নানা পর্যবেক্ষক থাকলেও জনসাধাণের আগ্রহ নেই
০৬ মে ২০২৩, ১০:২০ পিএম | আপডেট: ০৭ মে ২০২৩, ১২:০৩ এএম
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৫ম নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের প্রায় ১০ দিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে বিষয়টি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে আলোচনায় এলেও সাধারণ ভোটারসহ জনসাধারণ মাঝে তেমন উৎসাহ বা আগ্রহ লক্ষ্যণীয় নয়। তবে সাধারণ ভোটারদের মাঝে এ নির্বাচন নিয়ে যে কৌতুহল ছিল, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নের মধ্যে দিয়ে তা ইতোমধ্যে কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত হবার পরে এ নির্বাচন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ লক্ষণীয় নয়। সাধারণ ভোটারদের অনেকেই এমন মন্তব্যও করছেন যে, ‘প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করণের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগসহ গণতন্ত্র ও জনসাধারণের প্রাথমিক বিজয় সূচিত হয়েছে। এখন প্রধান বিরোধী দলকে ভোটের মাঠে আনা এবং একটি নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার, সরকারি দল ও নির্বাচন কমিশন কতটা সাফল্য লাভ করে, তা দেখার অপেক্ষায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলসহ সাধারণ মানুষও।
আগামী ১২ জুন খুলনার সাথে বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের আবুল খয়ের আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস ও ইসলামী আন্দোলনের মুফতি ফয়জুল করিমকে স্ব-স্ব দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে এসব প্রার্থীদের ভোটের লড়াইয়ে থাকা না থাকার চেয়েও সাধারণ মানুষের কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে আছে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টি। বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সিটি মেয়র ও একাধিকবারের এমপি মুজিবুর রহমান সারোয়ার ‘দল বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না’ বলে সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন।
অপরদিকে বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন না পাওয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগসহ তার অনুসারী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর অনুসারীরা ১২ জুনের ভোটের মাঠে থাকার ক্ষেত্রেও আগ্রহী নয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে সাদিক ও আবুল হাসনাতের মহানগর ও জেলা কমিটির তেমন কোনো নেতাকেই রাখা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধের সুযোগে একটি মহলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উৎসাহে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে আকষ্মিকভাবেই মুফতি ফয়জুল করিম প্রার্থী হয়েছেন বলেও বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গণে বহুল প্রচারিত হলেও দলটির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। মুফতি ফয়জুল করিম ২০০৮-এর সংসদ নির্বাচনেও বরিশাল সদর আসনে প্রার্থী হয়ে এযাবতকালের সর্বোচ্চ প্রায় ৩৩ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। সেনা সমর্থক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনের ঐ নির্বাচনে বিএনপি ঠেকাতে একটি প্রভাবশালী মহল ইসলামী আন্দোলনকে যথেষ্ঠ সহযোগীতা ও উৎসাহ প্রদান করে বলে প্রচারিত ছিল।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ গত শুক্রবার বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের এক অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে নৌকার প্রার্থী, তার চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন। দলের মনোনয়ন চূড়ান্ত হবার পরে তিনি বরিশালে না এলেও এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানালেন।
তবে আবুল খায়েরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনো নেতাকে না রেখে সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম শওকত হোসেন হিরনের অনুসারী ও এতদিন সাদেকের কাছে কোনঠাসাদের রাখায়ও অনেক কথা উঠেছে। আবুল খায়েরের ঘনিষ্ঠজনদের মতে, সাদেকের অনুসারীদের আসন্ন নির্বাচনী কোনো কর্মকান্ডে জড়িত করলে একদিকে জনগণের আস্থা অর্জন করা যাবে না, অপরদিকে এদের অনেকেই গোপন ষড়যন্ত্র করে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় নিশ্চিত করারও চেষ্টা করতে পারে।
এদিকে আবুল খায়ের গতকাল শনিবারেও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে সবার দোয়া চেয়েছেন। তার সহধর্মীনিও নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে নারী কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করছেন।
এদিকে গতকাল শনিবারও জাতীয় পার্টি প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক প্রচারণায় ছিলেন। এখনো তিনি বিধি-বিধান মেনে সবার কাছে দোয়া চাচ্ছেন।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতী ফয়জুল করিম সোমবার রাজধানী থেকে বরিশালে পৌঁছার পরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেবেন দলীয় নেতাকর্মীরা। মুফতী ছাহেবকে নিয়ে নগরীতে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাসহ বড় ধরনের শোডাউনের মাধ্যমে দলটির অবস্থান জানান দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে নেতা-কর্মীদের।
আগামী ১৬ মে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হবার পরে ১৮ মে তা বাছাই করা হবে। প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ মে। প্রতীক বরাদ্দের পরে ২৭ মে থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ করা হবে ১২ জুন। তবে প্রধান বিরোধী দল এ নির্বাচনে অংশ না নিলে এ মহানগরীর কতভাগ ভোটার ভোটে কেন্দ্রে যাবেন বা যেতে পারবেন, তা দেখার অপেক্ষা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলও।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ব্রাহ্মণপাড়ায় ট্রাক্টরের চাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু আহত ২ জন এলাকায় শোকের ছায়া
কুরআন শিক্ষা বোর্ড ঢাকা মহানগর উত্তরের নগর সম্মেলন অনুষ্ঠিত
এবি ব্যাংক পিএলসি. এর "বিজনেস রিভিউ মিটিং" অনুষ্ঠিত
উথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী লাইফ
নেতাকর্মীদের রেখে লক্ষণ সেনের মত পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার: ব্যারিস্টার সালাম
অভিনেতা অপূর্বকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচার
বরিশালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অংশীজন সভায় প্রধান প্রকৌশলী
দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস
সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে
‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’
‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’
মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর
৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী
আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারতে: দুলু
মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?
পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ
ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!
মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ
৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের
বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে পুলিশ, এ জন্য আমরা লজ্জিত: আইজিপি