মুলাদীতে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মিলল ২ জনের লাশ

Daily Inqilab বরিশাল ব্যুরো

১১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৮ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৯ পিএম

বরিশালের মুলাদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্ব›েদ্বর জেরে পুলিশের সামনে হাতবোমা ফাটিয়ে ৩ জনকে তুলে নেয়ার পর দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

অপর একজনকে গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সে কোথায় কিভাবে আছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাটামারা ইউনিয়নের পূর্ব তয়কা গ্রামে এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের সাথে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা মুলাদী থানা পুলিশ সাংবাদিকদের জানিয়েছে।

মুলাদী থানার ওসি তুষার কান্তি মÐল জানান, গত সোমবার দুপুরে মাদারীপুরের কালকিনি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানার এক আসামি গ্রেফতার করতে গেলে এক দল লোক এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ওসি জানান, কোনোভাবে পরিস্থিতি শান্ত করতে না পেরে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসলেও পরে আরো ফোর্স নিয়ে গভীর রাতে অভিযানে গেলে গ্রাম থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারকৃত ২ জনের লাশ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও ওসি জানান। উদ্ধারকৃত লাশ দুটি পূর্ব তয়কা গ্রামের সেলিম বেপারীর ছেলে হেলাল বেপারী (৪০) ও সফিপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের জলিল কবিরাজের ছেলে আলমগীর কবিরাজ (৪৫)-এ বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়া হেলাল বেপারীর ভাই কামাল বেপারী গুরুতর আহত হয়েছে।

বাটামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন অশ্রু সাংবাদিকদের জানান, প্রায় শত বছর থেকে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই এলাকার দুইটি গ্রæপের মধ্যে দ্ব›দ্ব রয়েছে। হাজী ও আকন গ্রæপ নামে পরিচিত এই দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। পুরনো সেই দ্ব›েদ্বর জেরে গত সোমবার দুই গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হেলাল ও আলমগীর নিহত হয়েছে।

হেলালের ভাই কামাল নিখোঁজ ছিল। পরে তাকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেলেও তাকে কোথায় নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে জানি না।

গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মাহিমা বেগমের স্বামী আলী হোসেন বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ৭-৮ বছর পূর্বে হাজী গ্রæপ ও আকন গ্রæপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হাজী গ্রæপের আনিস নিহত হয়। ওই হত্যা মামলার আসামি আকন গ্রæপের হেলাল, কামাল ও আলমগীর এলাকায় এসেছে খবর পেয়ে তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশে খবর দেন হাজী গ্রæপের নেতা ও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলম বেপারী।

পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে। তখন আলম বেপারীর নেতৃত্বে দুইটি ট্রলারে ৩০/৩৫ জন বোমা, টেটা, রামদা, বগি-দাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে পুলিশের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা হেলাল, কামাল ও আলমগীরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ফাঁকা গুলিও করে। নিহত আলমগীরের স্ত্রী রাবেয়া বেগম অভিযোগ করেন, পুলিশের সহযোগিতায় তার স্বামীকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত হেলালের বোন জানায়, সাত বছর পর এলাকায় এসেছিল তার ভাই হেলাল ও কামাল। একমাস আগে এলাকায় আসার পর কয়েকবার হাজী গ্রæপকে মীমাংসার প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু কিছু হয়নি। তার অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতেই তিনজনকে ধরে নিয়ে দুই জনকে হত্যার অভিযোগ করে তিনি এর বিচারও দাবি করেন।

 

 

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ
ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!
মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ
পলাতক ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
‘জনশক্তি’ নামে কোনও রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি : জাতীয় নাগরিক কমিটি
আরও

আরও পড়ুন

উথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী লাইফ

উথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী লাইফ

নেতাকর্মীদের রেখে লক্ষণ সেনের মত পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার- সিলেটে ব্যারিস্টার সালাম

নেতাকর্মীদের রেখে লক্ষণ সেনের মত পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার- সিলেটে ব্যারিস্টার সালাম

অভিনেতা অপূর্বকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচার

অভিনেতা অপূর্বকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচার

পুঠিয়ার শিবপুরে স্বামী-স্ত্রী ও শেলিকাসহ একই পরিবারের ৩জন নিহত

পুঠিয়ার শিবপুরে স্বামী-স্ত্রী ও শেলিকাসহ একই পরিবারের ৩জন নিহত

বরিশালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অংশীজন সখভায় প্রধান প্রকৌশলী

বরিশালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অংশীজন সখভায় প্রধান প্রকৌশলী

দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে

সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে

‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’

‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’

‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’

‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’

মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর

মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর

৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী

৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারতে: দুলু

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারতে: দুলু

মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?

মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?

পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ

পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ

ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!

ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!

মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ

মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ

৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে পুলিশ, এ জন্য আমরা লজ্জিত: আইজিপি

বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে পুলিশ, এ জন্য আমরা লজ্জিত: আইজিপি

ব্রাহ্মণপাড়ায় পাঁচ দিনেও খোঁজ মিলেনি নিখোঁজ সোহাগের

ব্রাহ্মণপাড়ায় পাঁচ দিনেও খোঁজ মিলেনি নিখোঁজ সোহাগের

কসবায় পাহাড় কাটার অপরাধে ২ জনের অর্থদণ্ড

কসবায় পাহাড় কাটার অপরাধে ২ জনের অর্থদণ্ড