নির্দলীয় সরকারের দাবির ফয়সালা হবে রাজপথে
০৯ মে ২০২৩, ১০:৪৫ পিএম | আপডেট: ১০ মে ২০২৩, ১২:০৪ এএম
ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারের অধীনের কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য হতে পারে না এবং জনগণ স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সংসদ ভেঙে দিয়ে এই অবৈধ সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই জনগণের মনোভাব বুঝে বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা মেনে সরকারকে পদত্যাগের আহ্ববান জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজপথে এই দাবির ফয়সালা হবে। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সারাদেশে মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনী মাঠ শূণ্য করতে সরকার আবারো পুরনো খেলা শুরু করেছে। তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়, তাদের কোনো জনগণের ম্যান্ডেট নেই, তারা আবারো ২৩ সালের ডিসেম্বর অথবা ২৪ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই নির্বাচন নিয়ে আগের খেলাতে মেতে উঠেছে। তারা যেভাবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফলাফলটাকে তাদের পক্ষে নিয়েছিলো ঠিকই কায়দায় আজকে এখন থেকে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণভাবে মাঠ থেকে সরে যাওয়ার জন্য তারা নির্বাচনে যেটা আমরা বলি ‘রিগিং প্রসেস’ সেটা তারা শুরু করে দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার সময় থেকে তারা শুরু করেছিলো। এবার তারা অনেক আগে থেকে শুরু করেছে যে, মামলা-মোকাদ্দমা, সন্ত্রাস-ত্রাস, বিভিন্ন আইনের মধ্য দিয়ে মিথ্যা মামলা ও গায়েবী মামলা করে আবারো নেতাকর্মীদেরকে মাঠ থেকে পুরোপুরিভাবে সরিয়ে দেয়ার কাজটি শুরু করেছে। তাদের (সরকার) নীলকশার লক্ষ্য হচ্ছে একটা নীলনকশার নির্বাচন করা। বিরোধী দলকে পুরো মাঠ থেকে বের করে দেয়া এবং এরপর সেই নীলনকশার নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসা-এটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। এবার একেবারেই সেটা পারবে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণ ইতোমধ্যে রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলন শুরু করেছে। এই আন্দোলনে ইতোমধ্যে আমাদের ১৭ জন মানুষ রাজপথে প্রাণ হারিয়েছে, অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। তারপরও আন্দোলন চলমান আছে, আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন আরো বেগবান হবে, তীব্র হবে। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকার বাধ্য হবে জনগণের দাবি মেনে নিতে।
খুব শিগগিরই নতুন কর্মসূচি:
খুব শিগগিরই সরকার পতন আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলন একটা ওয়েভের মতো। এটা কখনো উঠে, কখনো নামে। সেটা জনগণের সব পরিপ্রেক্ষিত বুঝে নিয়ে আন্দোলনটা করতে হয়। যেমন রোজার মাসে তো স্বাভাবিকভাবে তো যারা রোজা রাখেন, সেটা খেয়াল রাখতে হয়। তখনো আমরা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি, পদযাত্রা, সমাবেশ করেছি। এখন আমরা যারা আন্দোলনের অংশীদার, শরিক দলগুলো আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত আলোচনার পর্যায় এসছি। খুব শিগগিরই নতুন করে কর্মসূচি জানতে পারবেন।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে তাই না। তারা যে সমস্ত মিথ্যা মামলা অতীতে দিয়েছিলো সেই মিথ্যা মামলাগুলোর চূড়ান্তভাবে রায় দেয়ার জন্যে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটা তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিচ্ছে। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা (সরকার) এখন ব্যবহার করতে শুরু করেছে ইনক্লুডিং জুডিশিয়ারি এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন। কিভাবে বিরোধী দলের সিনিয়ন নেতৃবৃন্দ, নেতৃবৃন্দ এবং যারা এই চলমান আন্দোলনে নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরকে কিভাবে মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া যায় সেজন্য তারা কাজ করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচনকালীন সরকারের বিএনপিকেও আমন্ত্রণ জানানোর ইঙ্গিতের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) কি বিশ্বাস করেন? ২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করে আমরা তার সাথে সংলাপে বসেছিলাম। সেই সংলাপে যে সমস্ত কথা তিনি দিয়েছিলেন সেগুলোর একটাও তারা রক্ষা করেননি। সুতরাং ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় আস্থা রাখা, বিশ্বাস করা-এটার প্রশ্নই উঠতে পারে না। এগুলোকে আমি মনে করি, এটা আরেকটি চক্রান্ত জনগণকে বিভ্রান্ত করবার। তারা বলবে যে এই তো আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, ওরা শুনছে না, যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাদের কথা খুব পরিস্কার- আমরা বিএনপিকে ক্ষমতায় নেয়া বা বিরোধী দলকে ক্ষমতায় নেয়া এজন্য আমরা আন্দোলন করছি না। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষ যেন ভোট দিতে পারে সেজন্য আমাদের আন্দোলন। গত দুইটি নির্বাচনে মানুষ ভোটই দিতে পারেনি এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও তারা ভোট দিতে পারেনা। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে একটা উপনির্বাচন হয়েছে নির্বাচন কমিশন বলছে যে, মাত্র ১৪% মানুষ ভোট দিয়েছে। তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে? যেখানে ভোটে মানুষ উৎসব করতো সেই জায়গায় ১৪ ভাগ লোক ভোট দিতে যায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা না করলেও আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন, বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে তারা। গাজীপুরে একট ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। একতরফা বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন করছে। সিলেটে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার ও বাসায় বাসায় তল্লাশি করছে। এই বিষয়টি সিলেটের নেতৃবৃন্দ সেখানকার পুলিশ কমিশনারকে অবহিত করেছে।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সাথে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা কাউকে কোনো নালিশ করি না, কাউকে কিছু বলতে যাই না, এটা মনে রাখতে হবে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এখানে বিদেশী যেসমস্ত মিশন আছে অথবা যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে রুটিন আলোচনা হয়, সেই আলোচনা হয়েছে।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
অলিভিয়া হাসি : কিংবদন্তি অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
ঈশ্বরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলার আসামি আটক
প্রকৃতির সাথে হাসছে সরিষা ফুল, সাথে মিশে আছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন
সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক :স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ছাত্রদের সহযোগিতা চাইলেন আইজিপি
উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী কাউন্সিলের নির্বাচন
শ্যামনগর জুয়ার মাস্টার এজেন্টরা রক্ষা পেতে রাজনৈতিক নেতাদের ছায়াতলে
‘অবৈধ দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ: রিজভী
আমাদের প্রধান কাজ গণহত্যার বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
কীর্তিমানসহ সব বাবাই হচ্ছেন আমাদের জন্য বটবৃক্ষ- মাহমুদুল হক রুবেল
রামগতিতে কৃষকের ধান পুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা
পানামা খাল নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ অমূলক : জোসে রাউল মুলিনো
৫৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও বিকাশের ডিএসও ইমরান গ্রেপ্তার
কোন সুদী সরকারই আর চাই না: অধ্যাপক মজিবুর রহমান
টিকটক নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের আবেদন
কুষ্টিয়ায় বিএনপির কর্মীসভায় দলীয় নেতার মতো বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল ওসি
পাকিস্তান-তালেবান সম্পর্কে শীতলতা, ইতিহাস থেকে বর্তমান
কটিয়াদীতে অপহরণের ৫ দিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার
বিকিনি নয় মনোকিনি পরে অভিনেত্রীর স্কাই ড্রাইভিং