যে দোকানে ১০ টাকায় পাবেন গরুর মাংস, ৪৫ টাকায় ইলিশ!
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৪০ পিএম | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৪০ পিএম
দেশের মধ্য আর নিম্ন আয়ের মানুষের যখন চাল-ডাল কিনতেই হিমশিম অবস্থা, তখন গরুর মাংস আর ইলিশের কথা-তো কল্পনাও করা যায় না। বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক দুর্দশার এমন সময়ে একটি দোকানে মিলছে ২ টাকার চা পাতা, ১ টাকার লবণ, ৪৫ টাকায় ৩ পিস ইলিশ মাছ, ১০ টাকায় চাকের মধু। এমনকি ওই দোকানে ১০ টাকায় মিলছে কয়েক পিস গরুর মাংস, ৫ টাকায় ছোট কাপে কোমল পানীয়।
রাজধানীর দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকা। এখানে রয়েছে ‘পাটোয়ারী স্টোর’ নামের ব্যতিক্রমী এক মুদি দোকান। দোকানজুড়ে সাজানো নানা পণ্যের পসরা। দোকানের বিভিন্ন স্থানে লেখা- ‘প্রয়োজন যতটুক, কিনুন ঠিক ততটুকুই, নো প্রবলেম।’ ‘চাহিদা অনুযায়ী সকল পণ্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বিনা সংকোচে বিক্রয় করা হয়। নো প্রবলেম’। মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প টাকায় বাজার করতে পারবেন দোকানটিতে।
‘পাটোয়ারী স্টোর’ নামের দোকানটির অবস্থান দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার ট্রান্সমিটার মোড় সংলগ্ন গলিতে। যার মালিক শাহাদাত হোসেন জুয়েল। দোকানের টুলের ওপর সাজানো ৫ টাকার সয়াবিন তেল, ৫ টাকার ডাল, ২ টাকার কাঁচা মরিচ, ১০ টাকার মধুসহ বিভিন্ন পণ্যের প্যাকেট। অল্প অল্প করে মাছ-মাংসও প্যাকেটজাত করে রেখেছেন দোকানি জুয়েল মিয়া। সেখানে আছে ১০ টাকা, ৩০ টাকা, ৪০ টাকার গরুর মাংস, ২৫ টাকার ইলিশ মাছ, ৯ টাকার তেলাপিয়া কিংবা ৪০ টাকার রুই মাছের প্যাকেট।
এমন উদ্যোগ নেওয়ার কথা কীভাবে মাথায় এলো? এমন প্রশ্নের উত্তরে জুয়েল মিয়া বলেন, ‘বহুদিন আমার ক্রেতাদের দেখেছি, বাজারে গিয়ে ২৫০ গ্রাম মাংস চেয়ে ফেরত এসেছেন। আমার দোকানে এসে তারা ডিম চেয়েছেন। তখন আমার খুব খারাপ লেগেছে। তাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর ইচ্ছা থেকেই আমি এমন উদ্যোগ শুরু করেছি।’
প্রয়োজনের বাইরে যাতে ক্রেতাদের পণ্য কিনতে না হয়, সেটিও মাথায় রেখেছেন জুয়েল। তিনি বলেন, ‘অনেক ক্রেতা আছেন যাদের প্রয়োজন ৫ টাকার মরিচ কিংবা ১০ টাকার আলু। কিন্তু বাজারে গিয়ে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণের কম কিনতে পারেন না। ফলে বাড়তি অংশ নষ্ট হয়। এটা আমার পছন্দ নয়।’
জুয়েলের দোকানের কোনো সাইনবোর্ড নেই। তবে ট্রান্সমিটার মোড় এলাকায় যে কাউকে জুয়েলের মুদি দোকান কোথায়, জানতে চাইলেই পাওয়া যায় পাটওয়ারি স্টোরের ঠিকানা। দোকানটি নিয়ে এলাকাবাসীও উচ্ছ্বসিত। নিঃসংকোচে দোকানটি থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য অল্প দামে কিনতে পেরে এলাকাবাসী বেশ খুশি।
জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে ভাইয়ের মুদি দোকানে সময় দিতে থাকেন জুয়েল। ২০০৬ সালে চেষ্টা করেন অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার। তবে সেটা না হওয়ায় মুদি দোকানে মনোনিবেশ করেন এই ব্যবসায়ী।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও