সোনালি ধানে কৃষকের হাসি
৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৮ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:২০ এএম
হাওরজুড়ে পাকা ধানের সোনালি হাসি। বৈশাখের উজ্জ্বল রোদে সেই হাসি সোনার মতোই ঝলমল করছে। এমন সোনার বৈশাখ বহু বছর দেখেনি এই এলাকার কৃষক। ঝড়, বৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢল এমন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। মাথার ওপর প্রখর রোদ। রোদ থেকে বাঁচতে কেউ মাথালা, কেউ গামছা মাথায় ধান কাটছেন। কৃষকের মাথার ঘাম নাক বেয়ে টপটপ করে ঝড়ে পড়ছে জমিতে। তারপরও মুখে ঝলমলে হাসি। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত অবদি চলছে সোনালি ফসল ঘরে তোলার কাজ। নারী-পুরুষসহ সব বয়সি লোকজন এখন ব্যস্ত। কৃষক ধান কাটা মাড়াই করে ধান শুকানোর জন্যে নির্দিষ্ট খলা বা খোলা জায়গায় নিয়ে আসেন। এরপর কৃষাণীরা ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার উপযোগী করেন। বৈশাখের এ আনন্দের সময়ে নারী-পুরুষ, ছেলে বুড়ো সবাই যেন একাকার।
এবার ধানের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক। একই সাথে আবহাওয়া ভালো থাকায় স্বস্তিতে ধান কাটছে কৃষক। গত কয়েকবছর ধরে এমন রোদ ঝলমল বৈশাখ পাননি হাওরবাসী। তাই হাওরে এখন ধান কাটার ধুম চলছে। কৃষকরা বলছেন, গত কয়েক বছর মেঘ-বৃষ্টির কারণে ধান কাটতে তাদের কষ্ট হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে কোমড় পানিতে নেমে ধান কেটেছে। পাহাড়ি ঢলে চোখের সামনে ক্ষেতের পাকা ধান তলিয়ে যেতে দেখেছে। তবে এবারের মতো রোদেলা ভালো বৈশাখ আগে কোনো বছর তারা পায়নি। এ বছর ধান কাটায় কোনো বৃষ্টি নেই, অনেক রোদ। ফলনও ভালো। তাই গরমে ঘাম ঝড়লেও ধান কাটতে ভালো লাগছে। অনুকূল আবহাওয়া পেয়ে হাওরে ধান কাটতে ব্যস্ত দিন পার করছেন তারা। ইতোমধ্যে কোনো হাওরের ৯০ ভাগ আবার কোনো হাওরের ৬০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ঝড় বৃষ্টি না এলে আর ৪/৫ দিনের মধ্যে হাওরবাসী মাঠের পুরো ধান গোলায় তুলতে পারবেন।
হাওর এলাকার ধান কাটার সার্বিক তথ্য নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট নিচে তুলে ধরা হলো।
সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, এ অঞ্চলের হাওরগুলোতে চলছে বোরো ধান কাটার ধুম। বৈশাখের শুরুতে ধান কাটা শুরু হলেও এখন বিস্তৃৃর্ণ হাওরজুড়ে দোল খাচ্ছে পাকা ধান। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে ‘ব্যাহত’ হচ্ছে ধান কাটা। এতে সময় মতো কৃষকের স্বপ্নের ধান গোলায় তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। এছাড়াও নামে মাত্র যেসকল শ্রমিক ধান কাটছেন তারাও মজুরি নিচ্ছেন অতিরিক্ত। যে কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বিভাগের সর্বত্র এমন চিত্র। তারপরএ থেমে নেই ধান কাটার ধুম। সেই সাথে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক-মহাজন। গেল বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফসলের ফলন হয়েছে বাম্পার। ইতোমধ্যে গড়ে ৬০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সিলেট অঞ্চলের উপপরিচালক ও তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান বলেন, সিলেটে হ্ওার এলাকায় ৮৬ শতাংশ, নন হাওরে ৫৯ শতাংশ সহ মোট ৭০.৩ শতাংশ ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে, মৌলীবাজারে হাওর এলাকায় ৯৫ শতাংশ, নন হাওরে ২৫ শর্তাশসহ মোট ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে ৫৭. ১ শতাংশ। হবিগঞ্জে হাওর এলাকায় ৭৬ শতাংশ, নন হাওরে ২৫ শতাংশসহ মোট কর্তন হয়েছে ৪৪.৭ শতাংশ ও সুনামগঞ্জে ৯৪ শতাংশ, নন হাওরে ৩৪ শতাংশসহ মোট কর্তন সম্পন্ন হয়েছে ৭৮.৪ শতাংশ। আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে হাওরের শতভাগ ধান কাটা মাড়াই হয়ে যাবে। এবার সিলেট অঞ্চলের হাওরগুলোতে প্রায় দুই হাজার হারভেস্টার ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ করছে বলে তিনি জানান।
চলতি মৌসুমে সিলেট বিভাগে ৪ লাখ ৯০ হাজার ৫৭৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় আবাদ হয়েছে সর্বোচ্চ। বর্তমানে সিলেটের ৪ জেলার হাওরে প্রায় দুই হাজার হারভেস্টার ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ করছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে এক হাজার হারভেস্টার রয়েছে।
হাওরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের ঘামঝরা কষ্টের সোনালি ফসল ইরি-বোরো ধান কাটা মাড়াই চলছে। বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে ধান কাটা মাড়াইয়েও। শ্রমিক দিয়ে ধান কাটার সেই পুরোনো প্রথা ভেঙে ধান কাটায় যোগ হয়েছে আধুনিক কৃষি যন্ত্র হারভেস্টার বা ধান কাটার মেশিন। ছোট বড় সকল হাওরেই মেশিন দিয়ে ধান কাটা মাড়াই চলছে। অবশ্য, এখনো শ্রমিক দিয়ে ধান কাটার প্রথাও আছে। তবে, হাওরে আগের মতো এখন আর ধান কাটার শ্রমিক দেখা যাচ্ছে না। এবার ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটা দেখা দেয়ায় ফলন কম হয়েছে। এর বাইরে মোটা জাতের হাইব্রিড ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গেল বছরের চেয়ে এবার ফলন ভালো হয়েছে ব্রি-২৯ জাতের ধানেরও। কিছু কিছু এলাকায় শিলা বৃষ্টির ফলে সামান্য ক্ষতি হলেও সার্বিক দিক বিবেচনায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন খান বলেন, ৩/৪ দিনের মধ্যে হাওরের ধান শতভাগ কাটা হয়ে যাবে। কিন্তু উঁচু জমির ধান রয়ে যাবে। উঁচু জমির ধান কাটা শেষ হতে আরও সপ্তাহ দুই সময় লেগে যাবে। হাওরের ধান কাটায় শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় সরকার ভর্তুকি দিয়ে হারভেস্টার বিতরণ করায় কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন।
হবিগঞ্জ থেকে মো: ফজলুর রহমান, উৎসবমুখর পরিবেশে এ এলাকায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় কৃষক স্বচ্ছন্দ্যে ধান কেটে ঘরে তুলছেন। চলতি মৌসুমে হবিগঞ্জ জেলায় ৫ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। হবিগঞ্চে বাম্পার ফলনে কৃষকরা খুশি। যেসব ক্ষেতের ধান বেশি পেকেছে সেইসব ক্ষেতের ধান আগে কাটছেন কৃষকরা। তবে ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সার্বিকভাবে হবিগঞ্জ জেলার হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক। হাওরে ধানের খলায় কাজ করছেন কৃষক-শ্রমিক, নারীরা। কোনো কোনো হাওরে ধান কাটা, মাড়াই চলছে মেশিনের মাধ্যমে। আবার কোনো এলাকায় শ্রমিকরা ধান কাটছে, মাড়াই করছেন সনাতন পদ্ধতিতে। তবে এবার ধান কাটা শ্রমিক সংকট নেই। জেলায় ৪২৯টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও ১ হাজার ৫০টি রিপার মেশিন দিয়ে বোরো চাষীরা ধান কাটা ও মাড়াই করছেন। কৃষকরা জানান, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর পরিমাণ কম। তাই সার্বিক বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত সোনালি ফসল সঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবে।
নেত্রকোনা থেকে এ কে এম আব্দুল্লাহ জানান, ইরি বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত হাওরে ৯৬ ভাগ এবং উঁচু এলাকায় ২৮ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ৮/১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে এবং কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা অকাল বন্যা ও ঝড়, শিলাবৃষ্টির হাত থেকে ফসল রক্ষা এবং আগাম ফলনের আশায় নেত্রকোনার কৃষকরা তাদের জমিতে ব্রি-২৮ ধান ও ব্রি-২৯ ধান চাষ করেছিল। হাওরাঞ্চলে বেশ কিছু জমির ব্রি-২৮ ধান ব্লাস্ট রোগে ছিটা হওয়ায় এবং শিলাবৃষ্টির কারণে ধান জমিতে ঝড়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকের কপাল পুড়েছে। লাভের আশায় তারা এখন লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। এতে সারা বছরের খোরাকী এবং ঋণ পরিশোধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা। তবে ব্রি-২৯ ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনা জেলায় চলতি ইরি-বোরো মওসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪ শত ৭০ হেক্টর জমি। শেষ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬ শত ৯০ হেক্টর জমি। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ১১ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন এবং চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৭৭৫ মেট্রিক টন।
খালিয়াজুরী উপজেলার লেপসিয়া গ্রামের রহমত আলী বলেন, আমি প্রায় ৩৫ কাটা জমিতে ব্রি-২৮ ধান ও ৬০ কাটা জমিতে ব্রি-২৯ ধান করেছিলাম। ব্রি-২৮ ধান ছিটা হয়েছে। তবে ব্রি-২৯ ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ থেকে মো. হাসান চৌধুরী জানান, জেলায় ৩ লাখ ৫০ হাজার কৃষকের গোলায় ৩ হাজার ৮শ’ কোটি টাকার ধান উঠেছে। জেলার ১২ উপজেলায় ১৫৪টি হাওরে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ৭ এপ্রিল ধান কাটা শুরু ২৯ এপ্রিল প্রায় কাটা-মাড়াই শেষদিকে। চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনে সুনামগঞ্জের গেল বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে এবার ঘুরে দাঁড়িয়ে ওঠার কথা কৃষকের। হাওরজুড়ে এতো ধান, কিন্তু জেলার হাট-বাজারে ধানের দাম পাচ্ছেন না কৃষক।
জেলার ১২ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিমণ ধান ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে সরকারের দেয়া দর থেকে ১শ’ পঞ্চাশ থেকে ২শ’ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বছরই সার-বীজ, সেচ, ডিজেল ও কৃষি পণ্যমূলের বৃদ্ধি সাথে ধান উৎপাদন খরচ ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও ধানের উৎপাদন খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। কৃষকের ১ কেদার জমির উৎপাদন খরচ ক্ষেত্র বিশেষে ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা আর কৃষক যে ধান পাচ্ছেন তার বাজারদর ১২ হাজার টাকা। জেলা কৃষক লীগের সভাপতি শান্তি মিয়া বলেন, ধানসহ সকল কৃষির পণ্যমূল্য নিশ্চিত ও দ্রব্যমূলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ধানের দাম বৃদ্ধির দাবি জানান।
সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ থেকে জানা য়ায়, এবার ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মে. টন। যা চালের পরিমাণে দাঁড়ায় ৯ লাখ ২ হাজার মে. টন। আর টাকার অংকে প্রায় ৩ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা।
জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের মশল ঘাট গ্রামের বাসিন্দা মাসুক মিয়া বলেন, হাওরে এবার তিনি ১৬ কেদার জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা শেষ করেছেন। প্রতি কেদারে ১০/১২ মণ করে ধান পাওয়ার আশা করছেন। এবার হাওরের ফসল ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম।
কিশোরগঞ্জ থেকে নাছিম খান জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কোনো ধরনের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেয়ায় কিশোরগঞ্জ হাওরাঞ্চলসহ ১৩টি উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ। এক মণ ধান উৎপাদনে প্রায় এক হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা মণ দরে।
করিমগঞ্জ উপজেলার বড় হাওর, সুতারপাড়া, সাগুলি, ইটনার তেলনি, কয়রা, বড়বাড়ি হাওর এলাকা ঘুরে কথা হয়েছে বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে। বড় হাওরের কৃষক ধনু মিঞা বলেন, করিমগঞ্জের বড় হাওড় এলাকায় প্রতি কানি (৩৬ শতাংশ) জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। প্রতি কানিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। গড়ে ২৪ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। ইটনার তেলনি এলাকার কৃষক গনি মিঞা বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো ছিল। প্রকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু ধানের দাম উৎপাদন মূল্যের চেয়ে কম থাকায় কৃষকরা হতাশ। করিমগঞ্জের জয়কা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর জানান, বড় হাওর ব্রি ২৯ বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ব্রি-২৮ ধানের ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষকদের বোরো ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ধানের বর্তমান বাজার মূল্য কম থাকায় কৃষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর এ জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪২০ হেক্টর। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ধান কাটার শ্রমিক এবং সরকারীভাবে ভর্তুকিত ৫৭০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বোরো ধান কাটার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
কিশোরগঞ্জের নিকলী থেকে মো: হেলাল উদ্দিন জানান, এ এলাকার হাওরে বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা কৃষকরা জমির ধান কেটে এবং রুদ্রে শুকিয়ে আনন্দের সাথে গোলায় তুলতে পারছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় ধান ও খড় একসাথে শুকাতে পারছে। নিম্ন এলাকা হাওর থেকে নদীপথে নৌকা এবং ট্রাকে করে বাড়িতে ধান নিয়ে আসতে পারায় কৃষক পরিবারের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা, মাড়াই আর পরিবহনে ব্যস্ত কৃষকরা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিএনপি ক্ষমতায় এলে নদী ভাঙনের স্থায়ী সমাধান হবে : কৃষক দল
আবারও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা ইসরাইলের
রাউজানে এমপির জানালাবিহীন ‘আয়নাঘর’, মাটির নিচে চলত নির্যাতন-হত্যা
ভেজাল চায়ে চুমুক দিচ্ছেন না তো? এই সহজ উপায়ে চিনে নিন খাঁটি চা
হিলিতে বিভিন্ন পূজা মন্ডব পরিদর্শনে বিএনপির নেতাকর্মীরা
১৭ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা বোয়িং-এর
পাকিস্তানে কয়লা খনিতে হামলা,তেহরানের তীব্র নিন্দা
১০০ বছর পর এভারেস্ট পর্বতারোহীর দেহাবশেষ উদ্ধার
ব্যবহারকারীদের ‘ক্ষতি ও সুরক্ষা’ দিতে ব্যর্থ টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা
ইরানের তেল খাতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের সমাপ্তি চায় ইউক্রেন
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানালো জাতিসংঘ
গণহত্যাকারী ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করলো নিকারাগুয়া
ইমরানের মুক্তির দাবিতে পিটিআই এর বিক্ষোভের ঘোষণা
এক ঘণ্টায় ইসরায়েলে ১০০ রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ৫৪ বছর ধরে একই আঙিনায় চলছে নামাজ ও পূজা
ভারতীয় দুই নাগরিক আটক
যশোরে সাবেক এমপিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আজ মধ্যরাত থেকে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু
বাখরাবাদ পাইপলাইন প্রকল্প পরিদর্শন জ্বালানি উপদেষ্টার