জালিয়াতি মামলায় জালিয়াতির অভিযোগ
০৬ মে ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম | আপডেট: ০৭ মে ২০২৩, ১২:০৩ এএম
এবার আইনমন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলায় অভিযোগ উঠেছে জালিয়াতির । আদালতকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে আইনমন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই এ ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে সেই মামলায় জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ ওঠে খোদ বাদীর বিরুদ্ধেই। ঘটনাটি গত ১২ জানুযারি ঢাকার সিএমএম আদালতের।
এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে একটি সি.আর. (নালিশী) মামলা (নং-৩৮৫/১৪) হয়। মামলার আসামি করা হয় জনৈক মো. মোজাম্মেল হককে। এ মামলার চার্জ গঠনের তারিখ ছিল ওই বছর ১৯ নভেম্বর। আগে থেকেই শর্তযুক্ত জামিনে থাকা আসামি চার্জ গঠনের দিনও পুনরায় জামিন প্রার্থনা করেন। মামলার বাদী মেসার্স ওমর এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সাকিল রানা (৩০)। তিনি নারায়ণগঞ্জ সোনার গাঁও থানাধীন টিপুরদি গ্রামের হাজী মো. জামালউদ্দিনের পুত্র। বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামির জামিনের বিরোধিতা করেন। জামিন শুনানি চলাকালে আদালতে কিছু কাগজপত্র দাখিল করেন। এসব কাগজে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সুপারিশ সম্বলিত স্বাক্ষরও ছিল। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়। আদালত তৎক্ষণাত বাদী পক্ষের আইনজীবী মাহবুবুল আলম দুলালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু এই আইনজীবী জানান, আইনমন্ত্রীর সুপারিশ সম্বলিত কোনো কাগজপত্র দাখিলের বিষয়টি তিনি অবহিত নন। তখন বাদী জানান, আইনমন্ত্রীর এই সুপারিশ তার ভাই (নাম উল্লেখ নেই) জোগাড় করে দিয়েছেন। শুনানি শেষে বাদীর আবেদন নামঞ্জুর হয়। আদালত আসামি পক্ষের জামিন মঞ্জুর করেন। কথিত সুপারিশটির সত্যাসত্য তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে না পারায় বাদীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরবর্তীতে আইনমন্ত্রীর দফতর থেকে বিশ্বস্তসূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ওই স্বাক্ষরটি আইনমন্ত্রীর নয়। এ বিষয়ে বাদীর বিরুদ্ধে আইনমন্ত্রীর দফতরও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে ইচ্ছুক-মর্মে উল্লেখ করা হয় এজাহারে। বর্ণিত মামলার বাদী তার সহযোগীদের সহায়তায় মিথ্যাভাবে আইনমন্ত্রীর সুপারিশ ও সিল স্বাক্ষর জালপূর্বক আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে উক্ত অপরাধমূলক কর্মসংঘটন করেছেন বিধায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজুর অনুরোধ জানানো হয়। ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর যুগ্ম-মহানগর দায়রা ৪র্থ আদালত, ঢাকার বেঞ্চ সহকারী মো. ইউনূছ আলী বাদী হয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এজাহার (মামলা নং-১৮, তারিখ-২৭/১১/২০১৪ ইং) দায়ের করেন। এজাহারে আসামি করা হয় সেই সি আর মামলার বাদী মো. শাকিল রানাকে। প্রয়োগ করা হয় দ-বিধির-৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা। মামলা তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার এসআই মো. শাহিদুল হক । তিনি শাকিল রানাকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে তিনি ‘ অভিযোগকারী’ কিংবা ‘তথ্য প্রদানকারী’ হিসেবে তৎকালীন বেঞ্চ সহকারী, মো. ইউনূছ আলীর (যুগ্ম-মহানগর, ৪র্থ আদালত) নাম উল্লেখ করেন। কিন্তু সেখানে কৌশলে উমেদার আহসান হাবীবের ফোন নম্বর জুড়ে দেন। অন্যদিকে মামলার সাক্ষ্য প্রদানকালে এজাহারে উল্লেখিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিই এড়িয়ে যান। ইউনুছ আলী এজাহারে উল্লেখ করেন, আইনমন্ত্রীর সুপারিশ সম্বলিত স্বাক্ষরটি আসামি শাকিল রানার ভাই জোগাড় করে এনে দিয়েছেন। কিন্তু সাক্ষী ইউনূস আলী সাক্ষ্যে এ তথ্যটি চেপে যান। ফলে জালিয়াতচক্রের হোতাসহ অন্য সদস্যরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যান। চার্জশিট দাখিলের পর যথা নিয়মে আদালত চার্জ গঠন করেন এবং সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন। মামলার বাদী বা তথ্য প্রদানকারী হিসেবে নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বেঞ্চ সহকারী মো: ইউনূছ আলী গত ১২ জানুয়ারি সাক্ষ্য দেন। তখন দেখা যায়, বাদী আসামির পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে শাকিল রানা এবং জালিয়াতচক্রের অন্য সদস্যদের প্রসঙ্গ সাক্ষ্যে চেপে যান। অথচ এটি ছিল মামলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওই আদালতে সরকারপক্ষের কর্তব্যরত কৌঁসুলি (পিপি)ও রহস্যজনকভাবে এ বিষয়ে ইউনূসকে জেরা করেন নি। তার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এর ফলে আইনমন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতির মতো গুরুতর এই অপরাধের ফলাফল নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। সাক্ষ্য প্রদানকালে এজাহারে উল্লেখিত মূল বিষয়টি কেন সাক্ষ্যে এড়িয়ে যাওয়া হলো, মামলার বাদী মো: ইউনুছ আলীর কাছে জানার চেষ্টা করা হয়।
চার্জশিটে উল্লেখিত ইউনূছ আলীর মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে অপরপ্রাপ্ত থেকে জানানো হয়, আমি ইউনূছ আলী নই। রং নম্বর। পরে আবারও ফোন করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে এক নারী কণ্ঠ জানান, ইউনূছ আলী বাসায় নেই। পরক্ষণেই এক পুরুষকণ্ঠ পাল্টা ফোন করে বলেন, আমি ইউনুছ নই। আহসান হাবীব। উমেদার আহসান হাবীব। তিনি বলেন, এটিতো অনেক পুরনো মামলা। যতটা জানি ওটা শেষ হয়ে গেছে। তবে মামলাটি (নং-১৮১১১৪) ঢাকা জেলা এসিএমএম-৩ আদালতে এখন রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গোল উৎসবে বার্সার ছয়ে ছয়
রোনালদোর দ্রততম শত গোলের রেকর্ড ছুঁলেন হল্যান্ড
ঘটনাবহুল ড্রয়ে শেষ আর্সনাল-সিটি মহারণ
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল
‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’
হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী