উত্তরা এখন কিশোর গ্যাং-ছিনতাইকারীর আখড়া
১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম
ছিনতাই আতংকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে উত্তরাবাসী। কখনো কিশোর গ্যাং কখনো অজ্ঞান পাটি আবার কখনো মলম পার্টি, টানা পার্টি ও ছিনতাইকারী বিভিন্ন নামের মাদকাশক্ত এই চক্রটি উত্তরায় ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ছিনতাইকারীর আখড়া হয়ে উঠেছে বৃহত্তর উত্তরা। সুস্থ শরীর নিয়ে বাসা বাড়িতে থেকে বের হয়ে কর্মজীবিরা কাজ শেষে নিরাপদে বাসায় ফিরে যেতে পারবে কিনা এনিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ছিনতাই রোধে বিশেষ অভিযানের ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করেছে। কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে উত্তরার পুলিশ প্রশাসনের সাঁড়াশি ভুমিকা না থাকায় এখানকার পেশাদার ছিনতাইকারীরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে একাধিক সুত্রে জানা যায়, ৫ আগষ্টের পর থেকে উত্তরাতে চুরি, ছিনতাই, টানাপাটি,মলমপার্টিও চাঁদবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে।
এ সময় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দগণ বলেন,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোড়ালো ভূমিকা না থাকায় অপরাধ চক্র বেড়ে গিয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে রাতের উত্তরা। গত ৯ ই জানুয়ারি উত্তরা পূর্ব থানা হাজত থেকে হত্যা মামলার আসামি পালিয়ে যাওয়ার পুলিশের দায়িত্বের প্রতি মানুষের মাঝে আরো বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তারা বলছে, যেখানে থানা হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যায়, সেখানে জনগণের জান-মাল কি ভাবে রক্ষা করবে তারা। এ সময় স্থানীয় লোকজন আরো বলেন, সারা দেশের ন্যায় উত্তরা এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে, এর পরও জুলাই- আগষ্ট গণ-অভ্যুত্থানের ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও কেন পুলিশের মাঝে এখনো হতাশা ও আতংক কাটেনি। এ সময় তারা আরো বলেন,পেশাদারিত্বে পুলিশকে আরো বেশি মানবিক হইতে হবে। ভালো কাজের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। জনগণের জান-মাল উদ্ধারে তাদেরকে সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উত্তরার কয়েকটি থানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওসি (তদন্ত) দেখাই মিলে না। এ সময় ভুক্তভুগিরা বলেন,তারা কখন আসে কখন যায় আল্লাহই ভালো জানেন। সরকারের বেতন ভাতার সুবিধা নিয়ে তারা বাসা বাড়িতে অলস সময় পার করছেন। অপরদিকে তারা জনবলের দোহাই দিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কাজে নিঃস্কৃয় থাকার কারণে সামাজিক ভাবে বাংলাদেশ পুলিশের ও ইমেজ নষ্ট হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা যায়, এখানকার বেশির ভাগ ছিনতাইকারী,টানাপার্টি, ছোঁ-পার্টির টার্গেট দূরপাল্লার বাসের যাত্রী। জানা যায়, গত শুক্রবার মোঃ জাকারিয়া হাওলাদার নামের এক ব্যাক্তি গ্রাম থেকে এসে তুরাগ ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল হাসপাতালের সামনে গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে ছিনতাইকারীর কবলে পরে। এ সময় ছোঁ-মেরে ছিনতাইকারী চক্র তার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এ ছাড়াও তাদের টার্গেট হাসপাতালে যাওয়া আশা রূগির স্বজন রেস্টুরেন্টের কাস্টমার,বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারী। তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কিশোর গ্যাং- টানাপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের হাতে মোবাইল মানিব্যাগসহ সর্বস্ব হারাচ্ছেন পথচারীরা। তাদের হাতে প্রতিনিয়ত নাজেহাল হচ্ছে পেশাদার অনেক সংবাদকর্মী।
এখানকার কয়েকজন শিক্ষক বলেন, সুস্থ অবস্থায় ঘর থেকে বের হয়ে ভালো ভাবে ঘরে ফিরতে পারবে কি না এ নিয়ে শঙ্কায় থাকে তাদের পরিবারের লোকজন। এ সব অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় এখানকার মানুষের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। জানা যায়, রাতের সড়কে পুলিশ টহল না থাকায় গত কয়েক মাস যাবত রাতের উত্তরা এতোটাই ভয়ংকর হয়ে উঠেছে রাত-দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হয়। ৫ই আগষ্ট ২৪ এর পর থেকে গত কয়েক মাসে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে উত্তরায় নিহত ২ এবং আহত প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ।
পথচারীরা বলেন, ছিনতাইকারীদের সুইস গিয়ার চাকুর আঘাতে এদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে নিতে পুঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এলোপাথারী ছুরিকাঘাতে কারো কারো শরীরে দেখা যায় ২০-২৫টি সেলাই দিতে হয়েছে।এসব ঘটনায় কোন কোন ক্ষেত্রে থানায় মামলা হলেও আসামি গ্রেফতারে রয়েছে তাদের নানান তালবাহানা উত্তরাতে অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উত্তরা বিভাগের উপ- পুলিশ কমিশনার রওনক জাহান ইনকিলাবকে বলেন, উত্তরাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ছিনতাইয়ের হটস্পট এলাকা গুলোতে আমরা হুন্ডা এবং পেট্রোল ডিউটি বাড়িয়ে দিয়েছি। স্থানীয়রা বলেন,জনবলের দোহাই দিয়ে অ্যানালগ পদ্ধতিতে চলছে উত্তরা বিভাগের থানা পুলিশের কার্যক্রম।
উত্তরার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা বলেন, পুলিশের নজরদারি ও পর্যাপ্ত টহল না থাকায় সম্প্রতি উত্তরার বিভিন্ন সড়কে রাতের বেলায় কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়েছে।এসময় উত্তরার কয়েকজন দোকানদার বলেন,থানার আশপাশের সুরক্ষিত জায়গা গুলোতে অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় মানুষের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ছিনতাইকারীদের হটস্পট নিয়ে গণমাধ্যমে লেখা লেখি হলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে তাদের আনা গোনা ও বিভিন্ন অপকর্ম। কিশোর গ্যাং সদস্যদের কথায় কথায় মারা মারি ও খুনা খুনির ঘটনায় অস্থির এখানকার জনজীবন। রাতের বেলায় চলাচলে পথচারীরা সারাক্ষণ ভয় আতংকে থাকে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র- জনতার তোপের মুখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও প্রশাসনের অনেক জায়গায় ঘাপটি মেরে রয়েছে। ছাত্র- জনতার উপর নির্বিচারে গুলির চালানো পুলিশ সদস্যরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। এর ফলে বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের কাঙ্খিত আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারছে না। তারা জনগণের রক্ত চোষা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানুষের রক্ত খেয়ে যে ভাবে আয়েসি জীবন যাপন করছে সেটি এখনো তারা ভুলতে পারেননি। এদের মধ্যে অনেকেই নাগরিক সেবার পরিবর্তে নিজেদের আখের গোঁছাতেই বেশি ব্যস্ত রয়েছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দগণ জানান, উত্তরার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব হাসান, আলাউদ্দিন সোহেল, সাবেক কাউন্সিলর আফসার খান, যুবরাজ,গোল্ডেন সফি,নাঈম বেপারী ও আফসার খানের ভাতিজা প্রান্তের ছত্র ছায়ায় থাকা এ সব মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যরাই এখনো উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও মারা মারির সাথে জড়িত। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত ছিনতাই ঘটনায় উত্তরাবাসীর মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকের ধারণা প্রশাসনের লোকজন এখনও কিশোর গ্যাং সদস্য ও ছিনতাইকারীকে লালন পালন করে। পাশাপাশি তাদেরকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে এখানকার লাগামহীন কিশোর গ্যাং সদস্য ও ছিনতাইকারীরা দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আবার অনেকে বলছেন, ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত ভুমিকা পালনকারী পুলিশ সদস্যরা কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। তাদের মাঝে এখনো অজানা ভয় কাজ করছে। কেউ কেউ বলছেন,উত্তরার থানা গুলোতে ফ্যাসিস্ট হাসিনার যে সকল দোসর তদবির করে জয়েন্ট করেছে তারা এখনো নিজেদের আখের গুছাতে সাধারণ মানুষকে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপর দিকে অর্থনৈতিক সুবিধা না পেলে রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠায়।
জানা যায়, কখনো নাম্বার বিহীন মোটর সাইকেল আবার কখনো কখনো প্রাইভেট কার যোগে তারা ছোঁ মেরে মোবাইল, ব্যানেটিবেগ সহ পথচারীদের হাতে থাকা মূল্যবান জিনিস পত্র নিয়ে যায়। গত ১৭/১২/২০২৪ ইং তারিখ একরাতে শুধু মাত্র উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় ১২ জন ছিনতাইয়ের স্বীকার হয়েছে। এ সময় তারা দামী মোবাইল,পাসপোর্ট ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারিয়ে বিপাকে পড়ে।
পথচারীরা তাদের দামী মোবাইল ও জরুরি জিনিস পত্র হারিয়ে কয়েকজন উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি ও অভিযোগ করেন। অভিযোগের ১৫/২০ দিন অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশ এখনো পর্যন্ত তাদের ছিনতাই হওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করতে পারে নি। এ সময় কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়,থানা পুলিশ তাদের মোবাইল ও মালামাল উদ্ধারে কোন প্রকার সহযোগিতা করছে না৷
ছিনতাইয়ের স্বীকার আনিসুল হক আনসারি বলেন,গত ১৭/১২/২০২৪ইং তারিখ ভোর ৬.১৫ মিনিটের সময় বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার পথে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সিঙ্গার মোড় থেকে ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেলে পিছন থেকে এসে ছোঁ- মেরে তার হাতে থাকা স্যামসাং গ্যালাক্সি এস-২৩ আলট্রা মোবাইল সেটটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এ ঘটনায় তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় ওই দিন বিকালে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি আরো বলেন, মোবাইল হারানোর ঘটনায় জিডি করার ২৩-২৪ দিন হয়ে গেলেও এখনো তার মোবাইলটি উদ্ধার হয় নি। একাধীক সুত্রে জানা যায়, গত ১৭/১২/২০১৪ইং তারিখ সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত উত্তরা পশ্চিম থানার জমজম টাওয়ার থেকে মাসকট প্লাজা ও বিএনএস সেন্টার এলাকায় প্রায় ১৫ টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে এ সময় ছিনতাইকারীদের হাতে মোবাইলসেট সহ টাকা পয়সা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেকে। ভুক্তভোগীরা বলেন কখনো নাম্বার বিহীন মোটর সাইকেল আবার কখনো কখনো প্রাইভেট কার যোগে এসে তারা রিকশার গতিরোধ করে ধারালো ছুরি ও সুইস গিয়ার চাক্কু দিয়ে ফাঁর দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগীরা আরো বলেন,উত্তরা পশ্চিম ও পূর্ব থানা এলাকায় ভিআইপি লোকজনের বসবাসের কারণে এখানকার প্রতিটি সড়কে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এই দুটি থানার প্রায় পুরো এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকার পর ও কি ভাবে প্রতিদিন সকাল বিকাল রাতে প্রশাসনের নাগের ডগায় চুরি ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপকর্ম চলছে।
এ বিষয়ে ডিএমপি উত্তরা বিভাগে পর পর দুইবার শ্রেষ্ঠ ওসি পুরস্কার প্রাপ্ত উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন,গত ২৫/০৮/২০২৪ সাল থেকে ১৯/১২/২০২৪ইং পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী ও চুরি ছিনতাই ঘটনায় তার থানায় ৯ টি মামলা হয়েছে। এ সব মামলায় প্রায় ৫০ জনের ও বেশী আসামি ও শতাধিক অজ্ঞাত নামা ব্যাক্তি রয়েছে। আসামি গ্রেফতার করে আদালতে চালান করা ছাড়াও মালামাল উদ্ধার করে ভুক্তভোগীকে সহায়তা করছেন তারা।
ছিনতাই প্রতিরোধে করণীয় জানতে চাইলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাং নামধারী বিপদগামী যুব সমাজকে নির্মুল করতে পুলিশিং কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এ কাজে মোবাইল কোর্টের বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, ছিনতাইকারী গ্রেফতারের পর আমরা দেখি এক একজনরে নামে ১০/১৫ মামলা রয়েছে। মাদকাসক্ত তরুণ কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী চক্র একই ব্যাক্তি।
গ্রেফতারের পর তাদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজার মেয়াদ বাড়ীয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ পেলে টানা পাটি, অজ্ঞান পাটি, ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেফতার করে কোর্টে চালান দেই, তারা আদালত থেকে জামিনে এসে আবারও চুরি ছিনতাই শুরু করে দেয়। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি হাফিজ ইনকিলাবকে আরো বলেন, আমাদের এখানে মোবাইল কোর্টের সাপোর্ট নাই বিধায় আমরা স্বাভাবিক নিয়মে গ্রেফতারকৃত আসামি আদালতে প্রেরণ করি।
এ বিষয়ে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ রাহাত খান বলেন, ছিনতাই প্রতিরোধে প্রথমেই প্রফেশনাল পুলিশিং সিস্টেম প্রয়োজন। পোশাক পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশের কার্যক্রম বাড়াতে হবে।এ ছাড়াও ঢাকা সিটিতে প্রবেশের পর প্রতিটি নাগরীকের ভাড়াটিয়া তথ্য থানায় রাখতে হবে। চলমান এ প্রক্রিয়ার গতি আরো বাড়াতে হবে। প্রতিটি থানার প্রতিটি বিটে বাড়ীওয়ালা ও ভাড়াটিয়া নিবন্ধন তথ্য রাখতে হবে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেশীর ভাগ ছিনতাইকারী মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা জোগার করতে তারা চুরি ছিনতাই করে থাকে । তিনি আরো বলেন, চুরি ছিনতাই ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রনে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। থানা পুলিশের সেবার মান বাড়াতে ও আমরা কাজ করছি।
ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় কারণ জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার ওসি তদন্ত বলেন, গত ৩/৪ মাসে এ থানায় ৩টি মামলা হয়েছে। তারা, চুরি- ছিনতাই, অজ্ঞান পাটি, টানা পার্টি, কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসায়ীসহ শতাধিক অপরাধী গ্রেফতার করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দিয়ে আদালতে পাঠান। এ সময় তিনি ইনকিলাবকে আরো বলেন, বিমানবন্দর থানা এলাকায় চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে তাদের পুলিশ সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সাদা পোশাকে কাজ করছেন। পাশাপাশি বেপরোয়া কিশোর গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চুরি-ছিনতাই ও টানা পার্টির বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানা সুত্রে জানা যায়, ছিনতাইকরীদের বিরুদ্ধে তাদের সাঁড়াসী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছিনতাইকারীর আঘাতে পথচারী মৃত্যুর ঘটনায় তারা আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। তারা আরো বলেন,টানা পার্টির হাতে পথচারীদের হারানো মোবাইল এবং ছিনতাইকারীর হাতে হারানো মালামাল উদ্ধারের তাদের তৎপরতা রয়েছে। কিশোর গ্যাং এর উৎপাত ও চুরি ছিনতাই বেড়ে যাওয়া বিষয়ে দক্ষিণখান থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন,তার থানায় প্রতি মাসেই দুই তিনটা করে চুরি ও মারা-মারির ঘটনায় মামলা হচ্ছে। মামলার আসামি গ্রেফতারের পাশাপাশি চুরির মালামাল প্রাইভেট কার ও মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় চুরি ছিনতাই প্রতিরোধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আব্দুল্লাহপুর চৌরাস্তা,তুরাগ বেরী বাঁধ, সিঙ্গার মোড়, লাবাম্বার মোড়,দিয়াবাড়ী ব্রিজ এলাকা,ময়লার মোড়,খালপাড়,প্রিয়াংকা সিটি,পাসপোর্ট অফিসের মোড়,হাউজবিল্ডিং চৌরাস্তা, জসিমউদদীন, বিমানবন্দর রেলস্টেশন, দক্ষিণখান প্রেমবাগান, সিটি সেন্টার, ফায়দাবাদ ট্রান্সমিটার, উত্তরখান কাঁচকুড়া বাজার, মাজার চৌরাস্তা ও কাওলা এলাকায় কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়েছে বিদ্যুৎ বেগে। রাত হলেই উত্তরার বিভিন্ন সেক্টর সড়কে কিশোর গ্যাং টানাপার্টি অজ্ঞান পাটি ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে যায়। জানা যায়, ছিনতাইকারীদের হাতে রিক্সারোহীরা ক্ষতি ও গ্রস্থ হচ্ছে। দিনে দুপুরে রিক্সা চলাচল যাত্রীদের হাত থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পাইল, জরুরি কাগজপত্র মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিতেও দেখা যায়। বিমানবন্দর এলাকায় বিদেশগামী যাত্রী ও স্বজনেরা ছিনতাইকারীদের হাতে স্ব-সর্বশ হারাচ্ছে বলে জানান সেখানকার ভুক্তভোগীরা।
ছিনতাইকারীদের ভয়ে উত্তরার বিভিন্ন সেক্টর সড়ক, উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকার পথচারী,বেটারীচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা চালক ও রিক্সারোহী সাধারণ যাত্রীরা অসহায়। এ বিষয়ে উত্তরখান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন,৫ আগষ্টের পর থেকে এ পর্যন্ত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তার থানায় ১০টি মামলা হয়েছে।এর মধ্যে আটটি মামলার আসামি গ্রেফতারসহ অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছেন তারা। সরেজমিনে অনুসন্ধান কালে জানা যায়, ৫'আগষ্ট ২৪ থেকে এ পর্যন্ত কারণে অকারণে উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় চুরি ছিনতাই,খুন হত্যা সহ অহরোহ মারামারির ঘটনা তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?
মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,
আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ
তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!
সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,
গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা
দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ
চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২
স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব
শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস
শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম
ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ
ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন
পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ
চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না
ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫
বিধ্বংসী শতকে লিটনের জবাব, ঝড়ো সেঞ্চুরি তানজিদেরও, বিপিএলে রেকর্ড
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক