প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে অর্জন শূন্য
০৩ মে ২০২৩, ১১:২০ পিএম | আপডেট: ০৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর চলমান সফরে অর্জন শূণ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরের অনুষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার মিথ্যা প্রচারণা করছে যে তাদের এই সফরটা অত্যন্ত সফল হয়েছে।
তারা বলছে যে, আইএমএফ বলেছে, সমৃদ্ধির জন্য তার (শেখ হাসিনা) নেতৃত্ব প্রয়োজন। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। আমরা ইতোমধ্যে কাগজপত্র দেখেছি, তারা (আইএমএফ) ইতোমধ্যে একটা স্টেটমেন্ট পর্যন্ত দিয়েছে যে, আমরা (আইএমএফ) এই কথা বলিনি, শুধুমাত্র তার সঙ্গে মিটিংয়ের কথা বলেছি।একভাবেই বিশ্বব্যাংকের ঋণ পূর্ব নির্ধারিত। আগেই কথা হয়েছে যে তারা এই ঋণ দেবো। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে এচিভমেন্ট ইজ জিরো (অর্জন শূন্য)।
গতকাল বুধবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি সরকার মিথ্যা কথা বলে, পুরোপুরিভাবে মিথ্যা প্রচারণা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। যেহেতু তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, এই ধরণের মিথ্যা গোয়েবলসী প্রচার করে। তবে ওই মিথ্যা কথা বলে মানুষকে একদিন-দুইদিন বোকা বানানো যায়, কিন্তু বেশিদিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। আওয়ামী লীগ সেই কাজটাই করে যাচ্ছে। এবার তারা ব্যর্থ হবে। কারণ জনগণ তাদের মিথ্যাচার বুঝে গেছে, ঝারি-ঝুড়ি বুঝে গেছে, জনগণ তাদেরকে সরিয়ে জনগণের একটা শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তিন দেশ সফরকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো বা পুরো বিষয়টা হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। এই সমস্ত সফর, ধানাই-পানাই করা। এসব করে কোনো লাভ হবে না। কিন্তু জনগণের লক্ষ্য একটাই, তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আইনের শাসনকে ফিরিয়ে আনতে হবে। জনগণ যেন সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক সমাজে বাস করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
সংলাপ নয়, ফয়সালা হবে রাজপথে:
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়েস অব আমেরিকা’য় এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সাথে সংলাপ করতে চান না বলে যে মন্তব্য করেছেন এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো তাদের সাথে আলোচনা করতে চাইনি। কারণ আমাদের যে পূর্ব অভিজ্ঞতা সেই অভিজ্ঞতা তো, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার যুক্তি থাকতে পারে না। তারা পুরোপুরিভাবে মিথ্যা কথা বলে এবং তারা বিট্রে করে, বিশ্বাসঘাতকতা করে জাতির সঙ্গে। সেই কারণে জনগণের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জনগণ রাজপথে ফয়সালা করে নেবে।
বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাস করে- যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এরকম বক্তব্যে জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অগ্নি সন্ত্রাসের ধারক-বাহক আওয়ামী লীগই। তারাই অগ্নি সন্ত্রাস শুরু করেছে, তারাই এটা কনটিনিউ করে, নিজেরা করে উদোর-পিন্ডি বুদোর ঘাঁড়ে চাপায়। এখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে জন্ম এবং সন্ত্রাস করেই তারা টিকে থাকে। তাদের বডি কেমেস্ট্রিতে দুই জিনিস আছে। একটা সন্ত্রাস আরেকটা দুর্নীতি। এই দুইটা ছেড়ে তারা থাকতে পারে না।
সকাল ১১টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এলডিপির চেয়ারম্যান আসেন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধাদ্বার বৈঠক করেন। এই বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের পর অলি আহমেদ বলেন, আজকে ১৪/১৫ বছর যাবৎ নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ শাসন করছে না। একদলীয় শাসনের অধিনে আমরা বর্তমানে আছি। এই অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য বিএনপির নেতৃত্বে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন দেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির করার জন্য। এদেশের জনগণের মুক্তি যতদিন না হয় আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) চাচ্ছে, যেকোনো প্রকারে একটা নির্বাচন করার জন্য। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণমূলক হবে, অবাধ, সুষ্ঠু হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। একদিন আওয়ামী লীগ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে ১৯৯৬ সালে জনগণের সম্মুখে এসেছিলো। এই দাবি নতুন কিছু নয়। আওয়ামী লীগের এই দাবি অস্বীকার করার উপায় নেই, এটা একদিন তাদেরই দাবি ছিলো।
এলডিপির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সেই দাবি নিয়ে জনগণের সম্মুখে এসেছি। আমরা চাই জনগণ প্রত্যেকে নিজের ভোট নিজে দিয়ে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। আগামীতে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এদেশ পরিচালনা করবে, একদলীয় শাসন থেকে জনগণ মুক্ত হবে, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার এলডিপির লিয়াজোঁ কমিটির সাথে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বিকাল ৪টায়। ইতোমধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য, ১২ দলীয় জোট এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এর সাথে বৈঠক করেছে বিএনপি।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
দুদক কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া কর্মকর্তা রিমান্ডে, হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ রিমান্ডে,
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
কুরস্কে ২৪ ঘন্টায় ইউক্রেনের ৪৮৫ সেনা নিহত
পশ্চিম তীরে বন্দুক হামলায় ৩ ইসরাইলি নিহত
ঢাবিতে হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ প্রদর্শনী
জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি
ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে
মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে
গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র
মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা
ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ
পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের
অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল
গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ-কুকুর
শত্রুদের যে বার্তা দিলেন কিম