ঢাকার বায়ু দূষণ বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক

১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৯ পিএম | আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৯ পিএম

ঢাকার বায়ু দূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) জনস্বার্থে ২০১৯ সালে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। উক্ত রিট পিটিশন শুনানি শেষে আদালত বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করে শহর ও তার আশেপাশের এলাকার বায়ু দূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন এবং একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে বলেন। পরবর্তীতে উক্ত বিষয় নিয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, এইচআরপিবি’র পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে আদালত ৯ দফা নির্দেশনা জারি করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রদান করেন।

নির্দেশনাগুলি হল- ১. ঢাকা শহরে মাটি /বালি/বর্জ্য পরিবহনকারী ট্টাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; ২. নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালি/সিমেন্ট /পাথর/ নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখা; ৩. সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক রাস্তায় পানি ছিটানো; ৪. রাস্তা /কালভার্ট/কার্পেটিং/ খোড়াখুড়ি কাজে টেন্ডারের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; ৫. কালো ধোয়া বিঃসরণকৃত গাড়ি জব্দ করা; ৬. সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ হওয়ার সময়সীমার পরে উক্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; ৭. অবৈধ ইটভাটাগুলি বন্ধ করা; ৮. পরিবেশ লাইসেন্স ব্যতীত চলমান সকল টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা ও ৯. মার্কেট/দোকানগুলিতে প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগ ভরে রাখা এবং অপসারণ নিশ্চিত করতে সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ গ্রহন করা।

আদালতের এমন নির্দেশনা থাকার পরেও কর্তৃপক্ষ অতিসামান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করায় এবং অধিকাংশ নির্দেশনা পালন না করায় সম্প্রতি ঢাকা শহর বায়ু দূষণের বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে এতে ঢাকার বায়ু দূষণের মাত্রা কিছুটা কমে এবং পরবর্তীতে নির্দেশনাগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়ায় ঢাকা শহর আবারো বায়ু দূষণের শীর্ষ শহরে পরিণত হয়েছে মর্মে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

উক্ত প্রতিবেদন এইচআরপিবি’র নজরে আসলে, আদালতের নির্দেশনা ও বাস্তবায়ন চেয়ে একটি আবেদন করা হয়। উক্ত আবেদনটি আজ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর আদালতে শুনানি হয়। আদালত বর্তমানের বায়ু দূষণের পরিস্থিতি এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেন। এছাড়াও, শুনানি শেষে আদালত আদেশ প্রদান করেন যে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিবাদীগণ বায়ু দূষণ বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়িত করে আগামি ২৬.০১.২০২৫ তারিখে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।

শুনানিতে রিটকারী এইচআরপিবি’র কৌশলী সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন যে, উক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বায়ু দূষণের মাত্রা কিছুটা কমলেও পরবর্তীতে আর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ঢাকা শহর আবারও বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ঢাকা শহর বায়ু দূষণের বিশ্বের এক নম্বর স্থান অধিকার করেছে। বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধিতে মানুষের জনজীবনের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যের ব্যাপক হানি ঘটছে। শুরু তাই নয়, দূষণের কারণে শতশত মানুষ শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে।

এইচআরপিবি’র পক্ষে আবেদনকারী হলেন এডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী এবং উক্ত রিট পিটিশনের বিবাদীরা হলেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ মোট ১১ জন। এইচআরপিবি’র পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডিএজি মো. তানিম খান।

বিভাগ : মহানগর