জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে আগুন লাগাচ্ছে সরকার
১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৯ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৪৬ পিএম
চলমান আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে নিতে ক্ষমতাসীন সরকার মার্কেটে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আপনারা (সরকার) ব্যর্থ হয়েছেন কোনো কিছু মনিটর করেন না। প্রতিদিন সবখানে আগুন লাগছে। এই আগুন লাগার পেছনে আপনারা আছেন। মানুষের যে দাবি উঠেছে, সারের দাম কমাও, চালের দাম কমাতে হবে, আমাদের বাঁচতে দিতে হবে, আমাদেরকে একটা ভালো নির্বাচন করতে দিতে হবে, আমাদের ভোটের অধিকার দিতে হবে, এই দাবিগুলো পাশ কাটানোর জন্য, মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে দেয়ার জন্য আপনারা (সরকার) এই আগুন লাগিয়ে বেড়াচ্ছেন।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে সারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, এদেশের মানুষ সহ্যের একটা সীমা আছে। আজকে খুব পরিস্কার কথা, অবিলম্বে এই সারের দাম কমাতে হবে, আবার আগের জায়গায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার একটা গণবিরোধী সরকার, এই সরকার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ খেটে খাই, পরিশ্রম করে খাই, তাদের জীবন দূর্বিসহ করে ফেলেছে। প্রতিবাদ করলে কি? গুলি, গ্রেফতার, মামলা করা হয়। আজ সব খানে সাধারণ মানুষের ওপরে নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন করছে।
কেনো এই অত্যাচার, কেনো মানুষের প্রতি দয়া-মায়া তাদের নেই? এর কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয়নি। দুইটা নির্বাচন করেছে, সেই দুইটা কিভাবে করেছে আপনারা সবাই জানেন। ২০১৪ সালের নির্বাচন সম্পর্কে শফিউল আলম প্রধান সাহেব বলেছেন (জাগপার মরহুম সভাপতি) কুত্তা মার্কা নির্বাচন। ২০১৮ সালে মধ্য রাতে সব ঘটনা ঘটিয়ে বলে যে, আমরা জিতে গেছি। কিন্তু মানুষ আর সহ্য করবে না। এই সরকারকে সরাতে হবে। এই সরকার যতদিন থাকবে ততদিন মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বাড়বে, মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলতেই থাকবে।
নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকা-ের দায় ক্ষমতাসীনদের অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিএনপি। কিছু হলে বিএনপি, উদোর পিন্ডি বুঁদোর ঘাড়ে। ব্যবসায়ীরা নিজেরাই বলে দিলো যে, আমরা নিজেরা চোখে দেখেছি, ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে সিটি করপোরেশনের পোষাক পড়ে কয়েকজন লোক এসেছে। মার্কেটের সামনের যে ফুট ব্রিজ ছিলো সেই ফুট ব্রিজে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য তারা গ্রিল নিয়ে সেখানে সেই ব্লক কেটে দিয়ে সিড়িগুলো ভেঙ্গে দিচ্ছিল। তারা যখন লাগাতে গেছে ওই গ্রিলের তার পয়েন্টে.. সেই পয়েন্টে শট সার্কিট হয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিজেরা দেখেছেন। তারা আগুন নেভানোরও চেষ্টা করেছেন। আগুন নেভাতে যখন পারেনি তখন সিটি করপোরেশনের ওই লোকগুলো পালিয়ে গেলো। এটা আমার কথা নয়, সেখানকার ব্যবসায়ীদের কথা। সিটি করপোরেশের দাযিত্বে আছেন এখন কে? সিটি করেপারেশনের দায়িত্বে আছেন আপনারা, আওয়ামী লীগ। তাই দায় সম্পূর্ণ ভাবে আওয়ামী লীগের এবং এই সরকারের।
তিনি বলেন, এতো আগুন লাগছে কেনো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা পরিবেশের কারণে লাগছে। পরিবেশের বিপর্যয় কে করেছে? এই সরকার যেখানে জায়গা পায় বিল্ডিং তুলে দেয়, বিল্ডিং তুলে বাজার চালু করে। আবার আওয়ামী লীগের সমস্ত গুন্ডা-পান্ডা আছে, তারা চাঁদা আদায় করে অতিরিক্ত দোকান দিয়ে মানুষের চলাচলে অনুপযুক্ত করে দেয়। বঙ্গবাজার যেখানে ২০টা দোকান হওয়ার কথা ছিলো সেখানে ৪০টা দোকান। নিউ মার্কেটে যেখানে তিন তলায় হাজার হাজার দোকান বসেছে। কিভাবে বসলো? পয়সা দিয়ে বসেছে। কারে পয়সা দেয়া হয়? আওয়ামী লীগের সমস্ত ওখানকার যারা নেতা তাদেরকে পয়সা দিয়ে, তাদেরকে ঘুষ দিয়ে এভাবে দোকান বসিয়েছে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার পরিবর্তনের চলমান আন্দোলন আরো জোরদার করা হবে ঘোষণা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমরা এই আন্দোলন শুরু করেছি। ইনশাল্লাহ আমরা এই আন্দোলনের জয়ী হবো। ইতোমধ্যে আমাদের ১৭ জন ভাই প্রাণ দিয়েছে। কোনো গ্রেফতার, হত্যা, নির্যাতন আমাদেরকে আটকিয়ে রাখতে পারবে না। দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে কৃষক, শ্রমিক, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই বিজয় আমরা ছিনিয়ে আনবো।
সারের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাবেক এই কৃষি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের শুধু চরম অবহেলা নয়, তাদের চরম কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে সরকার। তারা মাথায় হাত দিয়েছে। হঠাত করেই কেজি প্রতি সারের দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেনো? তাদেরকে(কৃষকদের) বলা হয়েছে যে, ওই আইএমএফ তাদেরকে শর্ত দিয়েছে যে, ভতুর্কি দেয়া যাবে না। সব দেশে কৃষিতে ভুতর্কি দেয়া হয়। কিন্তু এখন আমাদের দেশে কৃষকদের গলা টিপে ধরার জন্য এই সরকার প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষক যখন ধান বিক্রি করতে যাবে তখন তারাই (সরকার) বলছে ২৯ টাকা প্রতি কিলোতে খরচ হয়। দাম দিতে চায় ৩০ টাকা। ৫ টাকা সারের দাম বাড়ালেন আর আমাকে দিচ্ছেন ৩০ টাকা। আমি বেঁচে থাকবো কি করে, টিকবো কি করে? শুধু ফসল ফলানোর ক্ষেত্রেই নয়, আমাদের কৃষিখাতে পল্ট্রি, ডেইরী.. গরুর ফার্ম এরাও পথে বসে গেছে। শুধু বড়রা বড় হচ্ছে আর মাঝারী বা ছোট তারা ধবংস হয়ে যাচ্ছে।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পীরগনজে আইএফআইসি ব্যাংকের কন্বল বিতরন
‘তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে যেতে হবে’
ছাত্রীদের আবাসনের জন্য মাসে ৩ হাজার টাকা দেবে ঢাবি
নারী ও শিশুর অধিকার সুরক্ষায় কাজ করার আহ্বান ইউজিসি’র
তাবলীগ জামাতে বৈষম্য নিরসনের দাবি
অস্ট্রেলিয়ার শ্রীলঙ্কা সফরে যোগ হলো একটি ওয়ানডে
কোট চাঁদপুরে জামায়াত নেতা হত্যা মামলার আসামীকে কুপিয়ে হত্যা
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গবেষণায় সহায়তার নিশ্চয়তা প্রদান করা প্রয়োজন- সিকৃবি ভিসি
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য শেরপুর বিএনপির মিছিল
সৈয়দপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিফলেট বিতরণ
তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে পটুয়াখালীতে মেয়েদের হকি ম্যাচ অনুষ্ঠিত
কুকুর পরিচালনা শিখতে ইতালি যাচ্ছেন পুলিশ কর্তারা
ফেদেরারের যে রেকর্ড এখন জোকোভিচের
কুষ্টিয়ায় আ.লীগ নেতাকে হাতুড়িপেটায় মাথা ফাটাল, যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল নেতারা
কালীগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে মোচিক ইউনিয়নের কমিটিকে সংবর্ধনা
বগুড়ায় করেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামি সহ গ্রেপ্তার ৪
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আকাশে উড়ার স্বপ্ন পূরণ করল নভোএয়ার
সিলেটে 'সিটিজেন রাইটস এন্ড জাস্টিস নেটওয়ার্ক' এর আত্মপ্রকাশ
ঠাকুরগাঁওয়ে কাজে লাগছে না দুই কোটি টাকার স্লুইস গেট
এনসিটিবির সামনে হামলার সময় সরব ছিল না পুলিশ