চট্টগ্রামে সড়কে ধুলা বালু যানজট ঘরে মশার দাপট
১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১০:১৮ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম
হরেক যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ চট্টগ্রামের জনজীবন। রাস্তায় নামলে ধুলো বালুতে নাকাল হতে হচ্ছে। আছে অসহনীয় তীব্র যানজট। রাতে দিনে ঘরে বাইরে মশার দাপট। টানা লোডশেডিং আর পানি সঙ্কটের সাথে যোগ হয়েছে এসব যন্ত্রণা। নূন্যতম নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহানগরীর বাসিন্দারা।
পবিত্র রমজান মাসেও এসব দুর্ভোগ আর সঙ্কট থেকে রেহাই মিলছে না। অথচ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে গত দেড় দশকে ব্যয় হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তার সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ অসন্তোষ বিরাজ করছে। হাটে মাঠে চায়ের দোকানে মানুষের আড্ডায় সেবা সংস্থাগুলোর সীমাহীন ব্যর্থতা ঘুরে ফিরে আলোচিত হচ্ছে। সিয়াম সাধনার এই মাসেও নূন্যতম স্বস্তি নেই কোথাও। নিয়মিত চড়ামূল্যে বিল পরিশোধ করেও মিলছে না পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস। নানা অজুহাতে গলাকাটা হারে গৃহকর আদায় করছে সিটি কর্পোরেশন। বিনিময়ে নগরবাসী পাচ্ছে না ন্যুনতম নাগরিক সুযোগ সুবিধা।
গত কয়েকদিনের রেকর্ড খরতাপের সাথে চলছে সীমাহীন লোডশেডিংয়ে। চাহিদার এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎও মিলছে না। রাতে দিনে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বিদ্যুতের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে পানির হাহাকার। চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির উৎস হালদায় জোয়ারে লোনা পানি উঠে আসছে। আর কর্ণফুলীতে শেওলার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি পরিশোধন কমেছে। দিনে চাহিদা ৫৫ কোটি লিটার হলেও সরবরাহ মিলছে মাত্র ৩০ থেকে ৩৩ কোটি লিটার।
বিদ্যুৎ পানির অভাবে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। এ অবস্থায় রাস্তায় নেমেই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। মহানগরীর প্রতিটি সড়কে এখন তীব্র যানজট। ঈদ সামনে রেখে নগরীতে অবৈধ রিকশা ও ব্যাটারি চালিত ছোট যানবাহনের ঢল নেমেছে। শেষ সময়ে এসে কেনাকাটা জমে উঠায় মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে মানুষের ঢল নামছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে নগরীতে অতিরিক্ত গণপরিবহন চলছে। আবার ঈদের আগে চট্টগ্রাম বন্দর ও বেসরকারি ১৯টি কন্টেইনার ডিপোমুখী আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের চাপ বেড়েছে। শুরু হয়ে গেছে ঘরে ফেরা। দূরপাল্লার বাসের চাপও নগরীতে। সব মিলিয়ে মহানগরীতে যানজট এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
এর মধ্যে উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত আর সমন্বহীন খোঁড়াখুঁড়িতে সড়কের অবস্থা বেহাল। প্রতিটি সড়কে ধুলা বালু জোয়ার। যানবাহনের চাকার সাথে উড়ছে ধুলা বালু। পথচারী, গণপরিবহনের যাত্রীরা ধুলায় একাকার হয়ে যাচ্ছে। মাস্ক পরেও নিস্তার মিলছে না। মাথার চুল ধুলায় সাদা হয়ে যাচ্ছে। পরনের পোশাকে জমছে ধুলা বালুর আস্তর।
প্রচ- গরমে ঘামে ভেজা শরীরে ধুলা জমে কাদায় রূপ নিচ্ছে। ধুলায় বেশি নাজেহাল হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য এবং রিকশা ও ভ্যান চালকেরা। সড়কের দুপাশের দোকান-পাট, ব্যাংক-বীমা থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসতবাড়ির উপর ধুলার আস্তর জমেছে। মহানগরীর প্রধান সড়কের কাস্টম মোড় থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ।
সড়কের ওই অংশে এখন ধুলা বালুর প্লাবন। মহানগরীর প্রায় প্রতিটি সড়কে চলছে উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে বড় সড়কের পাশাপাশি অলি-গলিতেও এখন ধুলার যন্ত্রণা। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকালে পরিবেশ দূষণ রোধে প্রকল্প এলাকায় নিয়মিত পানি ছিটানোর কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে। এ ব্যাপারে একেবারেই নির্বিকার পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে নেই কোন অভিযান। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। তারাও এ ব্যাপারে হাত গুটিয়ে বসে আছে। মহানগরীকে ধুলামুক্ত করতে তাদের কোন উদ্যোগ নেই। সড়কগুলোকে ধুলামুক্ত করতে স্যুইপিং মেশিন কেনা হলেও তা কাজে আসছে না। নগরীর কোথাও সিটি কর্পোরেশনকে পানি ছিটাতে দেখা যায় না। গৃহস্থালীর ময়লা আবর্জনা অপসারণেও ধীরগতির কারণে মহানগরীর অনেক এলাকায় রাস্তায় আবর্জনার স্তুপ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
মশা নিধনেও চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এখন মশক নিধন কার্যক্রম কার্যত বন্ধ। ফলে নগরজুড়ে চলছে মশার উপদ্রব। রাতে দিনে মশার কামড় খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাতে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণার সাথে মশার ভয়ানক উৎপাতে দিশেহারা নগরবাসী। লোডশেডিংয়ের হাঁসফাঁস গরমে মশারি নিচে থাকা যায় না। আবার মশারি ছাড়া থাকতে গেলে হামলে পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা। কয়েল, ধূপ আর স্প্রে করেও নিস্তার মিলছে না মশার কামড় থেকে। মহানগরীর প্রধান প্রধান খালসহ সবকটি খালের সংস্কার কাজ চলছে। সিডিএর পানিবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের আওতায় খালগুলোতে সীমানা দেয়াল নির্মাণ হচ্ছে। একই কারণে খালের মুখে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব খাল এখন ময়লা পানি আর আবর্জনার বাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তাতে জন্ম হচ্ছে মশার। মশার জন্য সিটি কর্পোরেশন সিডিএকে দায়ী করছে। তবে মশক নিধনে কোন উদ্যোগই নিচ্ছে না সিটি কর্পোরেশন। গেল ডেঙ্গু মৌসুমে মানুষের মৃত্যু অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। সামনে বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ। কিন্তু আগাম কোন ব্যবস্থা নেই সিটি কর্পোরেশনের।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মাগুরার শালিখায় অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার
আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের
ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা
চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে
ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক
ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন
কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু
আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ
ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী
সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু
যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের
পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন