জনগণ দ্রুত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় দেখতে চায়
১১ মার্চ ২০২৩, ১১:০৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৯ পিএম
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ ১০ দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীর তিনটি স্পটে গতকাল শনিবার মাববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে। নগরীর নূর আহম্মদ সড়কে নগর বিএনপির মাববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের জনগণ বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের অতিসত্ত্বর বিদায় দেখতে চায়। মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। রাস্তাঘাটে পথে, মাঠে, সমাবেশে প্রত্যেক জায়গায় আজ একটা প্রশ্ন এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে কবে বিদায় দিবেন? আমরা নিশ্বাস ফেলতে পারছি না। আরো কিছুদিন এ অবৈধ সরকার যদি থাকে আমরা কেউ বাঁচব না। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় প্রতিটি দিন অতিবাহিত করছি, আমাদের মুক্তি দিন। দেশকে মুক্ত করেন। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ম্যাসেজ।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মী অংশ নেন। নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কের মূল অংশ থেকে শুরু হয়ে একদিকে কাজীর দেউরী মোড়, অন্যদিকে লাভলেইন হয়ে জুবলী রোড় পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে মানুষ সর্বস্তরের জনসাধারণ অংশ নেয়।
আমীর খসরু বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে বিস্ফোরণগুলো হচ্ছে এগুলোকেও তারা রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। একটা সরকারের আমলে যখন এগুলো ঘটে তখন সে সরকার দেশ পরিচালনাতে ব্যর্থ। তারা রাজনীতি করছে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরশাদের পতনের সময় মন্দিরে মন্দিরে আক্রমণ হয়েছিল। স্বৈরাচাররা যখন পতনের অবস্থানে চলে যায় তারা তখন এ ধরণের কর্মকান্ড করে। তারা আরো করবে। কারণ আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতি নেই। এ দলটি রাজনৈতিকভাবে দৈন্যদশায় পড়ে গেছে। দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সরকার অন্য খেলাধুলায় ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
নির্বাচনে যারা ভোট চুরিতে জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে জানিয়ে আমির খসরু বলেন, সারাবিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দিকে। দৃষ্টি হচ্ছে মানবাধিকারের দিকে, এদেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচারের দিকে, বাক স্বাধীনতার পক্ষে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তার দিকে। বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে আছে। আর এক শতাংশের নিচের মানুষ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এই লক্ষ কোটি টাকা লোপাট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে এ টাকা ফেরত দিতে হবে। আর যারা আওয়ামী লীগের সাথে ভোট চুরিতে লিপ্ত থাকবেন, যারা জড়িত থাকবেন সবার একটি তালিকা করা হচ্ছে।
আমীর খসরু বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচনের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। তারা আইন করেছে এ নির্বাচনে ভোট চুরির সাথে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আসবে। এটা তো বাইরে থেকে আসবে ভেতর থেকে তাদের বিচার হবে। ওয়ান ইলেভেনের তাদের যেসব মামলা তারা খারিজ করে দিয়েছে, গত এগারো বছরের গুম, খুনের যে মামলা এগুলোকে একত্রিত করলে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের মধ্যে একটি আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রার্থী পাওয়া যাবে না। সবাইকে জেলে যেতে হবে। বিচারের আওতায় আসতে হবে। কেউ ছাড় পাবে না। তাই তাদের বলবো, বুঝিয়া করিও কাজ, আর করিয়া ভাইবা নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। বাংলাদেশের মানুষকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান। ৫০ বছর পর আবার দেখা হবে।
এতে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, মো. শাহ আলম, আবদুল মান্নান, এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, অ্যাড. মুফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মো. খান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, নাজিম উদ্দীন আহমেদ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মনজু, মো. কামরুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নসরুল কদির, জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সেলিম জানে আলম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মহিলা দলের মনোয়ারা বেগম মনি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কর্তৃত্ববাদী ও লুটেরা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সরকার : নোমান
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী ও লুটেরা সরকার হিসেবে বহিঃবিশ্বে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচিতি পেয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন এই কর্তৃত্ববাদী সরকার মানুষের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণ করেছে। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে জোরদার গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে গণতন্ত্র পূনঃপ্রতিষ্ঠা করা। তিনি নগরীর কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি নেতা এনামুল হক, ইদ্রিস মিয়া, ইফতেখার মহসীন, মোশারফ হোসেন, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, এস এম মামুন, নাজমুল মোস্তফা আমিন, মুজিবুর রহমান, মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম, অ্যাড. ফোরকান, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, নুরুল ইসলাম সওদাগর, হাজী ইসহাক, মাস্টার লোকমান, হামিদুল হক মান্নান, হুমায়ুন কবির আনসার, আবু নিপার, আবুল কালাম আবু প্রমুখ।
এই সরকারের জনগণে বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে : মীর নাছির
ওয়াসা চত্বরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থেকে জনগণের অধিকার হরণ করে চলেছে। আওয়ামী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে চলেছে। এই সরকার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। স্বৈরাচাররা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে না। এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির নেতা কর্মীরা রাজপথ ছড়বে না। সভাপতির বক্তব্যে গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, আজকের মানববন্ধনসহ বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে জনগণ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নুরুল আমিন, নুর মোহাম্মদ ও ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, ছালাহ উদ্দিন, নুরুল আমিন, কর্নেল অব. আজিম উল্লাহ বাহার, অ্যাড. আবু তাহের, আব্দুল আউয়াল চৌধুরী।
আগুন আতঙ্কে পুরান
ঢাকায় বসবাস
হাসান-উজ-জামান
একের পর এক অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটছে পুরান ঢাকায়। ঘটনাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, নিয়মিত বিরতিতে যেন শোকের সাগরে ভাসছে পুরান ঢাকার মানুষ। স্মরণকালের নিমতলীর ভয়াবহ আগুন, চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির শোক কাটতে না কাটতেই সর্বশেষ ফুলবাড়িয়ার সিদ্দিকবাজার বানিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণে আবারও প্রাণহানির ঘটনায় স্তব্দ মানুষ। মাঝে ছোট ছোট ঘটনায়ও অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে। এক একটি দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি হয়, সময় বদলে যায় কিন্তু স্থায়ী সমাধান হয় না। যে কারনে আতঙ্কের মধ্যেই বসবাস করেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা।
একেতো সরু গলি, তার উপর গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত ভবন ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা। একই ভবনে বসতি আবার একই ভবনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একদিকে দেখা যায় খাবার হোটেল, কোচিং-ডায়াগনস্টিক সেন্টার অন্যদিকে কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও পারফিউমের গোডাউন। ইচ্ছামতো শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে প্রতিটি বাসা বাড়িতে। কোনো কোনো ফ্ল্যাটের তিন রুমের তিন ধরনের কারখানাও দেখা যায়। কোনো রুমে হয়তো জুতা তৈরি হচ্ছে, কোনো রুমে প্রসাধনী আবার কোনো রুমে তৈরি হচ্ছে চুড়ি। যেখানে আবাসিক, বাণিজ্যিক শিল্প এলাকা বলতে কিছু নেই। সবই একই রকম! যেখানে রয়েছে অনেক অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ। তীব্র যানজটের পাশাপাশি রয়েছে জলাশয়ের অভাব। এটিই পুরান ঢাকার বাস্তব চিত্র। বিপজ্জনক এই পুরান ঢাকা সম্পর্কে অনেকের মন্তব্য পুরান ঢাকা যেন এক মৃত্যুপুরী। কারো কারো কাছে এটি জাদুর শহর। কারো কারো কাছে এটি জ্যামের শহর। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি আতঙ্কের নগরী।
২০০৪ সালের জুন মাসে শাঁখারি বাজারে তিন তলা এক পুরোনো ভবন ধ্বসে নিহত হন ১৯ জন। ওই সময় ভবনটির একটি পরিবারের পিংকি নামে একটি কিশোরীকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছিলো। ওই ঘটনার পর জনগণের সমালোচনায় সরকারি মহল থেকে সিদ্ধান্ত হয় পুরোনো সব বিল্ডিং ভেঙ্গে ফেলা হবে শাঁখারি বাজারের। সিঙ্গাপুরের মতো সাজানো হবে এলাকাটিকে। কয়েক মাসের মধ্যেই সরকারি কমিটি থেকে পুরান ঢাকার প্রায় ৮০০টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয় নি।
২০১০ সালের ৩ জুন। রাত ৯ টা। নবাব কাটারার নিমতলীর সাপমন্দির রোডের ৪৩/৩ নং বাড়ির ব্যবসায়ী ফারুক গুলজারের ৫ তলা বাড়ির ছাদে চলছিলো রুনা নামে এক তরুনীর বিয়ের অনুষ্ঠান। হঠাৎ বিকট শব্দ। বাড়ির পাশের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারটির বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণ থেকে আগুন। যে আগুনের সৃষ্ট গোলা দ্রুত আকাশে উঠে যায়। ফলে গোটা এলাকা আলোকিত হয়ে পড়ে। আগুন ৪৪ থেকে ৪৮ নম্বর পর্যন্ত এ ৫টি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় দ্রুত এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি এতই ভয়াবহ ছিলো যে রাস্তার পথচারী পর্যন্ত সে আগুনে দগ্ধ হয়।স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নারী পুরুষসহ ১২৫ ব্যক্তি নিহত হয়। আহত হয় আরো শতাধিক। নিমতলীর ওই ঘটনার পর পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ সরানোর দাবি ওঠে। সে জন্য কেরানীগঞ্জে একটি জায়গাও ঠিক করা হয়। কিন্তু কেমিক্যালের সবগুলো গুদাম এখনও কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়নি। সেখানের স্থানীয় পুকুর ও খাল ভরাট না করার কথাও বলা হয়।
স্মরণকালের আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রয়ারি। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে চুড়ি হাট্টা শাহী মসজিদের সামনে ৬৩ নং নন্দ কুমার দত্ত রোডে হাজী ওয়াহেদ ম্যানসনের সামনে দাড়ানো একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশেপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পাশে ছিলো একাধিক সিএনজি অটোরিক্সা। সে সব সিএনজির সিলিন্ডার একে একে বিস্ফোরিত হয়। এ সময় ঐ পিকআপে ওয়াহেদ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলার একটি বডি স্প্রের গুদাম থেকে স্প্রের কার্টুন ভরা হচ্ছিল। চুড়ি হাট্টা শাহী মসজিদের সামনের এই চিকন তিন রাস্তার মোড়ে ছিল ভয়াবহ যানজট। ফলে মুহূর্তে যানজটে আটকা শতাধিক যাত্রীবাহী রিক্সা, প্রাইভেট কার, মোটর সাইকেল এবং পায়ে হাটা পথচাররীর শরীরে আগুন ধরে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে ওয়াহেদ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলার স্প্রে গুদামে এবং পাশের ৬৪ নং ভবনের রাজ মহল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি ৫টি ভবন তখন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। এ ঘটনায় ৭১ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন শতাধিক। তিন রাস্তার মোড় থেকে একত্র ৩৬টি দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে কয়লা হয়ে যাওয়া আড়াই-তিন বছরের এক শিশুর বিভৎস লাশ ছিল।
সবশেষ গত মঙ্গলবার বিকালে সিদ্দিকবাজারে ক্যাফে কুইন স্যানেটারি মার্কেট ভবনে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে ঝরে যায় ২৩টি প্রাণ। আহত হয় দুই শতাধিক। ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ছাদ ধসে পড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। বিস্ফোরণ এতটাই ভয়াবহ ছিল, সব লাশ উদ্ধারের পর ভবনটি ধসে পড়ার শঙ্কায় বন্ধ রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কার্যক্রম। নিমতলী, চূড়িহাট্টা, আরমানিটোলা ট্রাজেডির পর এই ঘটনায় আবারো আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বাবুবাজার সেতুসংলগ্ন আরমানিটোলায় রাসায়নিক, ইসলামপুরে কাপড়, নয়াবাজারে কাগজের বড় পাইকারি বাজার। এসব এলাকায় মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা এখানে নেই। পুরান ঢাকা রাজধানীর অন্যান্য এলাকা থেকে অনেক ঘিঞ্জি। এখানকার সরু রাস্তায় দিনভর যানজট লেগে থাকে। আগুন লাগলে দুর্ঘটনার সময় দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারে না। অপরিকল্পিত এই এলাকায় পানি মজুদেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ কিছু দিন পরপরই এই এলাকায় ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এখানে সব সড়কেই থাকে গাড়ি আর মানুষের জটলা। ব্যবসা-বাণিজ্যে রাত-দিন মুখর থাকে পুরো এলাকা। স্থানীয়রা পুরান ঢাকাকে নিরাপদ রাখতে এখনই সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় একের পর এক যুক্ত হবে নতুন নতুন ট্রাজেডি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জিন প্রযুক্তিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিজ্ঞানীদের নতুন কৌশল আবিস্কার
নেত্রকোনার মদনে রাইফেলসহ ৩ মাদক ব্যাবসায়ী গ্রেফতার
কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান পেয়েছে ঢাকাই সিনেমা 'প্রিয় মালতি'
মাগুরায় নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশ
ফরিদগঞ্জে গৃহবধূ আসমার লাশ গোসলের সময় দেখা যায় আঘাতের চিহ্ন, দুই দেবর পলাতক
নির্মাণকাজে গুণগতমান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না- খুবি উপাচার্য
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাই কি দেশে ফেরাবে শেখ হাসিনাকে?
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ই সাংগঠনিক কাঠামোতে রাখা হবে- ছাত্রদল সম্পাদক নাছির
বিশ্বনাথ পৌর সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতির রিমান্ড মঞ্জুর
বোয়িং ধর্মঘটের সমাপ্তি,কর্মীরা ৩৮% বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাবে সম্মতি জানালেন
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ
তাবলিগের বিরোধের কারণ সরকারের বোঝা দরকার : নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদি
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোট দেয়া ও গণনা হয় যেভাবে !
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে শুধুই আলেম-ওলামা
কান্নায় রয়েছে যেসব উপকারিতা
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংগঠন ‘ইউএনআরডাব্লিউএ' এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ইসরাইল
দিনাজপুরের খানসামায় ১১ বছর আগের চাঁদাবাজি ও বিএনপি'র কার্যালয় ভাংচুরের মামলা
চাঁদপুরে ডিম ছাড়ার পর ইলিশের গবেষণা
নিষেধাজ্ঞা শেষ পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত জেলেরা
বগুড়ায় ২০ টাকায় পঁচা পেয়াজ কিনে ৮০ টাকায় বিক্রি, কেজিতে লাভ ৬০ টাকা