ডিসি নিয়োগে কেলেঙ্কারী তদন্তের ফলাফল প্রকাশের দাবি ঐক্য ফোরামের

কিছু উপদেষ্টা তল্পিবাহক কর্মকর্তাদের প্রতি সহানুভুতিশীল

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২১ পিএম

প্রশাসনে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ও বিতর্কিত ১/১১ এর দোসর কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু উপদেষ্টা এখনো ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর কর্মকর্তাদের প্রতি সহানুভুতিশীল। উপদেষ্টারা ফ্যাসিষ্ট সরকারের মন্ত্রী ও সচিবদের একান্ত সচিবদের তাদের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আবার ফ্যাসিষ্ট সরকারের তল্পিবাহক কর্মকর্তাদের পদায়নের জন্য আধা সরকারি পত্র দিচ্ছেন। কোন উপদেষ্টা কি করছেন তাদের সব তথ্য আমাদের কাছে আছে। এখন থেকে এসব কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে আগামীতে জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। দোসরের কর্মকর্তারা দেশের অস্থিরতা সৃষ্টি করার কাজে সচেষ্ট আছে।

 

বিশেষ তারা প্রধান উপদেষ্টাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য প্রশাসন ও সমাজের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নিবাচন বিলম্বিত করা এবং অনৈতকি ফায়দা লাভ করা। কজেই প্রশাসনকে গতিশীল করা ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সুষ্টু-নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। এই সঙ্গে ডিসি নিয়োগে কেলেঙ্কারীর ঘটনা তদন্তে আইন উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুলকে প্রধান করে গঠিত হয়েছিল তদন্ত কমিটি। সেই কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। ছয়মাস পার হলেও কেন আজও সেই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখলো না-তা প্রকাশ করতে হবে। সিভিল প্রশাসনে কর্মরত সকল ক্যাডার, ননক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসর ও দুর্নীতিপরায়ণ, তাদের অবিলম্বে চাকরি থেকে অপসারণের দাবি জানিয়ে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।

 


গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি এ বিএম আবদুস সাত্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা বিজন চন্দ্র সরকার, সাবেক সচিব আবদুল খালেক, আবদুল বারীসহ শতাধিক কর্মকর্ত ও কর্মচারী নেতারা। লিখিত বক্তব্যে আবদুস সাত্তার বলেন, আজও ফ্যাসিস্টের দোসররা প্রশাসনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সচিবালয়সহ সরকারি দপ্তরগুলোতে ‘সমন্বয়ক’ নামধারী লোকেরা বসে রয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে ডিসি নিয়োগ হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছিল। তা তদন্ত করতে গত বছরের অক্টোবরে আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে শক্তিশালী কমিটি গঠন করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার সময়সীমাও বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজও তার ফলাফল জাতি জানতে পারেনি। ডিসি কেলেঙ্কারীর প্রতিবেদন কেন আলোর মুখ দেখে না- আমরা জানতে চাই। আমরা ৩২ জন ডিসির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত আকারে জানপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আজও একজন ডিসিকে সরানো হয়নি কেন? ৫ দফা দাবি তুলে ধরে আবদুস সাত্তার বলেন, সিভিল প্রশাসনে কর্মরত সকল ক্যাডার, ননক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসর ও দুর্নীতিপরায়ণ, তাদের অবিলম্বে চাকরি থেকে অপসারণ এবং আইনের আওতায় আনতে হবে।

 

নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো নিশ্চিত করার স্বার্থে সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। ফ্যাসিস্ট আমলে বৈষম্যের শিকার বর্তমানে কর্মরত সকল ক্যাডার, ননক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্যান্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করতে হবে। বৈষম্যের শিকার এখনো বঞ্চিত সকল ক্যাডার-ননক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতিসহ প্রাপ্য সকল সুবিধা প্রদান করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসর ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি ও পদায়নে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন বা করবেন, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা একটি রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হয়েছিল।

 

২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্ক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ভোটারবিহীন নির্বাচন, ব্যালট বাক্স ছিনতাই এবং রাতের অন্ধকারে ভোট গণনার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা হয়েছিল। প্রশাসন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। যারা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের বদলি, হয়রানি, চাকরিচ্যুতি এবং এমনকি কারাবাসের শিকার হতে হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, রাজনৈতিক দল ও ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের উপর দমন-পীড়ন, ২০২৪ সালের কোটা আন্দোলনে গুলি, সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ছিল ফ্যাসিস্ট শাসনের নৃশংসতার প্রকাশ। আমরা বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিস্ট শাসনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রশাসনের উচ্চপদে কিছু পরিবর্তন হলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূর্বের ফ্যাসিস্ট সহযোগী ও দলবাজ কর্মকর্তারাই বহাল রয়ে গেছেন।

 

 

প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রসঙ্গে এবিএম সাত্তার বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ভারে প্রশাসন ন্যুজ। ফ্যাসিষ্ট সরকারে আমলে ব্যাপকভাবে চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো কর্মকর্তাকে ৪/৫বার পর্যন্ত নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্বৈরাচারের একচ্ছত্র দোসর ও সহযোগী হিসেবে বিবেচিত, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের অবৈধ নির্বাচনের কারিগর ও আওয়ামীলীগের পক্ষে পলিসি মেকিং থেকে শুরু করে পদোন্নতি-পদায়নের নিয়ন্ত্রক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ড. মো. শহিদুল্লাহ, রেক্টর (সচিব), জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি, ড. মো. ওমর ফারুক, রেক্টর (সচিব), বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি, এ.এইচ. এম শফিকুজ্জামান, সচিব, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সাইদ মাহবুব খান, রেক্টর, বিপিএটিসি, মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, মো. আশরাফ উদ্দিন, সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, নাজমুল আহসান, সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, সচিব, এআরডি, ফারহান আহমেদ, সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, মো. সাবিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব, ভূমি আপীল বোর্ড (প্রাক্তন ঢাকা বিভাগের কমিশনার), শরিফা খান, বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, বিশ্ব ব্যাংক, ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান, মহাপরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, কেয়া খান, মহাপরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সালেহ আহমেদ মোজাফ্ফর, মহাপরিচালক, জনশক্তি কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরো, মো. মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সিরাজুন নূর চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব, অর্থ বিভাগ (প্রায় এক যুগের অধিক এ বিভাগে কর্মরত), ড. এ.কে.এম শাহাবুদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, মো. রহিম খান, অতিরিক্ত সচিব, বানিজ্য মন্ত্রণালয় (প্রায় ৮ বছরের অধিক এ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত), এখনও বহাল তবিয়তে বর্ণিত পদসমূহে আকড়ে ধরে আছেন। শুধু তাই নয়, এদের প্রায় প্রত্যেকেই আওয়ামী মন্ত্রী-সচিবদের একান্ত সচিব থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, কেবিনেট বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বানিজ্য মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ডেভলপমেন্ট মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী সরকারের বসংবদ ও আস্থাভাজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বড় বড় অর্থ লোপাটের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমণ কমিশনে পুঙ্খাণুপুঙ্খভাবে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

 

 

আবার এখনও এরা নানা কায়দায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাগিয়ে নেয়ার সূক্ষ্ম খেলায় মত্ত হয়ে আছে। এভাবে ৫ আগস্টের পর থেকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া আমলারা প্রশাসনে এখনও প্রায় অপরিবর্তিত ও সক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে বিগত দেড় দশকের অধিক সময়ের স্বৈরাচার ও ফ্যাসিষ্ট সরকারের যাঁতাকলে পড়ে বিভিন্নভাবে নিপিড়ীত, বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এসব কর্মকর্তাগণ। সময় মতো পদোন্নতি ও পদায়ন না হওয়ায় তাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সুনাম ও মর্যাদার যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। এক অবর্ণনীয় লাঞ্চনা-গঞ্জনার মধ্য দিয়ে এসব কর্মকর্তাদের সময় পার করতে হয়েছে। এদের একেক জনের উপাখ্যান এতো বড় যে সবার ইতিহাস লিখলে বিশাল এক বই হয়ে যাবে। হিংসা-বিদ্বেষসহ অপর আদর্শ নির্মূলের রাজনীতি মানুষকে কতটা প্রতিহিংসা পরায়ন করতে পারে তার নমুনা আমরা বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে দেখেছি। বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার এসব কর্মকর্তাগণ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর সরকারি কাজে ও জনসেবায় নিয়োজিত না থাকায় তারা তাদের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হননি।

 

 

অথচ এরা প্রত্যেকেই মাঠ প্রশাসনসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রশাসনিক কাজে অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য। দীর্ঘ দিন ধরে সততা এবং সুনামের সাথে সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কেউ কেউ পদোন্নতি পেলেও পদ পাননি, আবার কেউ কেউ পদোন্নতি, পদ পেলেও জাতিকে সেভাবে আর সেবা দিতে সুযোগ পাননি। কেননা রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সিভিল প্রশাসনের জন্য এই সময়টি ছিলো একটি কালো অধ্যায়। বস্তুত স্বজনপ্রীতি ও দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এবং সীমাহীন দুর্নীতির ফলে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন কাঠামোসহ প্রত্যেকটি ইনিস্টিটিউড ভেঙ্গে পড়েছিল। তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের এক চরম পরাকাষ্ঠা। ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সরকারের আমলে পিয়ন থেকে সচিব পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে নিজের লোকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছিল।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নের্তৃত্বে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। জাতির এই ক্রান্তিকালে তাঁর এই দায়িত্ব গ্রহণকে আমরা কর্মচারী ঐক্য ফোরামসহ বাংলাদেশের আপামর সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বাগত জানিয়েছি।

 

বিশেষকরে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ দেড় যুগের অধিক সময় ধরে আওয়ামীলীগ সরকার দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যে ভয়াল আতঙ্ক, গুম-খুন, বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড, জঙ্গি দমনের নামে অকারণে মানুষ হত্যা, দুর্নীতি-লুটপাট, গায়েবী মামলা, হয়রানি, জেল-জুলুম- হুলিয়া, অকারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা, নির্বিচারে মানবাধিকার হরণ, নির্মুলের রাজনীতি সহ গনতান্ত্রিক কাঠামোর সমস্ত প্রতিষ্ঠান যেমন রাষ্ট্রীয় সিভিল প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সাংবিধানিক সংস্থাসমূহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিনত করে একদলীয়, কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিষ্ট সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রে এক নিরপেক্ষ আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করে আওয়ামী সরকারের বসংবদ, আজ্ঞাবহ ও দলদাস সম্পন্ন এক ভয়ঙ্কর ও বেপরোয়া শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে দেশের সিভিল প্রশাসন পরিচালনা করেছে। প্রচলিত প্রশাসনিক নিয়ম-কানুন ও রীতি-নীতি ভঙ্গকরে নিজেদের অনুগত কর্মকর্তাদের দিয়ে মাঠ প্রশাসনসহ সামগ্রিক প্রশাসন চালিয়েছে। বিরোধী রাজনীতির সাথে ন্যূনতম সম্পর্ক আছে এমন কর্মকর্তাদের নির্বিচারে ওএসডি করাসহ পদোন্নতি, পদায়ন ও তাদের প্রাপ্য সমস্ত সুবিধা থেকে চরমভাবে বঞ্চিত ও নিগৃহীত করা হয়েছে।

 


এভাবে বিগত দেড় দশকের অধিক সময়ের স্বৈরাচার ও ফ্যাসিষ্ট সরকারের যাঁতাকলে পড়ে বিভিন্নভাবে নিপিড়ীত, বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এসব কর্মকর্তাগণ। সময় মতো পদোন্নতি ও পদায়ন না হওয়ায় তাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সুনাম ও মর্যাদার যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। এক অবর্ণনীয় লাঞ্চনা-গঞ্জনার মধ্য দিয়ে এসব কর্মকর্তাদের সময় পার করতে হয়েছে। এদের একেক জনের উপাখ্যান এতো বড় যে সবার ইতিহাস লিখলে বিশাল এক বই হয়ে যাবে। হিংসা-বিদ্বেষসহ অপর আদর্শ নির্মূলের রাজনীতি মানুষকে কতটা প্রতিহিংসা পরায়ন করতে পারে তার নমুনা আমরা বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে দেখেছি।

 

বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার এসব কর্মকর্তাগণ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর সরকারি কাজে ও জনসেবায় নিয়োজিত না থাকায় তারা তাদের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হননি। অথচ এরা প্রত্যেকেই মাঠ প্রশাসনসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রশাসনিক কাজে অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য। দীর্ঘ দিন ধরে সততা এবং সুনামের সাথে সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কেউ কেউ পদোন্নতি পেলেও পদ পাননি, আবার কেউ কেউ পদোন্নতি, পদ পেলেও জাতিকে সেভাবে আর সেবা দিতে সুযোগ পাননি। কেননা রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সিভিল প্রশাসনের জন্য এই সময়টি ছিলো একটি কালো অধ্যায়। বস্তুত স্বজনপ্রীতি ও দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এবং সীমাহীন দুর্নীতির ফলে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন কাঠামোসহ প্রত্যেকটি ইনিস্টিটিউড ভেঙ্গে পড়েছিল। তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের এক চরম পরাকাষ্ঠা। ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সরকারের আমলে পিয়ন থেকে সচিব পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে নিজের লোকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছিল।

 


জাতির কাঙ্খিত গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর পুরো দেশবাসীর মতো জনপ্রশাসনের বঞ্চিত কর্মকর্তারাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন- এবার নিশ্চয় তাদের বঞ্চনার অবসান ঘটবে। সরকারের সিভিল প্রশাসনের প্রত্যেকটি স্তর দুঃশাসন-দুর্বৃত্তায়নের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হবে। প্রশাসনে আওয়ামী দুর্বৃত্তায়নের সাথে জড়িত সমস্ত সুবিধাভোগীদের আপসারণ ঘটবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসনযন্ত্র গড়ে উঠবে যা ছিল ৩৬ জুলাই ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মূল চেতনা। অবাক করা বিষয় হলো এই ’৩৬ জুলাই’ থিমটি যিনি সৃষ্টি করেছিলেন, তিনি আমাদেরই একজন সিনিয়র কর্মকর্তা, তিনি এখনও বৈষমের শিকার! বলাবাহুল্য, বঞ্চিত এসব কর্মকর্তাদের অধিকাংশই কোন-না কোনভাবে ছাত্র-জনতার এ্ই আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। যদিও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের বঞ্চনার অবসানে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবুও বিজয় অর্জনের আট মাস অতিবাহিত হলেও এখনও অনেকের বঞ্চনার অবসান হয়নি। কারণ, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকে এখনো জনপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে বহাল রয়েছেন। অথচ এরাই নানাভাবে মদদ দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসককে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সব ধরনের সহায়তা করেছেন। শুধু তাই নয়, এখনও নানা কায়দায় তারা সব ধরনের সুবিধা বাগিয়ে নিতে সচেষ্ট আছেন। পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। শেখ হাসিনার আস্থাভাজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত এবং সুবিধাবাদীরা এখনো ‘নানা কৌশলে’ যেমন পদোন্নতি-পদায়ন বাগিয়ে নিচ্ছেন তেমনিভাবে বঞ্চিত-বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উপদেস্টাদের কান ভারী করছেন। আর এসমস্ত অনভিজ্ঞ ও অযোগ্য কিছু উপদেস্টারাও দুষ্ট প্রকৃতির আওয়ামী আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের কথা শুনে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের উপযুক্ত পদে পদোন্নতি-পদায়ন না করে বরং আওয়ামী আস্থাভাজনদের শীর্ষ আসনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ডিও লেটার লিখছেন। অথচ এই সুবিধাবাদী, আওয়ামী দলদাস কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে কেউ (সচিবালয় বা মাঠ প্রশাসন থেকে) নীতি-নৈতিকতা ও বিবেকের তাড়নায় অবৈধ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন থেকে সরে আসেননি। এসব কারণে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক নয় কি!

 


দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন তারা যদি বর্তমান সরকারের আমলে পদোন্নতি পেয়ে উপযুক্ত পদে বসে তাহলে দীর্ঘ দিনের বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা স্বাভাবিক নয় কি! পলাতক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ আমলাদের এখনো কিভাবে এবং কার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি ও পদায়ন করা হচ্ছে- তা আমাদের বোধগম্য নয়। বিগত সরকারের আমলে আমলাতন্ত্রের পেশাদারিত্বের কথা ভুলে গিয়ে আওয়ামী রাজনৈতিক দর্শণ ধারন করে ভোটার ছাড়া ভোটগ্রহণ, দিনের ভোট আগের রাতেই গ্রহণ, জাল-জালিয়াতিসহ ডামি নির্বাচন করে গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় পরিষদগুলোর নির্বাচনেও এসব কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল আরও ন্যাক্কারজনক।

 


সভাপতি বলেন, প্রশাসন থেকে আওয়ামী আস্থাভাজন, দলদাস ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে না পারলে একদিকে যেমন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলা যাবে না অন্যদিকে পেশাদারিত্ব ও বুদ্ধিবৃত্তিক আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাও সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে ইনসার্ভিস ও আউট সার্ভিস (যারা অবসরে গেছেন) কর্মকর্তাদের নিয়ে সমগ্র প্রশাসন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত যেসব কর্মকর্তাদের শারীরিক-মানসিক সক্ষমতাসহ বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় নিয়োজিত এবং অধিকদতর দক্ষ ও মেধাবী বলে সবার কাছে সুপরিচিত; তাদের উপযুক্ত স্থানে পদায়ন করলে দেশ ও জাতির সেবা দিতে সক্ষম হবেন। জনগনের প্রতি সরকারের যে অঙ্গীকার সেই অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নিজস্ব লোকের প্রয়োজন হবে। প্রশাসনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী, চক্রান্তকারী বা ষড়যন্ত্রকারী দিয়ে সরকারের জনপ্রতিশ্রুতি সংস্কার বা উদ্যোগগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। বরং যে সমস্ত কর্মকর্তা সরকারের প্রতি চরম আনুগত্যশীল, সৎ ও দক্ষ তাদের কাজে লাগাতে হবে।

 

যারা বর্তমান সরকারের মন-মানসিকতা উপলব্ধিতে সক্ষম হবেন এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রাথমিক সংস্কার সাধনে তৎপর হয়ে একটা আদর্শ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল, আমলাতন্ত্র ও সামাজিক সংগঠকদের ন্যায়পথে পরিচালিত হতে মূল্যবান দিকনির্দেশনা রেখে যাবেন। কেননা অসীম সম্ভাবনার এই দেশকে আমরা আর নষ্ট হতে দিতে পারি না। সেক্ষেত্রে সরকারের সমস্ত সংস্কারের উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সকলের উদার হস্ত প্রসারিত করে বর্তমান সরকারের পাশে দাঁড়াতে হবে। কেননা আমরা ড. ইউনুস সরকারের সাফল্য কামনা করি এবং সরকারের আইনানুগ ও স্বৈরাচার মুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠার সকল পদক্ষেপে সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সহস্র শহীদের আতœত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশে বৈষম্যহীন ও বঞ্চনামুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্মুখপানে এগিয়ে যাবে এবং জন আকাঙ্খা পুরণে রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষে আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো বির্নিমানের মাধ্যমে জনগণের সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার ফিরে আসবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত
৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে, ইসলামী গণজাগরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে
নতুন এডহক কমিটি পেলো রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়
ছাত্রলীগ নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে
নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি
আরও
X

আরও পড়ুন

আজ শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি, বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান

আজ শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি, বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান

জয়শঙ্কর-শেহবাজ শরিফকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, কী বার্তা দিলেন?

জয়শঙ্কর-শেহবাজ শরিফকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, কী বার্তা দিলেন?

দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ শীর্ষে ঢাকা

দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ শীর্ষে ঢাকা

দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ জরুরি : প্রধান উপদেষ্টা

দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ জরুরি : প্রধান উপদেষ্টা

ফেঁসে যাচ্ছে আওয়ামী দালাল ১৭ অভিনয়শিল্পী

ফেঁসে যাচ্ছে আওয়ামী দালাল ১৭ অভিনয়শিল্পী

দুদকের রেকর্ড সাফল্য: ৮ মাসে ১৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

দুদকের রেকর্ড সাফল্য: ৮ মাসে ১৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

পল্টনে শ্রমিক সমাবেশ শুরু, দলে দলে আসছেন নেতাকর্মীরা

পল্টনে শ্রমিক সমাবেশ শুরু, দলে দলে আসছেন নেতাকর্মীরা

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ সম্পদ চুক্তি সই

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ সম্পদ চুক্তি সই

নির্ধারিত সময়ের ২ মাস পূর্বে সকল দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা

নির্ধারিত সময়ের ২ মাস পূর্বে সকল দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা

নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে হিলি স্থলবন্দরে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস

নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে হিলি স্থলবন্দরে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস

এবার পাকিস্তানের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করল ভারত

এবার পাকিস্তানের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করল ভারত

মহান মে দিবস : রাজধানীতে বাদ্যযন্ত্রের তালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

মহান মে দিবস : রাজধানীতে বাদ্যযন্ত্রের তালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

আজ মহান মে দিবস

আজ মহান মে দিবস

সেমিফাইনালে হেরে মেসির মায়ামির বিদায়

সেমিফাইনালে হেরে মেসির মায়ামির বিদায়

ইবিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা দিলো সহ-সমন্বয়করা

ইবিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা দিলো সহ-সমন্বয়করা

মানিকগঞ্জে আ.লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর উজ্জ্বল হোসেনে গ্রেফতার

মানিকগঞ্জে আ.লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর উজ্জ্বল হোসেনে গ্রেফতার

পেকুয়ায় একদিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত- ২০

পেকুয়ায় একদিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত- ২০

ছয় গোলের রোমাঞ্চ শেষে বার্সা-ইন্টার

ছয় গোলের রোমাঞ্চ শেষে বার্সা-ইন্টার

চেন্নাইয়কে বিদায় করে শীর্ষ দুইয়ে পাঞ্জাব

চেন্নাইয়কে বিদায় করে শীর্ষ দুইয়ে পাঞ্জাব

সেমিফাইনালে হেরে আল নাসেরের বিদায়

সেমিফাইনালে হেরে আল নাসেরের বিদায়