দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনী তারিখ ঘোষণা করতে হবে
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশের সকল স্তর ও সকল ধারার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের অবসানের পর গণমানুষের বিপুল আশা-আকাঙ্খা ও সমর্থন নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের একশত দিনের কার্যক্রম পূর্ণ হয়েছে। অন্তর্বর্তী কালীন সরকার জনতার, জনতাই এই সরকারের শক্তি ও এই সরকারের দর্পন।
স্বৈরাচারী ব্যবস্থার স্থায়ী বিলোপ নিশ্চিত করতে এই সরকারকে সফল হতেই হবে। আর সেজন্য দরকার তাদের কাজের নির্মোহ পর্যালোচনা। যা তাদের ভালো কাজে উৎসাহ দেবে, ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করবে। তিনি বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকে এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, এই সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিগণও বারংবার তাদের কর্মকা-ের নির্মোহ পর্যালোচনা করার আহবান করেছেন। সেই আহবানে সাড়া দিতে এবং জনতার বোঝাপড়া মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করছি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জুলাই-২৪ অভ্যুত্থানে জীবন দেওয়া ও আহত হওয়া সকল বিপ্লবীদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও দোয়া জ্ঞাপন করেন এবং অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তিনি।
আজ শনিবার দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের একশত দিনের কার্যক্রম ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই লিখিত বক্তব্য রাখছিলেন। দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, মাওলানা নুরুল করীম আকরাম।
লিখিত বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই স্বৈরশাসনে পিষ্ট ও বিপর্যস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব নেয়ার সাহস করার জন্য এই সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ক্রমাবনতির দিকে ধাবমান অর্থনীতি, রাজনীতি ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতির বিপর্যয় রোধ করা, মানুষের মনে আশার সঞ্চার করা, বৈশ্বিক পরিম-লে আস্থা তৈরি করা, ব্যাংক খাতের নৈরাজ্য দুর করা, রিজার্ভের পতন রোধ করাসহ অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় প্রবাহিত করা, স্বৈরশাসনের হোতাদের একাংশকে আটক করে বিচার কার্যক্রম শুরু করা, প্রশাসনে ধীরগতিতে হলেও শুদ্ধি অভিযান চালানো, সংস্কার কমিশনগঠন করা, বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর কার্যক্রম শুরু করা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে জুলাই হত্যাকা-ের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ১৫ বছরের সামগ্রিক স্বৈরাশাসন সৃষ্ট ধ্বংসস্তুুপের ওপরে দাঁড়িয়ে মানুষের বিপুল-বিশাল প্রত্যাশা পূরণ করা কঠিন, এটা সত্য। সেই দায়িত্ব এই সরকার নিয়েছে সেজন্য সাধুবাদ। সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে চাইনা। তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে চাই না। তথাপিও কিছু বিষয় আছে যা পর্যালোচনা করা আবশ্যক মনে করছি। আমরা এই সরকারকে আবারো মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আপনাদের সফল হওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প আমাদের সামনে নেই। এই বোধ থেকেই এখানে কিছু বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে, যাতে করে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে আপনারা শতভাগ সফল হতে পারেন। গত পনের বছরে বিগত পতিত সরকার জনপ্রশাসনের সকল স্তরে যেভাবে দলীয়করণ করেছে, তাতে জনপ্রশাসনের পুরোটাই আওয়ামী দলীয় ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। সেই বাস্তবতায় সরকারের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন তা আমরা বুঝতে পারি। তারপরেও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, একশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও রাষ্ট্রের ওপরে অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রন স্পষ্ট না। বরং দুর্বলতা স্পষ্ট। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীনতা, পোশাক খাতে অরাজকতা, ঢাকায় সেনাবাহিনীর যানবহনে হামলা, পুলিশ বাহিনী সক্রিয় না হওয়া, ট্রাফিক ব্যবস্থা কার্যকর না হওয়াসহ অধিকাংশ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতা জাতির আশাকে ম্লান করে দিচ্ছে।
জনপ্রশাসন দীর্ঘদিনের চর্চা ও অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা রীতি ও জ্ঞানে পরিচালিত হয়। কিন্তু এটা এমন কোন জটিল টেকনোলজি নয় যে, নির্দিষ্ট কিছু প্রশিক্ষিত লোক ছাড়া আর কেউ বুঝবে না বা চালাতে পারবে না। তাইআমরা সরকারকে পরামর্শ দেবো যে, এখনো যারা আপনাদের নেতৃত্ব মেনে নিতে দ্বিধা করছে বা স্বৈরাচারের পদলেহন করছে তাদের ব্যাপারে শক্ত হোন। তাদেরকে ছুড়ে ফেলুন। ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে প্রশাসন পরিচালনায় দক্ষ হাজারো দেশপ্রেমিক মানুষ দেশে ও বিদেশে আছেন। তাদেরকে দায়িত্ব দিন। এবং জনপ্রশাসনকে সক্রিয় করে রাষ্ট্রের সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ ষ্পষ্ট করুন। নিয়োগের ক্ষেত্রে দোদুল্যমানতা পরিহার করতে হবে। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করেছি যে, বিগত একশ দিনে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের মধ্যে দোদুল্যমানতা লক্ষনীয়। নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে পরে তা স্থগিত করা হচ্ছে, বাতিল করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ব্যাখ্যা দিয়েছেন, এটা তার ভালো দিক যে, ভুল হলে তা শুধরে নিচ্ছেন। ভুল হলে তার ওপরে গোয়ার্তুমি না করে শুধরে নেয়া প্রশংসনীয় কিন্তু বারংবার ভুল হওয়া বাঞ্চনীয় না। এতে করে নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রকাশ পায়।সেজন্য বলবো, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দক্ষতা আনুন, প্রজ্ঞাপনের আগে নানা পক্ষের সাথে আলাপ করুন, তথ্য যাচাই যথাযথ করুন। নতুন উপদেষ্টাসহ সকল নিয়োগে সচ্ছতা আনুন।
সুশাসন সংক্রান্ত সচ্ছতার সংজ্ঞায় সিদ্ধান্ত যাদের প্রভাবিত করে তাদের কাছে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত সকল তথ্যের অবাধ ও সরাসরি প্রবাহ থাকার কথা বলা আছে। এর মানে হলো, কাউকে কেন কোন বিবেচনায় নিয়োগ করা হচ্ছে, তা জনগণের জানা থাকা উচিৎ। বিগত একশ দিনের বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে বিগত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী হওয়া ও জনমানুষের বোধ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। আবার কারো ব্যাপারে বিপ্লবে তেমন কোন অবদান না থাকা সত্বেও বড় পদে পদায়িত করার অভিযোগ আছে। এগুলো মানুষকেক্ষুদ্ধ করে, আপনাদের বিবেচনাবোধ ও বিপ্লবের প্রতি আপনাদেরদায়বোধ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে। আমাদের পরামর্শ হলো, যে কোন নিয়োগে দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে সাথে বিপ্লবে তার ভূমিকা প্রধান বিবেচ্য হিসেবে ধার্য করুন এবং প্রতিটি নিয়োগের যুক্তি জনতার সামনে উপস্থাপন করুন।
বিশেষ করে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চরম বিতর্কিত উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে জনগণ মেনে নেয়নি। পতিত স্বৈরাচারের বেনিফিশিয়ারী বিকৃত মানসিকতার সমাজ বিধ্বংসী নাটক-সিনেমা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদ থেকে প্রত্যাহার করা হোক তা দেশবাসী প্রত্যাশা করে। এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রসংস্কার করা; যাতে করে আর কখনোই কোন স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে। সেজন্য সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে,এজন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এখন এই কমিশনগুলোকে গতিশীল করুন।
রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করুন। কারণ, তারাই দীর্ঘমেয়াদে জনমত ধারণ করেছে এবং আগামীতেও করবে। তাই সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক দল, উলামা শ্রেণী এবং বিভিন্ন পেশা ও স্তরের জনমানুষকে সম্পৃক্ত করুন। সংস্কার নিয়ে ইতোমধ্যেই মানুষের মধ্যে কানাঘুষা তৈরি হয়েছে। এই কানাঘুষা সংস্কারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। সাধারণ মানুষ জটিল রাজনীতি বোঝে না। তারা তাদের খাদ্যের নিশ্চয়তা চায়, জীবনের নিরাপত্তা চায়। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রেই জনতার অভিজ্ঞতা ভালো না। দ্রব্যমূল্য বহু আগেই নাগালের বাইরে চলে গেছে। সংসার চালাতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে আরো আগে থেকেই। স্বৈরাচারের পতনের পরে মানুষ ভালো কিছু আশা করেছিলো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোন কোন ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে। এটা মানুষকে হতাশ করেছে। সেজন্য বলবো, যে কোন মূল্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন। শক্তহাতে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিন, বাজার কারসাজি দমনে শক্ত হোন। মনে রাখবেন এই দ্রব্যমূল্যই আপনাদের প্রতি জনসমর্থন কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পতিত হাসিনা সরকার জাতির সাথে যা করেছে তার বিচার না হলে মানবতার সাথে অপরাধ করা হবে। কিন্তু এই বিষয়ে তেমন কার্যকর কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আপনাদের সরকার গঠন হওয়ার পরেও ফ্যাসিস্ট রিজিমের মন্ত্রী, এমপি, দালাল পাবলিক সার্ভেন্ট, এলাকার নেতা, পাতি নেতা, মাস্তানদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালানোর, সুযোগ পেয়েছে। অনেকে দেশেই আত্মগোপনে থেকে জনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কেন তাদের পালানোর সুযোগ দেয়া হলো, কেন দেশে থাকা অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে না, এই প্রশ্ন কোটি জনতার। আমরাও এই প্রশ্ন জোড়ালোভাবে উপস্থাপন করছি। বিনয় ও হুশিয়ারির সুরে বলছি যে, কোন ধরণের দয়া-আপোষ করা ছাড়াই স্বৈরাচারের বিচার করুন। যারা বিগত ১৫টি বছর ধরে জনগণের অর্থ লুটে খেয়েছে, যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনুন। এক্ষেত্রে কোন অবহেলা বা আপোষ দেশবাসী কোন দিন ক্ষমা করবে না। এ প্রসঙ্গে কোন কোন বড় রাজনৈতিক দলের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ।
তাদের শীর্ষ নেতারা মানবতা বিরোধী, খুনী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন নিষিদ্ধের বিরোধিতা করছেন, যে মুজিবকে দেবতা বানিয়ে স্বৈরশাসনকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে সেই মুজিবের ছবির প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাচ্ছেন, কেউ আবার খুনি ব্যক্তি ও ব্যবস্থাকে ক্ষমা করে দিচ্ছেন, তাদেরকে ফ্যাসিস্ট বলায় অনিহা প্রকাশ করছেন। তাদের এই অতি উদারতা, অতিরাজনীতি বা অতি সুশীলপনার নিন্দা জানাচ্ছি। কোন খুনিকে ক্ষমা করার অধিকার একমাত্র নিহত ব্যক্তির অভিভাবকের। চোরকে চোর বলাই ইনসাফ। ফ্যাসিস্টকে ফ্যাসিস্ট বলাই ইনসাফ। ভবিষ্যত রাজনীতির ধান্ধা বা বৈদেশিক কোন শক্তিকে খুশি করার জন্য যারা জনতার রক্তকে অবহেলা করবে তারাও খুনি ও ফ্যাসিস্টের পুনর্বাসনের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবেন। লিখিত বক্তব্যে পীর সাহেব আরও বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তা হলো বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। আমরা বুঝতে পারি না যে, এ ক্ষেত্রে দুরাবস্থার কারণ কি? কেন চিকিৎসার জন্য তাদেরকে আন্দোলন করতে হবে? যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা করার সামর্থ কি রাষ্ট্রের নাই? অবশ্যই আছে। কিন্তু কেবলই অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার কারণে অভ্যুত্থানের প্রধান নায়কদের এখনো ক্ষত নিয়ে সংগ্রাম করতে হচ্ছে, এরচেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে?
এই অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতা খুবই আপত্তিজনক যা সহ্য করার মতো না। এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান জনতার মনে এই প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে যে, সরকার কি বিপ্লবে আহতদের অবহেলা করার মাধ্যমে বিপ্লবকেই অবহেলা করছে? আমরা পরামর্শ দিচ্ছি, কোন ধরণের অজুহাত ছাড়াই আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করুন। তিনি বলেন, আজকের সংবাদ সম্মেলনে একটা অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ তুলতেই হচ্ছে। বিগত স্বৈরাচার আমলে বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা যে ধরণের নীপিড়নের শিকার হয়েছে তা অবর্ণনীয়। স্বৈরাচারের পতনের পরে সবারই প্রত্যাশা ছিলো যে, আর যাই হোক আগামীতে যেনো আর কোন স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে সেই বন্দোবস্ত নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু অস্বস্তির সাথে আমরা লক্ষ করছি যে, বিএনপির নেতৃবৃন্দ সংস্কারের চেয়ে নির্বাচনকে বেশি প্রধান্য দিচ্ছেন এবং নির্বাচনকেই মূখ্য করে তুলছেন। এমনকি সংস্কার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলে রাখছেন। “তারাই ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবেন” মর্মে ঘোষণা দিচ্ছেন।
এখানে প্রথম কথা হলো, তারাই আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাচ্ছেন, সেই নিশ্চয়তা তারা কোথায় পেলেন? আবার তারা ক্ষমতায় গেলেও জনতার কাংখিত সংস্কার করবেন তার নিশ্চয়তা কি? বিগত ১/১১ এর সরকার এবং তাদের হাত ধরে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের জন্মের সূচনা কি বিএনপির ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপপ্রয়াসের ফসল নয়?
বিএনপির ইতিহাস কি তাদের ওপরে আস্থা রাখার মতো ভরসা দেয়? দেয় না। সেজন্যই আমরা আগে সংস্কার, আগে স্বৈরাচারের উত্থানরোধে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন তারপরে নির্বাচন আয়োজনের আলাপ তোলার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, বিপ্লবে অংশ নেয়া সকল রাজনৈতিক দল এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়ে “জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ” গঠন করা প্রয়োজন। কারণ সংবিধানসহ রাষ্ট্রীয় নানা ক্ষেত্রে সংস্কার, বৈদেশিক সম্পর্ক নির্মাণ, স্বৈরতন্ত্রের সাথে জড়িতদের বিচারসহ জাতির সামনে করণীয় কাজের গুরুত্ব বিবেচনায় একটি সাধারণ রাজনৈতিক ঐক্যমত জরুরী। আর সেজন্য বিদ্যমান আইনের আওতায় বিপ্লবের অংশীদারদের সমন্বয়ে “জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ” গঠন করা যেতে পারে। যা বহু জটিলতা থেকে উদ্ধার করবে এবং জরুরী বিষয়গুলোতে সাধারণ ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা সহজ হবে। আজকের সম্মেলন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি নির্বাচনী পরিকল্পনা ঘোষণার দাবী জানাচ্ছি। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। কারণ অনিশ্চয়তা ও শুণ্যতা নানা ধরণের জটিলতা ও অপলাপের জন্ম দেয়। তা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সুষ্ঠু ও অবাধ পরিস্থিতি তৈরিতে করণীয় নির্ধারণ, তার জন্য সময়সীমা ঠিক করে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ঘোষণা করা হলে সকলের জন্য কাজ করা সহজ হবে।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ঘুরে দাঁড়িয়ে মালদ্বীপকে হারাল বাংলাদেশ
জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানে শহীদদের নামে উপজেলা পর্যায় হবে স্টেডিয়াম
আজ রবিবার নগরীতে অর্ধবেলা হরতালের সমর্থনে মিছিল
পুলিশকে জনগণের বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে: আইজিপি
৫ আগস্টের বিজয়ে তারেক রহমান পনেরো বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন
বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে খেলাধুলার সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে - মেজর হাফিজ।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ‘ধর্মযুদ্ধে’ নামতে বললেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী
সরিষাবাড়ীতে বিএনপির বিশাল জনসভা - দেশপ্রেমের আহ্বান শামীম তালুকদারের
চীনে বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৭
ঘোষণা করা হয়েছে মেলন মিউজিক অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ - এর মনোনীতদের নাম
চবি ইসলামী ছাত্রশিবিরের আয়েজনে 'ফ্রেশার রিসিপশন এন্ড ক্যারিয়ার' গাইডলাইন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত
ইসলামী ঐক্য গড়ে তুলতে ঐক্যমত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন
মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীকে মুক্তহস্ত দিল মোদি সরকার
যত দ্রুত সম্ভব আমরা বন্ধ চিনিকল চালু করার চেষ্টা করছি-পঞ্চগড়ে শিল্প উপদেষ্টা
সুমি অঞ্চলে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে ইউক্রেনীয় সেনা: কাদিরভ
অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে পদচিহ্ন রেখে যেতে চায় : অর্থ উপদেষ্টা
হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টা ও সাজাপ্রাপ্তসহ চার আসামি আটক
যত দ্রুত সম্ভব আমরা চিনিকল চালুর চেষ্টা করছি-পঞ্চগড়ে শিল্প উপদেষ্টা
উপদেষ্টা হাসনাত আবদুল্লাহ'র স্ট্যাটাসে সুরা লাহাব, নেটিজেনদের প্রশংসা
দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অচিরেই নির্বাচন দরকার: রিজভী