে তাল দিবে নির্বাচন কমিশন এটাই স্বাভাবিক। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনেরই পাঁয়তারা করছে। এরা অবৈধ সরকারের নির্দেশ মানতে নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে। নির্বাচন কমিশন এমনই বিশ্বস্ত সেবাদাস যে, তারা স্বায়ত্বশাসিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাকে হ্রাস করে সেটি শেখ হাসিনার পদতলে অর্পণ করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সংবিধানের কথা বলে শেখ হাসিনাকে সন্তষ্ট করা জন্য। আসলে তারা শেখ হাসিনার নির্দেশে বেআইনী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেআইনীভাবে অজ্ঞাত দুটি রাজনৈতিক দলকে রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছে যাদের কোন কার্যালয় নেই, দেশজুড়ে তাদের কোন সংগঠন নেই।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জেলহাজতে বিএনপিসহ বিরোধী দলের বেশকিছু নেতাকর্মী নিপীড়ণ-নির্যাতনে এবং বিনা চিকিৎসায় ধুকতে ধুকতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। দেশের কারাগুলো শেখ হাসিনার কসাইখানায় পরিণত হয়েছে। চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। অথচ এদের আমলে কারাগারে সবচেয়ে বেশী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে। আজ দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর স্বাধীনতার ঘোষকের সহধর্মিনী, যিনি বিপন্ন গণতন্ত্রকে এক অকুতোভয় নেতৃত্বে বারবার পুনরুদ্ধার করেছেন, দেশের আইনের শাসন, সুবিচার এবং মৌলিক মানবাধিকারের প্রতীক ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। এই আটক অন্যায়, অবৈধ ও কুৎসিত প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রীকে সাজা দেয়া হয়েছে। বন্দী অবস্থায় করা হচ্ছে অমানবিব নিপীড়ণ। তাঁকে উন্নত মানের চিকিৎসা দিতে বাধা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী সরকার দস্যুদলের মতো বন্য আক্রোশের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষ ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে।
তিনি বলেন, প্যারোলের অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও মায়ের লাশ দেখতে দেয়া হয়নি বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টুকে। প্যারোলে মুক্তির সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরেও জেলগেটে গাড়ীতে উঠানোর সময় তাকে কারাগারে আবার ফেরত পাঠানো হয়। উপরের নির্দেশেই নাকি তাকে মায়ের জানাযায় অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
নতুন কর্মসূচি: সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য আজ বুধবার সারাদেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দোয়া মাহফিল। আগামীকাল বৃহস্পতিবার অবিলম্বে দেশনেত্রীর মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সারাদেশে লিফলেট বিতরণ ও ১৯ আগস্ট সকল মহানগর ও জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। অবৈধ, লুটেরা ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগের ১ দফা দাবিতে ও ১৮ আগস্ট শুক্রবার যুগপৎ আন্দোলনের ধারায় ঢাকা মহানগরসহ সকল মহানগরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক