স্বৈরাচারের দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে লক্ষ্য পৌছানো সহজ নয় : তারেক রহমান
৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
পতিত স্বৈরাচার-মাফিয়া সরকারের বেনিফিশিয়ারি-দোসরদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে পরাজিত অপশক্তি প্রশাসনে থাকা তাদের দোসররা নানা কৌশলে ষড়যন্ত্র করছে। এই কারণে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি থাকলেও একটি বিষয় বিএনপিসহ সবাই আমরা একমত- মাফিয়া সরকারের বিনিফিয়িশারদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য পৌঁছানো সহজ নয়।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানী ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, নিজেদের চরিতার্থ স্বার্থ হাসিল করতে পতিত-পরাজিত শক্তি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতো, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতো। সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কোন একটি ঘটনার বিচার করেনি তারা। বরং যেসব ঘটনা ঘটতো সেগুলো জড়িত ছিল স্বৈরচারের লোকজনই।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তাবেদার সরকারের সময় আমরা দেখেছি সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যারা অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মানুষদের রাখা হয়েছিল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর স্বৈরশাসক পালানোর পর দেশের মুসলমান, হিন্দুসহ সকল ধর্মের মানুষ এখন আয়না ঘরের ভীতিমুক্ত। আজ আমরা স্বাধীনভাবে এখানে একত্রিত হতে পেরেছি। তবে বিভিন্ন ধর্ম গোষ্ঠীর স্বার্থকে পুঁজি করে বা তাদেরকে ব্যবহার করে বা কোন ধর্মকে ব্যবহার করে পলাতক স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া দোসররা যাতে কোন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে না পারে, সে ব্যাপারে আপনাদেরকে ও আমাদেরকে সকলকে সর্তক থাকতে হবে।
ভবিষ্যতে সকল ধর্মের মানুষ তার ধর্ম, ধর্মীয় উৎসব নিশ্চিন্তে উদযাপন করতে পারে তেমন একটি দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ধর্ম যার যার, কিন্তু নিরাপত্তা পাওয়ায় অধিকার সবার।
তারেক রহমান বলেন, মাফিয়া সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য অন্তর্বর্তীকালানী সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ১৫ বছরের জঞ্জাল শেষ করে চলমান সংস্কার কার্যক্রম শেষ করা বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে গিয়ে জনগণের প্রতিদিনের দুঃখ, দুর্দশা লাঘব করা না গেলে, জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়বে। ফলে এই সরকারের কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডাভিত্তিক করা অত্যন্ত জরুরি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৭১’ সালে মুক্তিযুদ্ধে পর একটা নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারিনি। এবার ৫ আগস্টের পর আবার একটা নতুন সম্ভাবনা এসেছে, আসুন আমরা সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলি। আসুন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি।
পতিত শক্তি নানা ধরনের উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে, কোনভাবে এই উস্কানির ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদীতে বিশ্বাসী, সকলে মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। ধর্ম যার যার দেশটা আমাদের সকলের। ৫ আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর একটা প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, আসুন আমরা সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করি।
স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস বলেন, কোন মুসলমান হিন্দুদের মন্দির ভাঙতে পারে না, কোন ধর্মের এমন নেই। এটি কে করছে? যত ধরা পড়ছে সব আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগ। আমার এলাকায় যত হিন্দুদের জমি দখল করেছে সব আওয়ামী লীগের নেতা।
বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. সুব্রত বুড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, আফরোজা খানম রিতা, বিএনপি ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য সুশীল বড়ুয়া, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট উপদেষ্টা তপন দে, মহাসচিব তরুণ দে, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মিল্টন বৈদ্য, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজাঁ উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেবসহ বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিবৃন্দ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ভারতে শঙ্করাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে হস্তক্ষেপ চাইলেন একদল বাংলাদেশি হিন্দু
অবশেষে সচিবালয়ে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে, আলজাজিরার প্রতিবেদন কি বলছে
সচিবালয়ে সেনাবাহিনী-বিজিবি মোতায়েন
কানু দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি
বাংলাদেশ থেকে নথি না আসাতেই জামিন পিকে হালদারের?
সময় টিভির সাংবাদিক বরখাস্ত: এএফপির প্রতিবেদন নিয়ে যা বললেন হাসনাত
আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা
লক্ষ্মীপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিলো স্থানীয়রা
গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
সচিবালয়ের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস
ফ্যাসিবাদের সময় উত্তরবঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে: নীলফামারীতে উপদেষ্টা আসিফ
সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত ফায়ার ফাইটার সোহানুর
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিট
গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন উপদেষ্টা
বগুড়ার ধুনট পল্লীতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই
দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ
সিদ্দিরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু
নাচোলে পিয়ারাবাগানে এক গৃহবধূ খুন
৫ জানুয়ারি থেকে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু