ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

প্রেসিডেন্ট ফ্যাসিবাদের প্রোডাক্ট হলেও সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করা যাবে না: রিজভী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

 

প্রেসিডেন্ট ফ্যাসিবাদের প্রোডাক্ট হলেও তাকে পদত্যাগের কথা বলে বড় ধরনের সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আজকে প্রেসিডেন্টের বিষয় নিয়ে কথা উঠেছে আমরা সবাই জানি এই প্রেসিডেন্ট ফ্যাসিবাদেরই একটি প্রোডাক্ট। কিন্তু আপনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন ছোটখাটো যদি গর্ত হয় আপনি সেই গর্ত টপকিয়ে পার হয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু বড় গর্ত যদি খাল হয় তখন তো সেটা টপকানোর সম্ভব নয়, সেটি টপকাতে গেলে পড়ে যেতে পারেন। সুতরাং যাতে কোন সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি না হয় এইজন্য অনেক চিন্তা করে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। অল্প শূন্যতা হলে সেই শূন্যতা ভরাট করে দেয়, কিন্তু বড় শূন্যতা হলে ওটা ভরাট করা মুশকিল হয়, এইখানে শেখ হাসিনার পতনে যারা অসন্তুষ্ট হয়েছেন বাংলাদেশের ভেতরের কিছু মানুষ এবং বাহিরের লোকজন নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্তে মেতে উঠবে।

শনিবার ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজধানীর তেজগাঁও এ লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি পরিস্থিতি একটি দুনিয়া কাঁপানো বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তারা নিশ্চয়তা দিবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের। সেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করা তাদের দরকার এর মধ্যে সংস্কারের যে কথাগুলো উঠেছে সেই সংস্কার তারা করবে কিন্তু কথা হল সেটা তারা কত দিনে করবে? এদেশের জনগণ, রাজনৈতিক দল যারা গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছে তারা সকলেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। নিঃসন্দেহে ড. মোহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের একজন কৃতি মানুষ, বাংলাদেশের জন্য যিনি সুনাম বয়ে নিয়ে এসেছেন। প্রত্যেকেই তাকে শ্রদ্ধা করে। যে গণতন্ত্রের জন্য এত লড়াই, এত সংগ্রাম, অনেক মা তার সন্তানহারা, অনেক স্ত্রী তার স্বামীহারা, এটা তো শুধুমাত্র গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য এবং নাগরিক স্বাধীনতার জন্য। তাই যদি হয় তাহলে নির্বাচন নিয়ে আপনাদের এত দ্বিধা-দ্ব›দ্ব কেন? নির্বাচনের জন্য আপনারা যে তারিখটা দিবেন সেটা বলে দিন। এর মধ্যে যতটুকু সংস্কার করা দরকার করুন।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জনগণ তো সংস্কার চায়, শেখ হাসিনার বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ জনগণ চায় না। যে পুলিশ মানব-দরদী হবে, জনপ্রশাসন জনগণের কল্যাণে আসবে, জনগণ সেই প্রশাসন চায়। এগুলো সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগবে? বিচার বিভাগ হচ্ছে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল এটা সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগবে? বেশিদিন তো সময় লাগার কথা নয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছর ছিল এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। এক ভয়ঙ্কর দানব শেখ হাসিনাকে তাড়াতে গিয়ে শর্ট গানের গুলিতে কারো পা চলে গেছে, কারো দু চোখের আলো নিভে গেছে, কারো কারো জীবন চলে গেছে। আওয়ামী বাকশালী দুঃশাসনে ভয়ংকর বিষাক্ত বাতাসের মধ্যে সারা বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ছিল। যারা কথা বলেছে, প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে রাতের অন্ধকারে নিয়ে অদৃশ্য করে দেয়া হয়েছে। এই এলাকার সুমন,জাকির আমাদের মাঝে আর নেই,তারা এখন কোথায় আছে আমরা কেউ বলতে পারি না। তাদেরকে গুম করা হয়েছে,আমি তো মাত্র দুজনের নাম বললাম।

তিনি বলেন, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ সারা বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে অদৃশ্য করে দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কেউ একটা টু শব্দ করবে না, কেউ টু শব্দ করলে তার পরিণতি হবে গুম অথবা জনির মত ক্রসফায়ারে হত্যা। এই ছিল শেখ হাসিনার আমল।

রিজভী বলেন, অনেক লড়াই করতে হয়েছে আমাদেরকে। দিনের পর দিন দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পুরানো জরাজীর্ণ কারাগারে রাখা হয়েছে, ৬০ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে আসামি করা হয়েছে প্রায় দুই লাখ মামলায়। এই অবস্থার মধ্যে শেখ হাসিনা মনে করেছিল আমার বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই, আমি বাংলাদেশের মানুষের টাকা, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে আমার নিজেদের লোকজনদেরকে দিয়ে লুটপাট করাবো কেউ কোন আওয়াজ করতে পারবে না। সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে জনগণের গচ্ছিত টাকা আমি হরি লুট করবো,পাচার করব, কানাডায় বেগমপাড়া বানাবো, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানাবো কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারবে না। এই ছিল শেখ হাসিনার ইচ্ছা। এভাবেই গত ১৫ বছর শেখ হাসিনা দেশ চালিয়েছে। বিচার বিভাগ তার আচলের মধ্যে ছিল, পুলিশ বিভাগ তার শাড়ির আঁচলের মধ্যে ছিল, জনপ্রশাসন তার শাড়ির আঁচলের মধ্যে বাধা ছিল।

এসময় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহবায়ক সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুল ইসলাম রবিন, ডা. জাহিদুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

--


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিট
ঢাকা মহানগর মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
‘ইসলামী গণবিপ্লবের লক্ষ্যে সকল মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’
ক্ষমতাচ্যুত আ.লীগ জনগণ থেকে সম্পূর্ণরুপে বিচ্ছিন্ন ছিল: আমিনুল হক
কাকরাইল চার্চে দেশ-জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে প্রার্থনা
আরও

আরও পড়ুন

সময় টিভির সাংবাদিক বরখাস্ত: এএফপির প্রতিবেদন নিয়ে যা বললেন হাসনাত

সময় টিভির সাংবাদিক বরখাস্ত: এএফপির প্রতিবেদন নিয়ে যা বললেন হাসনাত

আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা

আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা

লক্ষ্মীপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিলো স্থানীয়রা

লক্ষ্মীপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিলো স্থানীয়রা

গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার

গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার

সচিবালয়ের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস

সচিবালয়ের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস

ফ্যাসিবাদের সময় উত্তরবঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে: নীলফামারীতে উপদেষ্টা আসিফ

ফ্যাসিবাদের সময় উত্তরবঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে: নীলফামারীতে উপদেষ্টা আসিফ

সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত ফায়ার ফাইটার সোহানুর

সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত ফায়ার ফাইটার সোহানুর

সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিট

সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিট

গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন উপদেষ্টা

গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন উপদেষ্টা

বগুড়ার ধুনট পল্লীতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই

বগুড়ার ধুনট পল্লীতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ

সিদ্দিরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই  শ্রমিকের মৃত্যু

সিদ্দিরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু

নাচোলে পিয়ারাবাগানে এক গৃহবধূ খুন

নাচোলে পিয়ারাবাগানে এক গৃহবধূ খুন

৫ জানুয়ারি থেকে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু

৫ জানুয়ারি থেকে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মোটর থেকে বৈদ্যুতিক তার খুলতে প্রাণ গেল যুবকের

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মোটর থেকে বৈদ্যুতিক তার খুলতে প্রাণ গেল যুবকের

কারখানায় আগুন, পরিদর্শনে  হাতেম

কারখানায় আগুন, পরিদর্শনে হাতেম

নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই

কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই

ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০

ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০

আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা