মহাখালী-গুলশান লিংকরোড : অবৈধ পার্কিংয়ে সর্বনাশ
১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৫ পিএম | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২২ পিএম
গুলশান থেকে মহাখালী লিংকরোড রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়ক দিয়ে সব সময়ই যানবাহন চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় রয়েছে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। রয়েছে ব্যক্তিগত বাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এই এলাকায় অবস্থিত বেশ কয়েকটি নামিদামি হাসপাতাল। এছাড়াও রয়েছে গাউছুল আজম মসজিদ কমপ্লেক্সসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রতিষ্ঠান। এই এলাকায় যাতায়াত করেন লাখ লাখ মানুষ। গাড়ির অবৈধ পার্কিং ও নিয়মিত যানবাহনের জটলা থাকার কারণে এই সড়কে চলাচলকারী লোকজন ও মসজিদে আসা স্থানীয় মুসল্লীরা পড়েন বিপাকে।
বিশেষ করে ওয়ারলেস গেট এলাকায় বনানী যাওয়ার পথে নিয়মিতই লেগে থাকে রিক্সা ও ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিক্সার জটলা। এই এলাকায় চলাচলকারী স্থানীয় যাত্রীদের প্রতিদিনই পোহাতে হয় দুর্ভোগ। বেশ কিছুদিন ধরে অবৈধ বেপারিচারিত রিক্সার দাপটের কারণে এই সড়কে সাধারণ যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া প্রতি ওয়াক্তের নামাজের সময় মসজিদে আসা মুসল্লিদের রাস্তা পারাপার এবং যাতায়াতে কষ্ট করে চলাচল করতে হয়।
মসজিদে নামাজ পড়তে আসা কয়েকজন মুসল্লী জানান, এই এলাকার প্রসিদ্ধ মসজিদে গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে তারা নিয়মিত নামাজ পড়তে আসেন। কিন্তু রাস্তার যানজট ও যানবাহনের অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে তাদেরকে সমস্যায় পড়তে হয়। নিয়মিত ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থাপনা থাকলে হয়তো প্রতিনিয়ত এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। তাই তারা ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম তদারককি ও বিশেষ করে এই এলাকার অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদের ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানান ।
জানা যায়, সময় সংক্ষেপন ও জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে তৈরী করা হয়েছিল মহাখালী-গুলশান লিংকরোড। সেই সংযুক্ত রাস্তায় এখন জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি তিতুমীর কলেজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, পর্যটন কর্পোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট, বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট, গ্যাস্ট্রোলিভার, এ্যাজমা, যক্ষ্মা হাসপাতালসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হয় এই রাস্তা। সেই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এখন দখলে চলে গেছে। প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে পার্কিং করে রাখা হয় বাস ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পার্কিং করে রাখার ফলে এটি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। যা যথাযথ দেখভালের অভাবে এখন অবৈধ পার্কিং এলাকায় পরিনত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এই এলাকায় বিভিন্ন প্রাইভেট অফিস, মার্কেট ও ব্যাংকের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত রাস্তার দুইধারের একতৃতীয়াংশ জায়গায়জুড়ে যত্রতত্র অবৈধ পাকিং এর প্রতিযোগীতা লক্ষ কারা যায়। শুধু তাই নয় লোকাল গণপরিবহণসমূহও পার্কিংএর নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে এই রাস্তাকে। যার ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। যানজট উপেক্ষা করার জন্য আশেপাশের রোডগুলোতে দুই চাকা ও তিন চাকার যানসহ প্রাইভেটকার প্রবেশ করে সেখানেও স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্নতা ঘটায়। এমন ঘটনা নতুন নয়, দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে এই অনিয়ম। স্থানীয়সহ সাধারণ জনগণ এর জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় অবহেলাকে দায়ী করছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার শৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য তেমন কোন ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই। মাঝে মাঝে এই সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দেখা গেলেও তাদের অবহেলার কথাও বলা হচ্ছে। বেশিরভাগ সময়ে ট্রাফিকের কনস্টেবলদের দিয়ে কাজ করানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এই সড়কে দায়িত্ব পালন করতে খুব কম সময়ই দেখা যায়। মহাখালী আমতলীতে ট্রাফিক বক্সকে কেন্দ্র করে কিছুসংখ্যক সাধারণ ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের কাজ করতে দেখা গেলেও সরকারী তিতুমীর কলেজ, ওয়ারলেইস গেইট, টিবি গেইট এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রায়ই ট্রাফিকশূণ্য থাকে বেশিরভাগ সময়। যার ফলে এই এলাকার সড়কের দুই পাশে অবৈধ পার্কিং করার সুযোগ পায় গাড়ির চালকরা। কোথাও কোথাও আবার নিজ অফিস, ব্যাংক ও দোকানের সামনের রাস্তায় নির্দিষ্ট যায়গা নো-পার্কিং সাইনবোর্ড দ্বারা দখল করে রাখা হয় রাস্তার জায়গা। যা দেখার কেউ নেই বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এই সড়কে একটি প্রাইভেটকার পার্কিং করে রাখা গাড়ির চালক কবির বলেন, আমি যেই অফিসে লোকজনকে নিয়ে এসেছি সেই প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত কোন গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নেই। সেই ভবনের নিচের জায়গাগুলোর দোকানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ভবনটির উপরের তলায় অফিস হওয়ায় পার্কিং করে রাখতে হচ্ছে সড়কের উপর। এছাড়া অন্য আর কোন জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) আবু সায়েম নয়ন ইনকিলাবকে বলেন, গুলশান এলাকার এই সড়কটিতে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। তবুও আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক সময় কিছু সংখ্যক প্রাইভেটকার এবং গণপরিবহনের বাস এই সড়কে পার্কিং করে রাখে। এতে করে সাধারণ যানবাহন ও যাত্রী চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি করে। এই সমস্যার সমাধানে আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছি। নিয়মিত এই সমস্যার সমাধানে গুলশান ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কসবায় পাহাড় কাটার অপরাধে ২ জনের অর্থদণ্ড
নরসিংদীতে মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামকে বিদায় করে টিকে রইল খুলনা
পলাতক ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ফ্রিজে রাখা বাসি ভাতে উপকার দ্বিগুণ!
আ.লীগ দেশটাকে গোরস্থানে পরিণত করেছিল : জামায়াত আমির
সেনবাগে মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় ভাগ্নে নিহত : মামা আহত
কুষ্টিয়ায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গৃহবধুকে নির্যাতন
রাজশাহীর বাগমারায় পুকুর থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার
‘জনশক্তি’ নামে কোনও রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি : জাতীয় নাগরিক কমিটি
কুষ্টিয়ায় ট্রাক ও নছিমন সংঘর্ষে গরু ব্যবসায়ী নিহত
র্যাবকে সমাজে রাখা ঠিক হবেনা -রাজশাহীতে নূর খান
নওগাঁয় ৩ জনকে পিটিয়ে জখম, আহতদের উদ্ধার করলো পুলিশ
মাদারীপুরে গুড়ি বৃষ্টি আর হিমেল বাতাসে জনজীবন স্থবির
দুমকীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাঁধা
দুবাই মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশি মেধাবী শিক্ষার্থীর অ্যাওয়ার্ড লাভ
'বরবাদ' সিনেমা শতকোটির গন্ডি পেরিয়ে যাবে! কি বললেন শাকিব?
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বাস চাপায় মা ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন নিহত
দোয়ারাবাজারে ভারতেীয় সীমান্তে ৩০০ বস্তা রশুন আটক করেছে টাস্কফোর্স
রাজশাহীতে নেসকোর ভৌতিক বিল বন্ধসহ নানারকম হয়রানীর প্রতিবাদে বিক্ষোভ