বাজেটে প্রবৃদ্ধি অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেই সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা
১৩ জুন ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম
বাজেটে ভালো প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হলেও সেজন্য নেই কোন সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা। পাশাপাশি বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রবৃদ্ধি অর্জন ও মূল্যস্ফীতি কমাতে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রয়োজন ছিল। বৃহস্প্রতিবার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে গবেষনা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত বাজেট পরবর্তি আলোচনায় এমন মন্তব্য করেন অর্থনীতিবিদরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
র্যাপিড-এর চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের এ এগারো মাসে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে। যেখানে বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ এ নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে। তবে টাকার অবমূল্যায়নের সম্ভাবনা, অব্যাহত আমদানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দূর্বল হওয়া ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি বড় চ্যালেঞ্জিং। তিনি বলেন, যেখানে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ লক্ষ্যমাত্রা সেখানে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কিভাবে সম্ভব। এছাড়া বৈদেশিক আয় ঘাটতির কারণে পণ্য আমদানি করা সহজ হবেনা। সুদের হার বাড়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগের যে লক্ষ্যমাত্রা বাজেটে বলা হচ্ছে সেটা অর্জন করা কঠিন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ একই থাকছে। স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বাজেটে বলা হলেও অগ্রাধিকার খাতগুলোতে কোন বরাদ্দ থাকছেনা। বাজেটের মূল বরাদ্দ মোটাদাগে প্রতি বছর একইভাবে বেতনভাতা দিতে চলে যাচ্ছে। উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মসিউর রহমান বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য আমাদের অপ্রক্রিয়াজাত খাদ্যের উপর শুল্ককর সবসময় কম থাকে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা শূণ্য হতে পারে, অথবা একেবারে নমনীয় হতে পারে। যাতে খাবারের দাম না বাড়ে। তিনি বলেন, এই বাজেট মূলত তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে করা হয়েছে। একটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং মধ্যমেয়াদী আর্থিক পরিকল্পনা। এসবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্নভাবে বাজেট তৈরী করা হয়, তবে সেখানে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, সকল লক্ষ্য বা আশা পূরণ হবেনা। কিছু এখন হবে, যেটুকু মিস হবে সেটা পরবর্তি সময়ে হবে। প্রবৃদ্ধিসহ অনেক বিষয় এরমধ্যে পড়তে পরে। তিনি বলেন, সরকারের বাজেট প্রণয়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সে সক্ষমতা কতোটুকু স্বচ্ছ হচ্ছে বা সেটা কতোটুকু সমস্যাকে বুঝতে পেরেছে সেটা একটি প্রশ্ন। মসিউর রহমান বলেন, ভালো বাজেট করতে হলে সরকারি ব্যয় কমানোর কথা সবসময় বলা হয়। তখন আমাদের নজর আসে বড় বড় কার্যক্রমে কথা। তবে এখন বড় খরচ স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে। সেসব ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন না করে উচিত কোনভাবে ব্যয় কমালে একটি অশুভ অর্থনীতি আসবে না। এসব ব্যয় কিভাবে হবে, সেসব প্রোগ্রামগুলো পরিস্কার করতে হবে। বরাদ্দ ও ভর্তুকির মতো ব্যয়গুলো সঠিকভাবে নির্বাচিত হয়না। যে কারণে যেমন ফল আমরা চাই, সেটা পাওয়া যায়না। বাজেটে সহায়তার জন্য খাত নির্বাচনের ত্রুটি থাকে, এটা কেউ অস্বীকার করেনা। বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, সরকার বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থার ওপর ভিত্তি করে সমন্বয়ের নীতি নিয়েছে। মুদ্রার বিনিময় হার ও ব্যাংকের সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করা বন্ধ করেছে। পাশাপাশি রাজস্ব ব্যয়ের একটি নায্য রুপরেখা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে এককোটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। এ কার্যক্রম শ্রমিক এলাকাতে আরও বেগবান করতে হবে, যারা নূন্যতম বেতন পায়। এছাড়া নিত্যপণ্যে শূন্য ট্যারিফ ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দরকার। মূল কথা নিত্যপণ্যে আরও নমনীয় হতে হবে। তবে এসবের দাম এতো কেন বাড়ে সেটা কিন্তু রহস্যময় বিষয়। সেটার সদোত্তর পাওয়া দরকার। মার্কেট পলিসি নাকি অন্য কোন কারণে এটা হচ্ছে দেখা দরকার। প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের যে ব্যস্তবতা তার সঙ্গে এ বাজেটের কোন মিল নেই। আমাদের পোশাক রপ্তানি এক অংকে নেমেছে সেটা নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেই। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের (এলডিসি গ্রাজুয়েশন) পরে পোশাক খাতে যেসব সমস্যা হবে সেটা নিয়ে কিছু নেই। গ্রীন এনার্জি আর বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলা হচ্ছে কিন্তু সেটার কোন পরিকল্পনা নেই। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ, র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফসহ অন্যান্যরা এ সময় বক্তব্য রাখেন।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
তিলক ভর্মার বীরত্বে ভারতের রোমাঞ্চকর জয়
তিলক ভর্মার বীরত্বে ভারতের রোমাঞ্চকর জয়
সিটি অধিনায়কের নতুন ঠিকানা এখন এসি মিলান
ছাগলনাইয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
মতলবে আদিবা হত্যা মামলার আসামী ইমনের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা
গাজাকে বাসোপযোগী করতে হবে
ড. মুহাম্মদ ইউনূসেই জনগণের আস্থা
টি-টোয়েন্টির বর্ষসেরা আর্শদিপ
দ্বিতীয় বছরের মতো বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর ঘোষণা কানাডার
এ দেশকে নিয়ে আমরা আর কাউকে খেলতে দেব না - মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান
গ্রামীণ ট্রাস্টের মালিকানায় আসছে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়
সৈয়দপুরে শ্যাইলার মোড় জামে মসজিদ কমিটির উদ্যোগে শতাধিক শীতবস্ত্র বিতরন
জেলা বিএনপির আমৃত্যু সভাপতি খোরশেদ আলমের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা
সৌদির নতুন জাতীয় সংগীতের সুর করবেন মার্কিন তারকা
প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করুন : লুৎফর রহমান খান আজাদ
শেরপুরে আন্তঃউপজেলা ভলিবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে সদর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন
সৈয়দপুরে শ্যাইলার মোড় জামে মসজিদ কমিটির উদ্যোগে শতাধিক শীতবস্ত্র বিতরণ
আছরের নামাজে বিলম্ব হয়ে মাগরিবের নামাজ শুরু হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।
আ.লীগ সরকার জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিল প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প
বাংলা একাডেমি পুরস্কারের ঘোষিত নামের তালিকা স্থগিত