প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের ভাড়া বাবদ বছরে ৩ কোটি টাকা গচ্চা, টনক নড়ছে না গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের !

স্টাফ রিপোর্টার

১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩১ পিএম | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩১ পিএম

ভাড়াকৃত ভবন থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে নির্মাণাধীন নতুন ভবনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় স্থানান্তর করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ফ্যাসিবাদী হাসিনার প্রেতাত্মা সাবেক প্রবাসী মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন আইন কানুন তোয়াক্কা না করে ২০১২ সনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ব্যতিরেকে স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে সচিবালয়ের বাইরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ইস্কাটন গার্ডেন রোডস্থ প্রবাসী কল্যাণ ভবনে স্থানান্তর করেন। ভবনটি কেপিআই ভুক্ত না হওয়ায় অঙ্গীভ’ত আনসার সদস্যদের দ্বারা ভবনের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। প্রবাসী মন্ত্রণালয় সচিবালয়ের বাইরে হওয়ায় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে দাপ্তরিক যোগাযোগসহ প্রশাসনিক কাজ চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। তাছাড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা পরিবহন, স্বাস্থ্য সেবা, রেশন ও ডে-কেয়ারসহ নানাবিধ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভাড়া বাবদ প্রতি বছর ৩ কোটি ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে।

সচিবালয়ের অভ্যন্তরে সরকারি ভবনে প্রবাসী মন্ত্রণালয় স্থানান্তরিত হলে ভাড়াকৃত সমুদয় অর্থ সাশ্রয়ী হবে এবং মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। সচিবালয়ের বাইরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় হওয়ায় দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা বেশি দিন এ মন্ত্রণালয়ে সার্ভিস দিতে অনিরহা প্রকাশ করেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা-কর্মচারি সমিতির সভাপতি মো.সিরাজুল ইসলাম সরকার অতিসম্প্রতি এ ব্যাপারে দ্রæত কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রবাসী উপদেষ্টা, প্রবাসী সচিবের কাছে লিখিত প্রস্তাব পেশ করেছেন। সচিবালয়ের বাইরে প্রবাসী মন্ত্রণালয় হওয়ায় এক শ্রেণির সুবিধাবাদী মহল এ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক বিভিন্ন সিন্ডিকেট গড়ে তুলছে। সকল কুচক্রিমহলের হাত থেকে সুরক্ষার জন্য মন্ত্রণালয়টি সচিবালয়ের অভ্যন্তরে নতুন ভবনে স্থানান্তর করার জন্য ২০১৫ সনে তৎকালীন মন্ত্রী, ২০১৬ সনে তৎকালীন সচিব এবং গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সম্মতিক্রমে প্রবাসী সচিব মো. রুহুল আমিন এক চিঠিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় অদ্যাবধি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নজরে দেননি।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে সরকারি ডিও পত্রের চাহিদার পরবর্তী অগ্রগতির জানতে চাওয়া হয়েছিলো গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম ভুইয়ার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি সভা হবে। উক্ত সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন নির্মানকৃত ভবনে কে কতটুকু স্পেস পাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে । তবে এ বিষয়ে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে সে বিষয়ে কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। ১ মাসেরও বেশি সময় হলেও আবাসন পরিদপ্তর হতে কোন ধরনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ বিষয়ে কোন আলোর মুখ দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা সকল মন্ত্রণালয়ের সচিবদের প্রতি ২৫ টি নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিবালয়ের ভিতরে স্থানান্তর না হচ্ছে ততদিন সরকারি অর্থের অপচয় হতেই থাকবে।

বিভাগ : মহানগর