ঢাকা   সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪ | ২৭ কার্তিক ১৪৩১

পাহাড়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৬

Daily Inqilab টেকনাফ (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা

০৬ মে ২০২৩, ১০:১৫ পিএম | আপডেট: ০৭ মে ২০২৩, ১২:০৩ এএম

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার পাহাড়ি এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দুর্গম পাহাড় কেন্দ্রিক বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও ডাকাতির অন্যতম অন্যতম মূলহোতা ছালেহ বাহিনীর প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে ছলে উদ্দিনসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। এসময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, গত শুক্রবার রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে টেকনাফের বাহারছড়া পাহাড় এলাকায় র‌্যাবের অভিযানে টেকনাফের দুর্গম পাহাড় কেন্দ্রিক বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অন্যতম হোতা হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ উদ্দিন ছলে ডাকাত ও তার সহযোগী নুরুল আলম ওরফে নুরু, আক্তার কামাল ওরফে সোহেল, ওরফে নুরুল আলম ওরফে লালু, হারুনুর রশিদ এবং রিয়াজ উদ্দিন ওরফে বাপ্পিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি এসবিবিএল রাইফেল, ২টি ওয়ান শুটার গান, ৬টি দেশিয় তৈরি বন্দুক, ৫ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৪ রাউন্ড খালি কার্তুজ, ২টি ধারালো ছুরি, ৬টি দেশীয় তৈরি দা ও ৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে হাফিজুর রহমান ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে এই চক্রটি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার এই সন্ত্রাসী দলে সদস্য সংখ্যা ১২-১৫ জন। ছালেহ এর নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী দলটি টেকনাফের শালবাগান পাহাড়, জুম্মা পাড়া ও ন্যাচার পার্ক এলাকা, বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়া পাহাড়, বড় ডেইল পাহাড়, কচ্ছপিয়া পাহাড়, জাহাজপুরা পাহাড়, মাদারবনিয়া পাহাড়, হলবনিয়া পাহাড়, শিলখালী পাহাড় এলাকায় অবস্থান করে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করত। কখনও অটোরিকশার বা সিএনজি চালক হিসেবে ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন কৌশলে তারা কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা, হোয়াইক্যং, উনচিপ্রাং, শামলাপুর, জাদিমোড়া ও টেকনাফ ইত্যাদি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের টার্গেট করে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায় ও ডাকাতি করত।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, ছালের নেতৃত্বে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া এলাকা থেকে
১০ জন কৃষক, চলতি বছরের ২ জানুয়ারী রোহিঙ্গা শরনার্থী রেজুয়ানা, ২৬ মার্চ ন্যাচার পার্কের দর্শনার্থী হ্নীলার দদমিয়ার বাসিন্দা কবির আহাম্মদের ছেলে রিদুয়ান সবুজ ও একই এলাকার বাসিন্দা মাওলানা আবুল কালামের ছেলে নুরুল মোস্তফা, ১৫ এপ্রিল ফুলের ডেইল এলাকা থেকে বাবুল মেম্বারের ছেলে ফয়সাল, ৩০ এপ্রিল হামিদুল্লাহ এবং ৩ মে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭ ব্লক- ই/৬ এ বসবাসরত আবুল কালামসহ অনেক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে ছেড়ে দেয় চক্রটি।
উল্লেখ্য, তারা অপহৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতি ৫-১০ লাখ টাকা ক্ষেত্র বিশেষে তার চেয়ে কম-বেশি মুক্তিপণ আদায় করত। মুক্তিপণের টাকা আদায় করে অপহৃত ব্যক্তির ওপর চালানো হত পৈশাচিক নির্যাতন। প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার কারণে মুক্তিপণের অর্থ প্রদান করে ফেরত আসা অধিকাংশরাই অপহরণ কারীদের সম্পর্কে অভিযোগ দিতে বা মুখ খুলতে ভয় পেত। এ সন্ত্রাসী দল কর্তৃক প্রায় অর্ধ-শতাধিক অপহৃত হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।
র‌্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ছালেহ উদ্দিন ওরফে ছালে ডাকাতের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির তাগিদ
মেট্রোরেল স্টেশন থেকে সরলো হাসিনার ছবি
নগর পরিবহনে যুক্ত হলেই ঢাকায় চলতে পারবে বাস
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ৫৪ লাখ কর্মীর চাকরি হারানোর শঙ্কা
সংখ্যানুপাতিক নয় বর্তমান সিস্টেমেই ভোট চান সাবেক সিইসি আবু হেনা
আরও

আরও পড়ুন

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির তাগিদ

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির তাগিদ

মেট্রোরেল স্টেশন থেকে সরলো হাসিনার ছবি

মেট্রোরেল স্টেশন থেকে সরলো হাসিনার ছবি

নগর পরিবহনে যুক্ত হলেই ঢাকায় চলতে পারবে বাস

নগর পরিবহনে যুক্ত হলেই ঢাকায় চলতে পারবে বাস

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ৫৪ লাখ কর্মীর চাকরি হারানোর শঙ্কা

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ৫৪ লাখ কর্মীর চাকরি হারানোর শঙ্কা

প্রতিরক্ষা নিয়ে আলোচনার জন্য ইরান সফরে সউদী সেনাপ্রধান

প্রতিরক্ষা নিয়ে আলোচনার জন্য ইরান সফরে সউদী সেনাপ্রধান

সংখ্যানুপাতিক নয় বর্তমান সিস্টেমেই ভোট চান সাবেক সিইসি আবু হেনা

সংখ্যানুপাতিক নয় বর্তমান সিস্টেমেই ভোট চান সাবেক সিইসি আবু হেনা

মনির-হাবিব-হারুনের প্রেতাত্মারা এখনও বহাল পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে

মনির-হাবিব-হারুনের প্রেতাত্মারা এখনও বহাল পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে

জাবিতে রাতভর কনসার্ট: 'নেশাগ্রস্ত' অবস্থায় মারধরের অভিযোগ

জাবিতে রাতভর কনসার্ট: 'নেশাগ্রস্ত' অবস্থায় মারধরের অভিযোগ

আখাউড়া প্রেসক্লাব সভাপতির পিতার ইন্তেকাল! সাংবাদিকদের শোক প্রকাশ

আখাউড়া প্রেসক্লাব সভাপতির পিতার ইন্তেকাল! সাংবাদিকদের শোক প্রকাশ

ওমরজাই-গুরবাজ জুটির ৫০

ওমরজাই-গুরবাজ জুটির ৫০

কোন অপশক্তি নেই, রুখতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অগ্রযাত্রা - দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম

কোন অপশক্তি নেই, রুখতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অগ্রযাত্রা - দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম

মুস্তাফিজের দ্বিতীয় আঘাত

মুস্তাফিজের দ্বিতীয় আঘাত

যশোরের যবিপ্রবি এলাকা থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক

যশোরের যবিপ্রবি এলাকা থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক

যশোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে মাদকসহ আটক ১

যশোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে মাদকসহ আটক ১

যশোরের শার্শায় জাহাঙ্গীর মেম্বারের ক্ষমতার দাপট, পুলিশ নিরব

যশোরের শার্শায় জাহাঙ্গীর মেম্বারের ক্ষমতার দাপট, পুলিশ নিরব

রহমতকে ফেরালেন মুস্তাফিজ

রহমতকে ফেরালেন মুস্তাফিজ

নোয়াখালী আদালতের নতুন পিপি শাহাদৎ, জিপি নুরুল আমিন

নোয়াখালী আদালতের নতুন পিপি শাহাদৎ, জিপি নুরুল আমিন

ঢাকায় স্বামীর আত্মহত্যার ৪৮ঘণ্টার পর যশোরে গলায় ফাঁস দিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা

ঢাকায় স্বামীর আত্মহত্যার ৪৮ঘণ্টার পর যশোরে গলায় ফাঁস দিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা

স্কুল হ্যান্ডবলে সেরা সানিডেল-ভিকারুননিসা

স্কুল হ্যান্ডবলে সেরা সানিডেল-ভিকারুননিসা

জাতীয় সাঁতারের তৃতীয় দিন নৌবাহিনীর এক রেকর্ড

জাতীয় সাঁতারের তৃতীয় দিন নৌবাহিনীর এক রেকর্ড