যানজট-গরমে ভোগান্তি
১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১১:২৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৫ পিএম
তীব্র গরম ও যানজটের কারণে দুর্বিষহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরবাসী। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সড়কে সকাল থেকেই যানবাহনের বাড়তি চাপ। যা সময় গড়াতেই রূপ নিয়েছে যানজটে। তবে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, যানজটের ভোগান্তি কমিয়ে সড়কের শৃঙ্খলা ও যানবাহনের গতি সচল রাখতে এবার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে দুপুরের পর থেকে সড়কে দাঁড়াচ্ছেন ট্রাফিকসহ ক্রাইম বিভাগের কর্মকর্তারাও।
যাত্রী ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকে তীব্র গরম ও সড়কে বাড়তি চাপ ছিল। দুপুর গড়াতেই সেটা যানজটে রূপ নিয়েছে। প্রতি সিগনালে বেশি সময় দাঁড়াতে হচ্ছে। মার্কেট, বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনমুখী সড়কে চাপ চোখে পড়ার মতো। অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় সড়কে চাপ বাড়াচ্ছে ভিআইপি প্রটোকলও।
এদিকে, ঢাকায় প্রবেশ ও বের হতে গিয়ে এই পথের যাত্রীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই। কারণ গুলিস্তান এলাকার তীব্র যানজটে নাকাল হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। শুধু দূরপাল্লার যাত্রীদেরই নয়, ঢাকার ভেতরে চলাচল করা বেশিরভাগ যাত্রীকে প্রতিদিন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় গুলিস্তান এলাকার যানজটসহ অন্যান্য সমস্যার কারণে।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানের ফুটপাথ, সড়ক সবসময় থাকে হকারদের দখলে। ঢাকার ভেতরে চলা বাসগুলোর বেশিরভাগ গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, ফুলবাড়িয়া এলাকায় সড়কে রেখে দেয়ায় এমনিতেই যানজট লেগে থাকে। এরমধ্যে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে গুলিস্তান থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলকারী দূরপাল্লার একাধিক পরিবহনের বাস।
সরেজমিন দেখা গেছে, অনেক পরিবহনের বাস গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়া হয়ে চলাচল করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ জেলায়। এসব বাস আসা-যাওয়ার সময় সঙ্কুচিত হয়ে যায় সড়ক। আর কখনো কখনো মূল সড়কের ওপর রাখার কারণে তৈরি হয় যানজটের। বিশেষ করে যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়ার সময় এসব বাস যখন ঘোরানো হয় তখন পেছনে লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়। চলতি রমজানে এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে গুলিস্তান এলাকায় তীব্র যানজট, মানুষ পায়ে হেঁটে চলবে সেই সুযোগও প্রায়ই থাকে না।
ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ টার্মিনালগামী সড়কে চাপ বাড়াচ্ছে। দিনে মার্কেটমুখী সড়কেও ভিড় বাড়ছে। অফিস টাইম সামলাতে না সামলাতেই মার্কেটকেন্দ্রিক চাপ তৈরি হচ্ছে। যে কারণে সড়কের শৃঙ্খলায় নিরবচ্ছিন্ন কাজ করতে হচ্ছে ট্রাফিক সদস্যদের। অন্যদিকে সকালের চাপ দুপুরে কোথাও কোথাও যানজটে রূপ নিচ্ছে। তার মধ্যে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বাড়তি চাপ তো আছেই।
রাজধানীর আগারগাঁও, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, বিজয় সরণি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সিগনালগুলোতে বাড়তি চাপ। ৫ মিনিটের সিগনালে দাঁড়াতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ মিনিট। তার মধ্যে তেজগাঁও থেকে মগবাজার ফ্লাইওভারে ওঠার মুখে একটি গাড়ি নষ্ট হওয়ায় মুহ‚র্তেই চারদিকে যানজট লেগে যায়।
অন্যদিকে, মহাখালী ফ্লাইওভারের উপরের সড়ক ফাঁকা থাকলেও নিচের সড়কে আমতলীতে ইনকামিং সড়কে চাপ লেগেই আছে।
সেখানে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, টার্মিনালকেন্দ্রিক ঝামেলা হচ্ছে। ঈদ আসন্ন। টার্মিনালের কার্যক্রম বাড়ছে। অনেকে বাস সড়কে পার্ক করছে, সেগুলো ক্লিয়ার করতে হচ্ছে। আজকের এই চাপে বিকেলে ব্যাপক যানজট তৈরির আশঙ্কা করছেন তিনি।
রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, নিউ মার্কেট ও খিলগাঁও এলাকায় সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালে চাপ বেশি ছিল তবে দুপুরে সেরকম চাপ নেই।
সিএনজি চালক বলেন, প্রচন্ড গরম। এই গরমে বিজয় সরণিতে দাঁড়িয়ে থাকা খুবই মুশকিল। তার মধ্যে দীর্ঘসময় সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তেজগাঁও এসে তো আরও বিপাকে পড়েছি। আধা ঘণ্টার জন্য যেন চারদিক স্থবির হয়ে পড়েছিল। পরে শুনলাম সড়কে একটা গাড়ি নষ্ট হয়েছে। সেটা সরানোর পর সড়ক সচল হয়।
ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালে অফিসগামী চাপ তো থাকেই। তবে আমাদের বিশেষ ব্যবস্থাপনা ও নজরদারির কারণে সড়ক সচল থাকে, কোথাও কোথাও হয়ত গতি কমে যায়। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার, চাপটা থাকবে।
তিনি বলেন, মার্কেটকেন্দ্রিক চাপ আছে। মার্কেটমুখী সড়ক যেন গতিশীল থাকে সেজন্য আইজিপি ও কমিশনার মহোদয় মার্কেট ভিজিট করেছেন। বসুন্ধরাসহ তেজগাঁও এলাকার মার্কেটমুখী সড়কে বিশেষ নজর থাকছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পথচারীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, নিউমার্কেট সড়কে বাড়তি চাপ ও যানবাহন চলাচলে ধীরগতি রয়েছে। এক ব্যবসায়ী জানান, গাউছিয়া মার্কেট ঘেঁষা ফুটওভার ব্রিজে কেউ উঠতে পারছেন না। সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে নিচে পারাপারে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। সড়কে যানজট বা গাড়ি চলাচলে স্থবিরতা আনছে।
ট্রাফিক রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শনের পর সেখানকার ফুটওভার ব্রিজটা ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে দুই পাশ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে দিনে হাজার হাজার মানুষ পারাপার হতেন। এখন তারা রাস্তায় নেমে পারাপার হচ্ছেন। বুঝতেই পারছেন সড়কের অবস্থা কি হতে পারে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সেনবাগে মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় ভাগ্নে নিহত : মামা আহত
কুষ্টিয়ায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গৃহবধুকে নির্যাতন
রাজশাহীর বাগমারায় পুকুর থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় ট্রাক ও নছিমন সংঘর্ষে গরু ব্যবসায়ী নিহত
র্যাবকে সমাজে রাখা ঠিক হবেনা -রাজশাহীতে নূর খান
নওগাঁয় ৩ জনকে পিটিয়ে জখম, আহতদের উদ্ধার করলো পুলিশ
মাদারীপুরে গুড়ি বৃষ্টি আর হিমেল বাতাসে জনজীবন স্থবির
দুমকীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাঁধা
দুবাই মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশি মেধাবী শিক্ষার্থীর অ্যাওয়ার্ড লাভ
'বরবাদ' সিনেমা শতকোটির গন্ডি পেরিয়ে যাবে! কি বললেন শাকিব?
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বাস চাপায় মা ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন নিহত
দোয়ারাবাজারে ভারতেীয় সীমান্তে ৩০০ বস্তা রশুন আটক করেছে টাস্কফোর্স
রাজশাহীতে নেসকোর ভৌতিক বিল বন্ধসহ নানারকম হয়রানীর প্রতিবাদে বিক্ষোভ
শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার
যুবদলের উদ্যোগে ৩১ দফা অবহিতকরণে আলোচনা সভা
এমাজউদ্দীন আহমদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল সর্বজনীন
বাংলাদেশে সা'দ পন্থিদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে: হাটহাজারীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তারা
ভারত বাধা পেরিয়ে শিরোপা জিততে মরিয়া বাংলাদেশ
দোয়ারাবাজারে ভ্যানের ধাক্কায় শিশু নিহত
গারো পাহাড়ের পানি হাতায় ঘুরতে এসে ভোগা নদীতে ডুবে ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু