বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন কীভাবে হবে তা ঠিক করবে নির্দলীয় সরকার। ইভিএম নিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন কি করল বা বলল তা নিয়ে বিএনপির কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি বলেন, বিএনপি রাজপথে নেমেছে এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সরকারের পতনের পর নির্দলীয় সরকার গঠন করা হবে- তারাই নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। ওই কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তিনি গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর সিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, এই সরকার অবৈধ, তাদের গঠিত নির্বাচন কমিশনও অবৈধ। তাদের কোন বৈধতা নেই। তাদের প্রতি এদেশের মানুষের কোন আস্থা নেই। তারা আবারও চোরাপথে ক্ষমতায় আসার জন্য এই কমিশন গঠন করেছে। কারণ তারা জানে জনগণের ভোটে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের শত্রু। তারা একদলীয় বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্র হত্যা করেছে। তারা মানুষের ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছে এই সরকার। সাংবাদিকরা সঠিক তথ্য তুলে ধরলে তাদের হয়রানি করা হয়। মানুষ খেতে পারছে না, এ কথা পত্রিকায় লেখা যাবে না। সরকার সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করতে ডিজিটাল আইন ব্যবহার করছে। আমীর খসরু বলেন, সরকারের লুটপাটের কারণে দেশে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছে। সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। কোটি কোটি মানুষ এক বেলা না খেয়ে থাকছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। কিন্তু সরকারের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। তিনি বলেন, বিএনপি রাস্তায় নেমেছে, জনগণের আন্দোলনের মুখে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করা হবে।

প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, এই জালিম ও অবৈধ সরকারের কাছে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চাই না। তার জন্য আমরা কারো করুণা চাই না। ঈদের পর দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে। ওই গণঅভ্যুত্থানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি হলেও বিএনপি রাজপথে লড়াকু আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়াকে জনগণের কাতারে নিয়ে আসা হবে। তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরবেন। ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও জেলা বিএনপি নেতারা বক্তব্য রাখেন। এতে চট্টগ্রাম মহানগর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতা ছাড়াও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও শরিক হন।
মাহফিলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান প্রধান বক্তা থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। ইফতার মাহফিলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ শরিক হন। বিশাল কনভেনশন হল এবং আশপাশের খোলা জায়গায় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মাহফিল রীতিমত সমাবেশে রূপ নেয়। ইফতারের আগ মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতাদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও দেশ জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।