নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও পুলিশি তল্লাশির ঘটনায় বিএনপির নিন্দা
০৫ মে ২০২৩, ১০:৪১ পিএম | আপডেট: ০৬ মে ২০২৩, ১২:০১ এএম
সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেনের কাছে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী পক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেন। গতকাল দরগাহে হযরত শাহজালাল জামে মসজিদে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় শেষে বিএনপি নেতার সাথে কুশল বিনিময় কালে ভোট চান।
এদিকে, সিলেটসহ পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি রয়েছে। সেকারণে সিসিক নির্বাচন নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। দলের নেতাকর্মীরাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, আসলে তিনি নির্বাচন করবেন কি না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন এটা অনেকটা নিশ্চিত হলেও গত দুই-তিন দিন ধরে অনেকটা সুর পাল্টে গেছে অনেকের। শেষ পর্যন্ত আরিফ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। মেয়র পদে আরিফুলের বিষয়টি স্পষ্ট না হলেও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পদধারীসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদে মাঠে রয়েছেন।
মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বর্তমান মেয়র বলেন, ২০ মে’র আগে কিছু বলতে চাই না। তবে যেহেতু আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত, সেহেতু তাদের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইন বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যের ফলে অবশ্যই দল থেকে বহিষ্কার হবেন। মেয়র আরিফুল নির্বাচন করবেন কি না তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিয়ে তিনি বলেন, আরিফ নিজেই এর ব্যাখ্যা দেবেন। কারণ দল নির্বাচনে যাচ্ছে না সেটি ভালোভাবে জানেন তিনি। কিন্তু এ অবস্থার পরও কোনো উস্কানি ছাড়াই সিলেটজুড়ে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, বাসা-বাড়ি, দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এহেন ঘটনার অভিযোগ এনে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে আটককৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, গ্রেফতার-নির্যাতন ও পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
এক বিবৃতিকে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়াই গত মঙ্গলবার নগরীতে ছাত্রদলের একটি মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে ৮ জন দলীয় নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের মাধ্যমে সিলেটের রাজনৈতিক ময়দানকে উত্তপ্ত করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরপর থেকে নগরজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। রাতের আঁধারে পুলিশি তল্লাশির নামে দলীয় নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে ব্যাপক তা-ব চালানো হচ্ছে। সিলেটের রাজনৈতিক ময়দানকে উত্তপ্ত করার পরিণতি কারো জন্য মঙ্গলজনক হবে না। তারা বলেন, গত বুধবার দিবাগত রাতে সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. বদরুল ইসলাম, সদর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আলীমুর, ছাত্রদল নেতা ইমন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক মীর্জা হাবিব ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ লাহিনকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপরদিকে একই দিনে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লোকমানুজ্জামান ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আহমদসহ অনেক দলীয় নেতাকর্মীর বাসা-বাড়িতে পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হয়েছে। তারা আরো বলেন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ডা. বদরুল ইসলামকে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ৮টায় দক্ষিণ সুরমার খোজারখলাস্থ নিজ ফার্মেসি থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু পুলিশ আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল। শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ২০২২ সালের একটি পুরনো মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে চালান করা হয়।
এদিকে নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। অথচ এসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা নেই। পুরনো রাজনৈতিক সকল মামলায় জামিনে থাকার পরও তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাসা-বাড়ি তল্লাশির নামে তা-ব চলছে। শুধু তাই নয়, বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পর আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে কয়েক ঘণ্টা পর তাদের গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। এতে আটক নেতাকর্মীদের পরিবারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারের দলীয় লাঠিয়াল বাহিনীর মতো আচরণ করছে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। অবিলম্বে আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন। ধরপাকড়, গ্রেফতার, নির্যাতন ও বাসা-বাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। হামলা-মামলা-নির্যাতন চালিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫
ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের
নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত
সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প
আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ
মার্চের মধ্যে রাষ্ট্র-সংস্কার কাজ শেষ হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
জামালপুরে দুই ইজিবাইকের চাপায় সাংবাদিক নুরুল হকের মৃত্যু
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইনের সামরিক সদর দফতরের দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি
ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩২
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ সিরিয়ায়
ঘনকুয়াশায় ৩ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু
গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে
কনসার্ট মঞ্চে স্বৈরাচার হাসিনার বিচার দাবি
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ১৪ ফিলিস্তিনি
ঘনকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে: ইয়াকুব চৌধুরী