কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের ছড়াছড়ি পরিবার-গোষ্ঠীতে সম্পর্কের ফাটল বিব্রত ভোটাররা!
০৭ মে ২০২৩, ১০:৩৩ পিএম | আপডেট: ০৮ মে ২০২৩, ১২:০১ এএম
ক্রমশ সরগরম হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। তবে মেয়র পদে লড়াই নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা। শেষ পর্যন্ত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে না আসলে, উত্তেজনা ছাড়াই নির্বাচন হবে মেয়র পদে। কিন্তু কাউন্সিলর পদে নির্বাচন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ছড়াছড়িতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সিসিক জুড়ে। বিশেষ করে সিসিকের বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডে ঘরে ঘরে যেন প্রার্থী। বিলবোর্ড-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে ওয়ার্ডগুলো। বিষয়টি নজর কাড়ছে সচেতন মহলের। নগর লাগোয়া এই এলাকাগুলো ছিল অনেকটা গ্রামীণ পরিবেশের চিরায়িত রূপে। কিন্তু নগরীতে অন্তর্ভূক্ত হ্ওয়ার সাথে সাথেই যেন শুরু হয়েছে সামাজিক সর্ম্পকের টানাপোড়ন। সেই দৃশ্য প্রতিয়মান হচ্ছে নির্বাচনী মাঠে কাউন্সিলর প্রার্থীদের আধিক্যে।
গ্রামীণ সমাজে পরিবার, গোষ্ঠী তথা বংশীয় একটি দাপট অনস্বীকার্য। কিন্তু সেই দাপটে ফাটল ধরছে সিসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে। প্র্য়া গোষ্ঠীতে একাধিক প্রার্থী। স্থায়ী বিরোধে পরস্পরর সাথে জড়াচ্ছে ঘরের লোক, গোষ্ঠির লোক, ধরছে ফাটলও। এছাড়া পাশাপাশি বাড়ির বসবাসকারীরাও নেমেছেন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। মনে হচ্ছে এ পদ যেন হাতের মোয়া। চাইলেই পাওয়া যায়। প্রার্থীদের এমন আচরণে বিব্রত সাধারণ ভোটাররা। কে কার পক্ষ নিয়ে কথা বলবে। সে কারণে সম্ভব হচ্ছে না শরিক হতে নির্বাচনী উৎসবে। রাস্তাঘাটে বের হলেই প্রার্থীদের মুখোমুখি। কোনরকম মুখ লুকিয়ে চলতে পারলেই যেন বাঁচেন তারা। প্রার্থীরা কম কিসে গোয়েন্দাদের মতো ভোটারদের সাথে লেগেই আছেন, কে কার সাথে চলছে, বসছে ও বলছে। চলমান এমন তৎপরতায় ভোটার ও প্রার্থীদের ব্যক্তিগত সর্ম্পকও রক্ষা যেন কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। কোন প্রার্থীর সাথে কথা বললে অপর প্রার্থী জেরা শুরু করছেন ক্ষেত্র বিশেষে। কারণ প্রার্থীরা যেমন পরস্পরের স্বজন তেমনি ভোটারাও বাড়ি লোক, আত্মীয় স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী। এক অপ্রত্যাশিত পরিবেশ প্রতিবেশের মুখে পড়ছেন ভোটারা। না পারছেন বলতে, না পারছেন সহ্যতে। কারণ কিছু বলতে গেলেই ক্ষেপে যান প্রার্থীরা। মনে করেন কারো পক্ষ নিয়ে তার বিপক্ষে অবস্থান করছেন। সেকারনে মুখে কুলুপ এঁটেও পরিত্রাণ হচ্ছে না এ পরিস্থিতির। সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে শাদিতে দাওয়াত নিয়েও বিপাকে ভোটারা। কোন প্রার্থীকে দাওয়াত দিলেন কাকে বাদ দিলেন, সেই কৈয়ফতও দিতে হচ্ছে অনেককে। চলমান অবস্থা নির্বাচন পর্যন্ত বিদ্যমান থাকলে হয়তো কষ্ট করে সবাইকে ম্যানেজ করে পার করা যেত। কিন্তু এ পরিস্থিতির ভয়াবহতা নির্বাচন পরিবর্তি দিনগুলোতে দৃঢ় হবে বলে মনে করছেন সমাজের মানুষ। স্থায়ী হিংসা বিদ্বেষ, সামাজিক সর্ম্পক তথা পারস্পরিক ঐক্য হুমকির আশঙ্কা করছেন অনেকে। এমনকি অনেক ওয়ার্ডগুলোতে বাড়ি বা গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক জনের প্রার্থীতা নিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ দেখা যাচ্ছে মানসিক উত্তেজনা।
নগরীর ৪১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিমভাগ আ/এ বাসিন্দা প্রাক্তন মেম্বার মাসুকুর রহমান বলেন, কঠিন এক পরিস্থিতির মুখে পড়ছি আমরা। আমার গ্রামে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সংখ্যা ৮ জন। কিন্তু সকলের সাথে আমাদের সামাজিক সর্ম্পক। নানা দাবীতে সমর্থন আশা করছেন একেক প্রার্থী। কিন্তু কিছু বলার নেই। পুরদস্তুর চলতে হচ্ছে অভিনয়ে মধ্যে। বিষয়টি দংশিত করছে বিবেককে। কিন্তু কোন সমাধান সামনে নেই। সামাজিক ঐক্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। সকল প্রার্থী যেমন আপনজন, তেমনি সামজিক সর্ম্পকের বন্ধনে আবদ্ধ। কাকে রেখে কাকে দূরে রাখি। তাই মহাটেনশনে আমার মতো ভোটারাও। তিনি বলেন, প্রত্যক প্রার্থীই নিজকে যোগ্য মনে করছেন, অথচ সাথে সমাজের মানুষের প্রকাশ্য সমর্থন বা সহযোগীতা দৃশ্যমান নেই তাদের পক্ষে। অতীতে নির্বাচন আসলে যে বিষয়টি সুষ্পষ্ট হতো। সামগ্রিক বিবেচনায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন তামাশায় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতি আমাদের সামাজিক সর্ম্পক ও ঐক্যে রক্ষার আগামী দিনগুলোকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এর খেসারতে সমাজ সভ্যতা পুরোদমে দেউলিয়াত্বের পথে। এদিকে, সিসিক নির্বাচনে মনোনয়ন সংগ্রহে প্রতীয়মান হচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের তোড়জোড়। গতকাল পর্যন্ত বিকাল ৪টা পর্যন্ত মেয়র পদে মোট ৪ ও কাউন্সিলর পদে ২৬৭ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। মেয়র প্রার্থী তিনজন স্বতন্ত্র হিসেবে এবং একজন দলীয় প্রতীকে কিনেছেন মনোনয়ন। আর কাউন্সিলর পদে ২৬৭ জনের মধ্যে ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (মহিলা কাউন্সিলর) ৫৯ জন এবং ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে (পুরুষ কাউন্সিলর) ২০৮ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। মেয়র পদে মনোনয়ন কেনা তিনজন হলেন- মোহাম্মদ আবদুল হানিফ ওরফে কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার ও হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাত পাখা)। এসব তথ্য গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় নিশ্চিত করেছেন সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরশায়িত সেনা অফিসার লেফটেন্যান্ট নির্জন
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর ইন্তেকাল
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী আর নেই, ইনকিলাব সম্পাদকের শোক
মতলবে ৯ বাল্কহেড, ১টি লোড ড্রেজারসহ আটক ২৮
জাভেদ পরিবারের ভেল্কি
দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী চক্রান্ত রুখে দিতে হবে -ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
মরিচ্যা চেকপোষ্টে ৩০ লাখ টাকার ইয়াবা উদ্ধার করল বিজিবি, আটক -১
জো বাইডেন অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন
জাস্টিন ট্রুডোকে ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার দিলেন ইউনূস
শেরপুরে আদালতের হাজতখানা থেকে আসামির পলায়ন- ৩ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে যুবক নিখোঁজ লাশ উদ্ধার
বিভাগীয় কমিশনার, এডিসি ও ইউএনও পরিবর্তন হবে
হিন্দুরা আমাদের নাগরিক, আমরা তাদের দেখভাল করছি: নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস
তীব্র দাবদাহে পুড়ছে রংপুরসহ উত্তর জনপদ : বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন
জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ
সিংগাইরের সড়ক দূর্ঘটনায় ১ নারীর মৃত্যু
ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অপতৎপরতায় লিপ্ত : তারেক রহমান
টেলিটকের আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজ জেন-জি
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে দৃষ্টি হারানোদের পাশে নগর সভাপতি'র নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ