বিচারপতি মানিকের ৭ বহুতল ভবন, রহস্য উন্মোচনে দুদক
০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম
আলোচিত-সমালোচিত সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। রাজধানী ঢাকার বারিধারায় পাঁচ একর সরকারি জমি দখল করে আটতলাবিশিষ্ট সাতটি বাড়ি নির্মাণ করে শতাধিক ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। যদিও কাগজপত্রে তিনি দাবি করেছেন, ওই সম্পত্তি তার পূর্ব পুরুষের। তবে, সরকারি নথিতে জমিটি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার (জার) নামের একটি সংস্থাকে লিজ দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। সংস্থাটির নামে ১৯৯৮ সালে ১০ একর জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেয় সরকার। জমিটির পাঁচ একর মানিক দখল করে নির্মাণ করেন ওই স্থাপনা।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে জাল নথি তৈরি করে পাঁচ একর জমি পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে দেখান বিচারপতি মানিক। পরে সেখানে নিজস্ব ডেভেলপার দিয়ে সাতটি বহুতল ভবন নির্মাণ করেন। যার মূল্য প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে সরকারি বাড়িতে থেকে ভাড়া না দেওয়া এবং অর্থপাচার করে লন্ডনে বাড়ি কেনারও অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নথিপত্র সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তার (বিচারপতি মানিক) বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, সরকারি বাসায় থেকেও ভাড়া না দেওয়া এবং বিদেশে অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুসন্ধানে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছেন। অনুসন্ধান শেষে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে জাল নথি তৈরি করে পাঁচ একর জমি পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে দেখান বিচারপতি মানিক। পরে সেখানে নিজস্ব ডেভেলপার দিয়ে সাতটি বহুতল ভবন নির্মাণ করেন। যার মূল্য প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে সরকারি বাড়িতে থেকে ভাড়া না দেওয়া এবং অর্থপাচার করে লন্ডনে বাড়ি কেনারও অভিযোগ রয়েছে
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দুস্থ ও অসহায় সাংবাদিকদের পুনর্বাসনের জন্য জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার (জার) নামে একটি সংস্থাকে ঢাকার বারিধারায় ১০ একর জমি লিজ দেয় সরকার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের প্রভাব খাটিয়ে ওই জমির পাঁচ একর দখলে নেন। দখল করার সময় ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিজের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করেন মানিক। এরপর অ্যাডভান্স ডেভেলপমেন্ট নামের একটি কোম্পানিকে দিয়ে সেখানে তৈরি করেন আটতলাবিশিষ্ট সাতটি ভবন। যেখানে রয়েছে শতাধিক ফ্ল্যাট।
যদিও সরকারি নথিপত্রে জমির আদি-মালিকানা ১৮৮৫ সাল থেকে আইন উদ্দিন হায়দার ও ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ এস্টেটের। যা ২০০৪ সালে জমিটি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ারকে (জার) ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়। যখন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তখন সেটি ডোবা ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই জমির পাঁচ একর বিচারপতি মানিক জোরপূর্বক দখল করে নেন। তিনি ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে জমিটি দখল করেন। কেউ কোনো অভিযোগ দিলে তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তার (বিচারপতি মানিক) বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, সরকারি বাসায় থেকেও ভাড়া না দেওয়া এবং বিদেশে অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুসন্ধানে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছেন। অনুসন্ধান শেষে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ২০১২ সালে শামসুদ্দিন মানিক লন্ডনে তিনটি বাড়ি ক্রয় করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সেখানে নিজের ও পরিবারের নামে আরও সম্পত্তি আছে বলে জানা গেছে।
বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে সরকারি বাড়ির ভাড়া পরিশোধ না করারও অভিযোগ আছে। ওই অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ২১ আগস্ট সাজ্জাদ হোসেন ও রওশন আলী নামের দুই আইনজীবী দুদকে নোটিশ দেন।
নোটিশ সূত্রে জানা যায়, সরকারি বাড়িতে থাকাকালে সাবেক বিচারপতি মানিক ভাড়া, গ্যাস ও পানির বিল দেননি। বাড়িভাড়াসহ এসব বিলবাবদ সরকারের পাওনা ১৪ লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকা। ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থাকাকালে ঢাকার গুলশানে সরকারি বাড়িতে ওঠেন মানিক। অবসরের পর ২০১৬ সালে বাড়িটি তার ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাড়িটি সে সময় না ছেড়ে আরও দুই বছর থাকবেন জানিয়ে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরকে চিঠি দেন মানিক। আবাসন পরিদপ্তর তখন তাকে ছয় মাস থাকার অনুমতি দিলেও তিনি এক বছরের বেশি সময় ওই বাড়িতে থাকেন। সে সময় বাড়িভাড়া থেকে শুরু করে গ্যাস, পানির বিল কোনো কিছুই পরিশোধ করেননি সাবেক বিচারপতি মানিক। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাড়িটি ছাড়ার জন্য বারবার তাগাদা দিলে একপর্যায়ে ২০১৭ সালের মে মাসে বাড়িটির দখল ছাড়েন তিনি।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিমানের মাসিক বিক্রয় ৯০০ কোটি টাকা ছাড়ালো
ফরিদপুরের বাড়িতে এসে পৌঁছেছে মামা-ভাগ্নের লাশ
সিরাজদিখানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৩ জন টেটা বৃদ্ধ, আহত ১০
হাসিনাকে কি বাংলাদেশে নির্বাসিত করা হবে?
জকিগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের সেবা সহজীকরণ অনুষ্ঠান
লাকসামে বিএনপির আজিম-কালাম গ্রুপ মুখোমুখি: ককটেল বিস্ফোরণ, অস্ত্রের মহড়া
ভুয়া পেইজে ঢাবি প্রশাসনসহ অনেকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, এডমিন ঢাবি ছাত্রদল নেতা
ইটনায় বিএনপির স্বাধীনতার বিজয় উৎসবে নেতাকর্মী ও জনতার ঢল এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে বিএনপি ৯০ শতাংশ ভোট পাবে: ফজলুর রহমান
ব্যান্ড সঙ্গীত ও বাইকপ্রেমীদের জন্য সুজুকি ও আর্টসেলের নতুন মিউজিক ভিডিও
বিএনপি সকল ধর্ম -বর্ণ-গোত্রের দল : প্রিন্স
বিয়ের করার সময় যে সমস্ত খেয়াল রাখা প্রসঙ্গে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ভারত
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
`আগামী নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে'
সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ২৬ নারী-পুরুষ ও শিশু
লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন গ্রেফতার
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল
দূর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে: মেজর হাফিজ