পর্দার আড়ালে আসল রাজনীতি
১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০১ পিএম
পবিত্র রমজান মাসে বৈশাখের প্রচ- রৌদ্রতাপে উত্তপ্ত বাতাসে দেশের মাঠ-ঘাট পুড়ে ছারখার হওয়ার উপক্রম। ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। আগুনের হল্কা নিয়ে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এ সময় রাজনীতিতে দৃশ্যমান কোনো উত্তাপ নেই। রাজপথের কার্যত নীরব-নিথর। বিএনপির ‘পথযাত্রা’ আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশ’ উধাও। দৃশ্যমান কোনো রাজনীতি নেই। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওয়াশিংটন ছুটে যাওয়া, দেশে ফিরে ‘রাখঢাক’ বক্তব্য দেয়া, বিএনপি নেতাদের পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় ফেয়ার নির্বাচন আমরাও তাই চাই’ ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যপারে কিছু বলেনি’ বক্তব্য এবং পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাক্ষাতে প্রতীয়মান হচ্ছে দেশের রাজনীতি তথা আগামী নির্বাচন ইস্যুতে ভেতরে ভেতরে কিছু একটা চলছে।
বৈশাখের তাপমাত্রার উত্তপ্ততার মতো রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ততা দৃশ্যমান না হলেও নির্বাচন ইস্যুতে পর্দার আড়ালে ‘রাজনীতির ঝড়োহাওয়া’ বইছে। সেই ঝড়োহাওয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির নেতাদের ঘাম ছুটলেও সুবিধাবাদী দলগুলোর নেতাদের গায়ে কোনো আঁচ লাগছে না। নৌকায় চড়ে এমপি-মন্ত্রী হওয়া বাম-ডান-মধ্যপন্থী নেতারা নিরাপদ দূরত্বেই রয়েছেন। তাদের ভাবখানা ঝড়ঝাপটা সামলাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আর আমরা নিরাপদে থেকে নৌকায় চড়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো এবারও নির্বাচনের নদী পাড় হবো।
পর্দার আড়ালে কি হচ্ছে সেটা নীতি নির্ধারক পর্যায়ের নেতারা ছাড়া সাধারণ মন্ত্রী-এমপিরা জানেন না। ফলে অন্ধকারে থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা একে অন্যের গায়ে ঢিল ছুঁড়ছেন। বাকযুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছেন। আসলে বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, কানাডাসহ উন্নয়ন সহযোগী প্রভাবশালী দেশগুলো খুবই তৎপর। নানা প্রক্রিয়ায় সেই তৎপরতার প্রকাশ ঘটেছে। এর মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে আমন্ত্রণ জানান। গত ১০ এপ্রিল ওয়াশিংটনে ব্লিঙ্কেন-ড. মোমেনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের ‘মডেল’ নির্বাচন দেখতে চায়। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা পৃথিবী বাংলাদেশের নির্বাচন দেখার জন্য তাকিয়ে রয়েছে।
অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তার স্বভাবগত পুরনো ‘রেকর্ড’ বাজাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এটা সব সময়েই তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।’ তবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটি বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচন দেখতে চায়, সেটা হবে দৃষ্টান্তমূলক। আর সেই দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন দেখতে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বই বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতায় নির্বাচনটি যেন উদাহরণ হিসেবে গণ্য হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ওয়াশিংটনে ও দেশে ফিরে ড. মোমেন বৈঠককে ফলপ্রসূ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের দ্বিমত নেই। আমরাও চাই সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। আর তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচন ইস্যুতে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না। আমাদের দেশে যে আইন আছে, সে আইনেই ইলেকশন চায়।
ড, মোমেনের স্বভাবজাত এই বক্তব্যের মধ্যে পরিস্থিতি সীমাবদ্ধ বলে মনে হচ্ছে না। ব্লিঙ্কেন আর ড. মোমেনের মধ্যেকার বৈঠক এবং একান্ত বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে কূটনৈতিক কারণেই তা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। আবার ড. মোমেনের ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো পুরনো কথা ‘কোনো সমস্যা নেই যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ নির্বাচনের চাওয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ একমত। আমরাও চাই ফেয়ার নির্বাচন। এ জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করা হয়েছে ভোটারদের আইডি কার্ড করা হয়েছে’ মার্কা কথাবার্তা বলেই চলছেন। আসলে ব্লিঙ্কেন কি বার্তা দিয়েছেন ড. মোমেনকে? আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেনি। তাহলে কি বলেছে? কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো খুবই শক্তিশালী মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এ সব মাধ্যম গণমাধ্যমের মতো সম্পাদকীয় নীতি না থাকায় সত্য-মিথ্যা তথ্য প্রচার হয়ে থাকে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এ সময় ড. মোমেনের পক্ষ থেকে ওয়ান/ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা তুলে বলা হয় ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলে ক্ষমতায় এসে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন দুই বছর ক্ষমতায় ছিল। তখন বলা হয় তাহলে জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন হতে পারে। তারা তো আর তিন মাসের বেশি থাকবে না।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত এ তথ্যের সত্যমিথ্যা অবশ্য জানা যায়নি।
পর্দার আড়ালে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কিছু যে একটা হচ্ছে তা পরিষ্কার। ১৬ এপ্রিল ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বললেন, পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে তিনি কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা এবং নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।’ ড. মোমেন বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সমৃদ্ধির জন্য সামকির শাসন নয়, রাজনৈতিক নেতৃত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ’। গতকালও ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হঠাতে চায়।’
পর্দার আড়ালে কি হচ্ছে বোঝা না গেলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতোই পাতানো নির্বাচন করার চেষ্টা করছে তা পরিষ্কার। এ জন্য নানাভাবে বিএনপিকে ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনী ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। ভারতকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে ঢাকায় কর্মরত ভারতের হাইকমিশনার বিএনপির মহাসচিবসহ কয়েকজন নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বৈঠক করেছেন। সূত্রের দাবি, সে সময় তিনি জানতে চান বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দিল্লির সঙ্গে তাদের কেমন সম্পর্ক হবে? চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেমন হবে ইত্যাদি জানার চেষ্টা করেন। উল্লেখ ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ভারতের সে সময়ের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ঢাকায় এসে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে ‘বিএনপিকে ঠেকাতে’ নির্বাচনে অংশ নেয়ার চাপ দেন।
আসন্ন নির্বাচন ইস্যুতে পর্দার আড়ালে এতো কিছু হচ্ছে অথচ সুবিধাবাদী ছোট দলগুলোর বড় নেতারা নির্ভার। তাদের অবস্থা এমন আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থক করছি আমাদের নৌকায় করে ক্ষমতায় নেয়ার দায়িত্ব তাদের। তবে রাজনৈতিক ঝড়ে নৌকাডুবি ঘটার উপক্রম হলে তারা বিপদে পড়া নৌকা থেকে ইদুরের মতো ঝাড় দেবে। তবে সুবিধাবাধী নেতাদের বিএনপি জোটে নেমে বলে মনে হয় না। কারণ তাদের ‘মুখোশ’ খুলে গেছে।
সুবিধাবাদী জাতীয়তাবাদী : দেশের রাজনীতিতে পরজীবী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে কিছু রাজনৈতিক দল। এসব দলের নেতারা বেশিরভাগই এখন নৌকায় চড়ে এমপি হয়ে ক্ষমতার মধু খাচ্ছেন। তবে সেখানেও কেউ কেউ দুর্নীতি দমন কমিশনের কারণে শান্তিতে নেই। কেউ কেউ নৌকায় চড়ে এমপি-মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার মধু খেলেও অন্যেরা যাতে ভাগ বসাতে না পারে সে ব্যাপারে সোচ্চার। এই সুবিধাবাদীদের মধ্যে বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী ২০১৮ সালে দুটি আসনের জন্য বিএনপিকে মাঠে ফেলে হঠাৎ প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে বসেন। বিনিময়ে পুত্র মাহী বি. চৌধুরী ও দলের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানকে এমপি করেন। কিন্তু এমপি হয়ে ক্ষমতার মধু খেলেও তারা ভালো নেই। এমপি মাহী বি. চৌধুরী ও তার স্ত্রী আশফাহ্ হক লোপাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে মেজর (অব.) আবদুল মান্নানকেও কয়েক দফায় দুদক তলব করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার মধু খাওয়ায় দুদক মামলা করলেও তাদের তা সহ্য করতে হচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটলেও এরা ‘সুবিধাবাদী চরিত্র’ হওয়ায় বিএনপি ডেকে নেবে না।
নৌকার নিরাপদ যাত্রী : আওয়ামী লীগ কিছু সবিধাবাদী ইসলামী দলকে অন্তর্ভুক্ত করে ১৪ দলের কলেবর বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু ১৪ দলের বাম নেতারা বলছেন, ১৪ দলে কোনো ইসলামী দল নেয়া যাবে না। সম্প্রতি ১৪ দলীয় জোটের এক বৈঠকে বিরোধী দলের কর্মসূচির পাল্টা যে কর্মসূচি আওয়ামী লীগ নিচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একজন সিনিয়র নেতা বৈঠকে বলেন, বিএনপির আন্দোলনের পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করছে এতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা আন্দোলন মোকাবিলা করতে যাব না। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী জোটেরও প্রধান, সে ক্ষেত্রে সব ঝড়ঝাপটা তিনিই সামাল দেবেন। আমরা জোটের শরীক হয়ে নৌকায় বসে থাকব।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটে থাকলেও রাজনৈতিক সংকটে তারা নেই। অথচ এই মুখচেনা বামেরা নিজেরা বাড়তি ‘বাহবা’ পেতে আওয়ামী লীগকে বিবৃত করতে ছাড়ছেন না। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং বিসমিল্লাহ রাখায় আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে বক্তৃতা দেন দুই নেতা। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সরকারি দল। এর আগেও বিএনপি, টিআইবি, সুজন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ২০১৮ সালের ‘রাতের নির্বাচন’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন; তখন বরিশালের এক সভায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘জনগণ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। আমি সাক্ষী দিয়ে বলছি, এই নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু জনগণ ভোট দিতে পারেনি।’ মেননের ওই বক্তব্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে প্রচার করা হয়। শুধু মেনন নয়, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আপনি (আ.লীগ নেতা) আশি পয়সা। আর এরশাদ, দিলীপ বড়ুয়া, মেনন আর ইনু মিললে এক টাকা হয়। আমরা যদি না থাকি, তাহলে আশি পয়সা নিয়ে রাস্তায় ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরবেন। এক হাজার বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতার মুখ দেখবেন না।’ ইনুর এই বক্তব্যে আওয়ামী লীগ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায়।
ঝোপ বুঝে কোপ : জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী হলেও মরহুম এরশাদের গড়া জাতীয় পার্টি কার্যত পরজীবী দল মেননের বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের (ইনু) মতোই সুবিধাবাদী। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলটি কার্যত নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনে পরিণত হয়েছে; জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নির্বাচন এলেই দলটির নেতারা পরিকল্পনা করে নিজেদের মধ্যে দ্বিধা বিভক্ত সৃষ্টি করে। এক পক্ষ সরকারের লেজুরবৃত্তি করে অন্যপক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিয়ে মাঠের বিরোধী দল বিএনপিকে খুশি করতে চেষ্টা করে। দলের নেতারাই বলে থাকেন জাতীয় পার্টির আইডেনটিটি নেই। দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে চলার পথে যেদিকে বৃষ্টি সেদিকে ছাতা ধরবেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। দেশ ও জনগণের স্বার্থের নিয়ে দলটির মাথাব্যথা নেই; কি পেলাম আর কি খেলাম এ নিয়েই তাদের যত চিন্তা। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যে দল লাইম লাইটে থাকবে সে দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে কিছু পাওয়াই তাদের রাজনৈতিক ব্রত। ফলে সারাদেশে দলটির কিছু কর্মী-সমর্থক থাকলেও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সমাবেশে যোগ দিতে আসা ১০টি যাত্রীবাহী বাস আটক
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের
নিজ্জর-হত্যায় : ৪ ভারতীয়ের বিচার শুরু
ম্যানিলার বন্দর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড,শতাধিক বাড়ি পুড়ে ছাই
ঢাকায় পণ্যবাহী ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত
১৯ দিন পরও ঘোষণা হয়নি ক্যালিফোর্নিয়ার ফলাফল
ভারতে ‘যৌন ব্যবসায়’ বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণীদের
মসজিদ ঘিরে উত্তেজনা : ভারতে গুলি করে ৩ মুসলিমকে হত্যা
ব্রাজিলে যাত্রীবাহী বাস খাদে, ২৩ জনের প্রাণহানী
৭ রানে অলআউট হয়ে বিশ্বরেকর্ড
পিটিআইয়ের বিক্ষোভ : ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
আদানির বিরুদ্ধে এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেন যে ৩ বিচারক
ইসরায়েলে হামলা চালানোর সব প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান
বড় জয়ে বার্সার সঙ্গে ব্যবধান কমাল রিয়াল
ইসরায়েলে একদিনে ৩৪০ মিসাইল হামলা হিজবুল্লাহর, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহত আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি
কষ্টে ফলো-অন এড়ালো বাংলাদেশ
এবার তেল আবিবে হিজবুল্লাহর ২৫০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা