ভারতকে রেল করিডোর দেয়ায় বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে
০৩ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম | আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বর্তমান সরকারের সৃষ্ট নানাবিধ সঙ্কটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর সঙ্কটকে আরো ঘনীভূত করেছে। যে চুক্তিগুলো করা হয়েছে, তাতে কোন আওয়ামী লীগের লোকেরাও বাংলাদেশের স্বার্থ দেখাতে পারছে না। কানেক্টিভিটির নামে যা করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ভাষায় পরিস্কার হয়েছে; “বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া” এর মূল লক্ষ।
মুফতি রেজাউল করীম পীর সাহেব তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের স্বকীয়তাবোধ আছে এমন কারো পক্ষে “বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও চিকিৎসা নিতে যাওয়ার জন্য অন্য দেশের সাথে চুক্তি করা সম্ভব না। কারণ, এতে যে দেশের চিকিৎসাখাত, পর্যটনখাত, অভ্যন্তরীণ ব্যবসাখাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা সহজেই অনুমেয়। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথার সাথে যখন প্রধানমন্ত্রী সীমানা বিহীন ইউরোপের দৃষ্টান্ত দেখান তখন সীমানা ও স্বাধীনতা নিয়ে আমরা শঙ্কিত না হয়ে পারি না। বিদ্যুতখাতের পরিকল্পনাহীনতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও খামখেয়ালিপনার সর্বশেষ দেখা গেলো নেপাল থেকে বিদ্যুত আনার চুক্তি থেকে। ভারতের গ্রিড ব্যবহার, ভারতকে দুই ধরণের মাসুল দিয়ে আনা এই বিদ্যুত বিদ্যুতখাতকে অনিরাপদ ও ভারত নির্ভর করবে। কম দামের যুক্তি দিয়ে বিদ্যুত আনা হচ্ছে, অথচ সবার আপত্তি উপেক্ষা করে দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিলো। কুইক রেন্টাল বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের নামে যে যুক্তিতে, যেভাবে ও যে পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয় তাকে মগের মুল্লুকি ছাড়া আর কিছু বলার নাই। এ সময়ে এসে ট্রানজিট আদতে কোন রাজনৈতিক ইস্যুই হওয়ার কথা না। কারণ সারাবিশ্বেই উইন-উইন সিচুয়েশনে এটা হচ্ছে। কিন্তু এই সরকার ভারতকে রেল করিডোর দিয়েছে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার পেছনে ভারতের অবদানের প্রতিদান হিসেবে। সেজন্য করিডোর দেয়ার বিনিময়ে তিনি কোন কিছু আদায় করতে পারেননি; বরং বলতে গেলে বিনা শর্তে এমনকি প্রায় বিনা মাসুলে করিডোর দেন। এ ধরণের করিডোর প্রদান আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে। নিজেদের সার্বভৌমত্বের ওপরে থাকা অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
পীর সাহেব বলেন, নেপাল-ভুটানের সাথে আমাদের বহুল কাঙ্খিত ট্রানজিট না পাওয়া, তিস্তা, গঙ্গার পানি নিয়ে কোন অগ্রগতি না হওয়া, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ না হওয়া, সেভেন সিস্টারে আমাদের বাণিজ্য সম্ভবনা নষ্ট করা এবং নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকি, কৌশলগত ভূরাজনীতির নানা জটিলতা সত্যেও যেভাবে করিডোর দেয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, ভারত সরকার আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে পশ্চিমবাংলাকেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বিবেচনায় রাখে। বর্তমান সরকার স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবাংলার চেয়েও গুরুত্বহীন করে ফেলেছে।
অথচ দেশের প্রতি দরদ থাকলে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে পানি, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ঘাটতি, রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো রাজনীতি নিরেপেক্ষ ইস্যুগুলো নিয়ে বার্গেইনিং করতে পারতেন। আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশ স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হওয়া, ভারতের সাথে দেশবিরোধী দাসখত চুক্তি বাতিল ও মাত্রাহীন দুর্নীতি এবং ক্রমশ ঘনীভূত জাতীয় সঙ্কটের প্রেক্ষিতে আয়োজিত “জাতীয় সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের আহবায়ক মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক ও ঢাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক কর্ণেল (অব. মিয়া মসিউজ্জামান, গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক ও ঢাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নুর, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, কর্ণেল (অব.) আব্দুল হক, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড.নকিব নসরুল্লাহ, প্রবীণ সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, প্রফেসর হারুন উর রশিদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুফতি আব্দুল কাইয়ূম, প্রফেসর আরিফুল ইসলাম, ওলামা মাশায়েখ পরিষদের আহবায়ক মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী ও ইঞ্জিনিয়ার এম এ হাদী।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নিজেকে আ.লীগের চক্রান্তের শিকার দাবি এনবিআরের সেই মতিউরের
হিলিতে দিনব্যাপী ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ
মহিলাদের জন্য সংসদে কোন সংরক্ষিত আসন চাই না : মুফতি ফয়জুল করীম
কারামুক্ত ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী তারুণ্য উৎসব উদযাপন
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
আটঘরিয়ায় মসজিদের মাইক চুরি
রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় ড. ইউনূসের নেতৃত্বে কমিশন গঠন
শায়খ ফুলতলী আমাদের বেহেশতের পথ দেখিয়েছেন: দামেস্কের শায়খ সাইয়্যিদ ফাদি জু’বা
সৈয়দপুরে নববধূ মুক্তার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
ইভটিজিংয়ের জেরে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ খ্যাত কিশোরীর আত্মহত্যা
গাজীপুরে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ: ওসি ক্লোজ, বদলি ৩ এসআই
এক স্বৈরাচারীকে হটিয়ে আরেক স্বৈরাচারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না জনগণ: কামাল উদ্দিন পাটোওয়ারী
সুন্দরবন থেকে ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ