দুর্ভোগের ঝুঁকি নিয়েই ঈদযাত্রা
১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:১৩ পিএম
ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটির একদিন আগেই শুরু হয়েছে ঈদ যাত্রা। রাজধানী ঢাকার লাখ লাখ কর্মজীবী মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে গ্রামে ছুঁটছেন। বাসে, ট্রেনে,লঞ্চে, মোটরসাইকেলে যারা গ্রামে যাচ্ছেন। সাধারণ যাত্রীদের বেশির ভাগই ট্রেনের টিকেট না পেলেও সড়ক পথেই ছুটছেন বাড়ির পানে। পথে পথে দুর্ভোগের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ঈদযাত্রা করেছেন তারা। ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ পথে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক থেকে চান্দাইকনা পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার রাস্তায় তীব্র যানজটের শঙ্কা রয়েছে। গতকাল টাকা টু সিলেট মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট দেখা গেছে। ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেশি দেখা গেছে। সদরঘাটের লঞ্চেও যাত্রীরা ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন।
প্রতি বছর ঈদের সময় পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে রাজধানী ছেড়ে যাত্রাপথের দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই গ্রামের পথে পা বাড়ায় কর্মজীবী নগরবাসী। গত কয়েক বছর ধরেই ঈদের সময় দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ ঘরে ফিরতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এবারও দুর্ভোগের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই উত্তরাঞ্চলে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। সড়ক পথে বঙ্গবন্ধু ব্রিজ হয়ে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলাসহ দেশের প্রায় ২২টি জেলার মানুষ যাতায়াত করে। বঙ্গবন্ধু ব্রিজের পশ্চিম প্রান্তে উত্তরবঙ্গের রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নিতকরণের কাজ চলমান থাকায় গত কয়েক বছর ধরেই উত্তরের যাত্রা পথে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের। সবচেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল এবং বগুড়া রোডের সিরাজগঞ্জের চান্দাইকনা পর্যন্ত মহাসড়কে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, মহাসড়কে চার লেনের কাজ চলমান থাকায় এবং মহাসড়ক প্রশস্তকরণ এবং বিভিন্ন স্থানে ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় এবারের ঈদযাত্রায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থেকে চান্দাইকনা পর্যন্ত প্রায় ৪১ কিলোমিটার রাস্তায় দুর্ভোগের আশঙ্কায় আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪১ কিলোমিটার রাস্তার প্রায় ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান নির্ধারণ করে সেগুলো মেরামত করার তাগিদ দিয়েছে পুলিশ। এসব স্থানে মেরামত কাজ শেষ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
উত্তরবঙ্গের মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের সাসেক-২ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আহসানুল কবির পাভেল বলেন, যে সব স্থান ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে সে সব স্থানে ইতোমধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে। ঈদ যাত্রাকে নিরবচ্ছিন্ন করতে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
উত্তরের প্রবেশ পথে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক থেকে চান্দাইকনা পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার রাস্তায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ। সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান ম-ল বলেন, উত্তরবঙ্গসহ বেশ কয়েকটি জেলার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচল করে ফলে প্রতিবছর বিভিন্ন জেলার একসাথে বিপুল পরিমান যানবাহনের চাপে উত্তরের প্রবেশ পথে সিরাজগঞ্জ অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ বছর ৪১ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রায় ৬৫০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে শুধু রাস্তায় পুলিশ দিলেও হবে না, রাস্তা মেরামতের কাজ শেষ না হওয়ায় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় ফলে দুর্ভোগের আশঙ্কা এবারও রয়েছে বলে জানান তারা।
সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে চার লেন চালু থাকলেও পুরো রাস্তায় এখনও চার লেনের সব কাজ শেষ না হওয়ায় ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশ পথে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নির্মাণাধীন নলকা সেতুটি মহাসড়কে যান চলাচলের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ।
চার লেনের এ ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখনও পুরো রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় উত্তরবঙ্গগামী দুটি লেন চালু রাখা হয়েছে। ঢাকাগামী যানবাহনগুলো এখনও পুরোনো সেতু দিয়েই চলাচল করছে ফলে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নলকা সেতু এলাকায় যানবাহন চলাচলে ধীরগতি শুরু হয়ে যায়, এবং ধীরে ধীরে পুরো মহাসড়ক জুড়েই যান চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
এদিকে দুর্ভোগের এসব শঙ্কা মাথায় নিয়েই মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়তে থাকবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ : ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। যানবাহনের চাপ বাড়লেও এখনো পর্যন্ত মহাসড়কের কোনো স্থানে তীব্র যানজট দেখা যায়নি। তবে কিছু স্থানে যানবাহনের জটলা সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্দিষ্টসময় পরপর দূরপাল্লার যানবাহনগুলো ছেড়ে গেলেও যাত্রী ওঠানামা করা এবং সিগন্যালের ফলে ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর থেকে লাঙ্গলবন্দ এলাকা পর্যন্ত যানবাহন কিছুটা ধীর গতিতে চলাচল করছে। এছাড়া ফুটওভার ব্রিজের পরিবর্তে নিচ দিয়ে রাস্তা পারাপার হওয়ার ফলে যানবাহনগুলো চলাচল করতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। পাশাপাশি মহাসড়কে রয়েছে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ।
আব্দুল হাই নামের এক যাত্রী বলেন, বুধবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হলেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দুর্ভোগ এড়াতে আজই পরিবার নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। আশা করছি, ঈদের পর নির্বিঘ্নে আবার ঢাকায় ফিরতে পারব।
ঢাকার পাশের টিটাগাং রোডেও দেখা গেছে যানবাহনের ভীড়। আশরাফুল আলম নামের আরেক যাত্রী বলেন, অফিস ছুটির পর বাসায় ফেরার পথে মহাসড়কে যানবাহনের প্রচুর চাপ থাকার ফলে এক প্রকার ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। মহাসড়কে প্রচুর দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করলেও আঞ্চলিক যানবাহনগুলো খুব কম দেখা যাচ্ছে।
আবুল হোসেন নামের এক বাসচালক জানান, গতকাল দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ দেখা যাচ্ছে। মদনপুর আসার পর যানবাহনগুলো ধীর গতিতে চলাচল করছে। আশা করছি, বাকিটা পথ নির্বিঘেœই যেতে পারব। তবে যাত্রাবাড়ি থেকে শনির আখড়া, সাইন বোর্ড এলাকায় যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। এ সব স্পটে থেমে থেমে চলছে যানবাহন।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার টিআই (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো. ইব্রাহিম বলেন, বুধবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হলেও মঙ্গলবার থেকে অনেকেই গ্রামের দিকে ছুটছেন। তাই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে যানবাহনের এই চাপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে মহাসড়কের কোথাও এখনো কোনো তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়নি। যানজট নিরসনে আমাদের একাধিক টিম মহাসড়কে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ১০কি.মি যানজট : ঈদ যাত্রা শুরুর প্রথম দিনেই ঢাকা টু সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের কাচঁপুর থেকে কর্নোগোপ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা যানজট নিরসনে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক কে এম মেহেদী হাসান।
যানবাহনের চালকরা জানান, ভূলতা থেকে ঢাকামুখী কর্নোগোপ এলাকা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে কাচঁপুরেও। এতে কয়েক’শো যান সড়কে ধীরগতিতে চলাচল করছে। যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ। এ ছাড়া সড়কে আটকা পড়েছে গরু সরবরাহকারী ট্রাকগুলোও।
কিশোরগঞ্জগামী বাসযাত্রী লোকমান মিয়া দীর্ঘ সময় ধরেই অপেক্ষা করছেন ভুলতা এলাকায়। তিনি বলেন, সায়েদাবাদ থেকে কাচঁপুর পর্যন্ত রাস্তা ফাঁকা কিন্ত এরপর থেকেই শুরু হয়েছে যানজট। ১০ মিনিটের রাস্তায় পার হতে সময় লাগছে দেড় ঘণ্টার মতো। এ দিকে গরমে অবস্থা তো চরমে।
তারাব এলাকায় ঢাকামুখী বাসযাত্রী রহমান ঢালী বলেন, কর্নোগোপ এলাকা থেকে এখানে আসতে এক ঘণ্টা লেগেছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে এটুকু রাস্তা ৭ মিনিটেই পার হওয়া যায়। সড়কে গাড়ির অনেক চাপ।
ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে দুই লেনের রাস্তা কিন্ত গাড়ি অনেক। ওই এলাকাতে শিল্প কারখানাও অনেক। ফলে মানুষ রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে গাড়ি আরও আটকে যাচ্ছে। এ ছাড়া সড়কে গরু পরিবহনকারী গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে।
ট্রেনে যাত্রা শুরু : ১৭ এপ্রিল ট্রেনের ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে রাজধানীর প্রধান রেলওয়ে স্টেশন কমলাপুর ছেড়ে যায়। দিনের প্রথম ট্রেন যাত্রার মধ্য দিয়ে ঘর মুখো মানুষের ট্রেনে ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে। গত সোমবার রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়। ট্রেনটির নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ৬টা। ধূমকেতু এক্সপ্রেস ২০ মিনিট দেরিতে ছাড়লেও বাকি ট্রেনগুলো মোটামুটি কাছাকাছি সময় কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে। সকাল ৮টা পর্যন্ত আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেনসহ ১০টি ট্রেনের মধ্যে ৮টি ট্রেন রাজধানী ছেড়েছে। অতপর পারাবত এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, এগারসিন্ধু প্রভাতী, তিস্তা এক্সপ্রেস চলে যায়।
তবে এবার অনলাইন জটিলতাসহ নানা কারণে সাধারণ যাত্রীদের খুব কম সংখ্যক মানুষ ট্রেনের টিকেট কাটতে পেরেছেন।
পশ্চিম রেলের বিশেষ আয়োজন : সড়ক পথের বিড়ম্বনা এড়াতে গত কয়েক বছর ধরেই ট্রেনে যাত্রির চাপ বাড়ছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের কথা চিন্তা করে রেলওয়ের পশ্চিম বিভাগ উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীদের জন্য নিয়মিত চলাচলকারী ট্রেনের পাশাপাশি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। রেলওয়ের পশ্চিম জোনের পরিবহন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকেই রেলের ঈদ যাত্রা শুরু হবে। ইতোমধ্যে ১৮ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চার দিন প্রতিদিন ২৬ হাজারের বেশি টিকিট ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চারদিনের লক্ষাধিক টিকিট শেষ ট্রেন যাত্রার আগে ২০ শতাংশ সিট নাম্বার ছাড়া (স্ট্যান্ডিং টিকিট) বিক্রি করা হবে বলে জানান তিনি। গত বছরের তুলনায় এ বছর রেলেও যাত্রি সংখ্যা বাড়বে। রেলের পশ্চিম জোনের পাকশি বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেগুলো রেলওয়ের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে প্রয়োজনীয় মেরামতের কাজ করা হয়েছে।
শিমুলিয়া-মঙ্গলমাঝি নৌরুটে ফেরি : নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী বিআডব্লিউটিসি ঈদে মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে শিমুলিয়া-মঙ্গলমাঝি নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু করেছে। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম আজ সকাল ৯ টায় শিমুলিয়া ফেরিঘাটে মোটরসাইকেল পারাপারে নিয়োজিত ফেরি ‘কলমিলতা’ ও ‘কুঞ্জলতায়’ পারাপার হওয়া মোটরসাইকেল চালক ও যাত্রীদের পারাপার পরিদর্শনে যান।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান, জেনারেল ম্যানেজার (বাণিজ্য) শেখ মু নাসিম ও জেনরেল ম্যানেজার মেরিন মো. হাসিমুর রহমান চৌধুরী এ সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। ঈদের পর ৩ দিন পর্যন্ত মোটরসাইকেল পারাপারে ফেরিগুলোকে নিয়োজিত রাখা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান চেয়ারম্যান।
অন্যদিকে, বিআইডব্লিউটিসির অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি মধুমতি গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা সদরঘাট (লালকুঠি) ঘাট থেকে ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠি-কাউখালী-হুলারহাট-চরখালি ও বড়মাছুয়ার উদ্দেশে ঈদযাত্রা শুরু করেছে।
সদরঘাটে যাত্রীর চাপ : পদ্মা সেতু চালুর পর সদরঘাটে লঞ্চের যাত্রী সংখ্যা কমে এসেছে। কয়েক মাস থেকে যাত্রীদের হাঁকডাক কম। তবে লঞ্চে বরিশালগামী যাত্রীর সংখ্যা কমলেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের অস্বাভাবিক চাপ শুরু হয়েছে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। গতকাল সদরঘাট টার্মিনালে দেখা গেল অনেকগুলো লঞ্চ দাঁড়িয়ে রয়েছে। শত শত যাত্রী বোচকা পোটরা নিয়ে লঞ্চে উঠছেন। শরিফউদ্দিন নামের এক যাত্রী জানান, তিনি ঈদ করতে বরিশাল যাচ্ছেন। সেখানে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে ঢাকা ফিরবেন। তিনি বলেন, এখনো মনে হচ্ছে লঞ্চে যাত্রী কম, তবে সন্ধ্যায় যাত্রীর সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। নৌ পরিবহন, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিদিন ৩ লাখ লোক হিসেবে ৯ দিনে গড়ে কমপক্ষে ২৭ লাখ লোক সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল দিয়ে বাড়ি যাবে। গতকাল মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশিস কুমার দে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেন।
অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে এবং ঝামেলামুক্ত ও নিরাপদ ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে জাতীয় কমিটি সরকারকে বিকল্প উপায়ে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর ঈদুল ফিতরে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ। এর মধ্যে ৩৭ দশমিক ৫০ লাখ (২৫ শতাংশ) নৌপথে যাতায়াত করে।
এতে বলা হয়, এর প্রায় শতভাগই উপকূলীয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের যাত্রী। নাগরিক সংগঠনটি জানায়, গত জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর চাঁদপুর বাদে উপকূলীয় জেলাগুলোর নৌপথে যাত্রীর হার প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। ফলে এই ঈদে লঞ্চে ৩০ লাখ মানুষ (মোট যাত্রীর ২০ শতাংশ) যাবেন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২৭ লাখ ঢাকা নদীবন্দর দিয়ে যাবেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!
মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ
৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের
বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে পুলিশ, এ জন্য আমরা লজ্জিত: আইজিপি
ব্রাহ্মণপাড়ায় পাঁচ দিনেও খোঁজ মিলেনি নিখোঁজ সোহাগের
কসবায় পাহাড় কাটার অপরাধে ২ জনের অর্থদণ্ড
নরসিংদীতে মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামকে বিদায় করে টিকে রইল খুলনা
পলাতক ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ফ্রিজে রাখা বাসি ভাতে উপকার দ্বিগুণ!
আ.লীগ দেশটাকে গোরস্থানে পরিণত করেছিল : জামায়াত আমির
সেনবাগে মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় ভাগ্নে নিহত : মামা আহত
কুষ্টিয়ায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গৃহবধুকে নির্যাতন
রাজশাহীর বাগমারায় পুকুর থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার
‘জনশক্তি’ নামে কোনও রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি : জাতীয় নাগরিক কমিটি
কুষ্টিয়ায় ট্রাক ও নছিমন সংঘর্ষে গরু ব্যবসায়ী নিহত
র্যাবকে সমাজে রাখা ঠিক হবেনা -রাজশাহীতে নূর খান
নওগাঁয় ৩ জনকে পিটিয়ে জখম, আহতদের উদ্ধার করলো পুলিশ
মাদারীপুরে গুড়ি বৃষ্টি আর হিমেল বাতাসে জনজীবন স্থবির
দুমকীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাঁধা