গরমে অতিষ্ঠ ঝড় আতঙ্ক
০৯ মে ২০২৩, ১১:৫১ পিএম | আপডেট: ১০ মে ২০২৩, ১২:০৪ এএম
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে আরও ঘনীভূত হতে পারে। এদিকে টানা খরা-অনাবৃষ্টির সাথে সুস্পষ্ট লঘুচাপ-ঘূর্ণিঝড়ের ঘনঘটা যোগ হয়ে গরমের দাপট আরও বেড়েছে। সমগ্র দেশে স্থানভেদে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল আরও অনেক এলাকায় তাপপ্রবাহ বিস্তৃত হয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরও বেড়ে হয়েছে ৪১.২ ডিগ্রি সে.। রাজধানী ঢাকায় মে মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তিন যুগের রেকর্ড ভঙ্গ করে পারদ উঠে গেছে ৩৯.৮ ডিগ্রিতে (প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। ঢাকায় রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ২৮.৪ ডিগ্রি সে.। রাজশাহী, কুষ্টিয়া, পটুয়াখালীতে তাপমাত্রা উঠে গেছে ৪০ ডিগ্রিতে। দেশের বেশিরভাগ জেলায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রিরও ঊর্ধ্বে। যা তাপপ্রবাহের পর্যায়ে।
বৈশি^ক আবহাওয়া-পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো ও গবেষকরা আভাস দিচ্ছেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ অথবা আগামীকাল ধাপে ধাপে নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’, ‘মোখা’ কিংবা ‘মোচা’র সম্ভাব্য গতিপথ নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রাথমিক কিছু পূর্বাভাস মতে, এটি হতে পারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলমুখী। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে চট্টগ্রাম ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
তবে আছড়ে পড়ার ঠিক আগে পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় দিকবদল করতে পারে। অমাবস্যার খুব কাছাকাছি সময়েই যদি ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ে তাহলে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১৩ থেকে ১৬ মে’র মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। এপ্রিল মাসে পূর্বাভাস থাকলেও সাগরে কোন লঘুচাপ-নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। এ কারণে সমুদ্রের পানিতে ব্যাপক শক্তি জমা হওয়ায় আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। আবার ঝড় আঘাতের আগে বা ওই সময়ে যদি প্রবল বৃষ্টিপাত হয় তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ক্ষয় ও এর ফলে কম-বেশি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
লঘুচাপ থেকে ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে ঘনীভূত হতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’, ‘মোখা’ কিংবা ‘মোচা’কে ঘিরে দেশের সমুদ্র উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলের জনসাধারণের মাঝে অজানা ভয়-আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপকূলে ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে আবহাওয়া গুমোট হয়ে উঠছে। সেই সাথে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ঘনঘটার প্রভাবে সারা দেশে তীব্র গরমের কষ্ট-দুর্ভোগ আরও বেড়ে গিয়ে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। স্বস্তির মেঘ ও বৃষ্টির আশায় মানুষ চাতক পাখির মতো আকাশপানে চেয়ে আছে। কিন্তু কোথাও ছিটেফোঁটা বৃষ্টিও নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বিচ্ছিন্নভাবে গোপালগঞ্জে ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাতাসে যেন মরুর আগুনের হলকা। দুপুরবেলা রাস্তায় সড়কে পিচ গলছে। ঠা ঠা রোদের তেজে পুড়ছে শহর-নগর-গ্রাম-জনপদ।
গতকাল সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, দেশের অনেক জায়গায় চলমান মৃদু, মাঝারি ও তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের অবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
অবিরাম মৃদু, মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ এবং দুর্বিষহ জনজীবন। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ উঠে গেছে ৪২ ডিগ্রির ঘরে। তাপপ্রবাহের সাথে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, লোডশেডিং এবং বিশুদ্ধ পানির জন্য সবখানে হাহাকার পড়ে গেছে। টানা খরা-অনাবৃষ্টিতে বৈরী আবহাওয়া, তাপদাহের তীব্রতা এবং বিদ্যুৎ ও পানির জন্য জনদুর্ভোগের কারণে মানুষ প্রায় প্রত্যেক ঘরে বিভিন্ন রোগব্যাধিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এদিকে বৈশি^ক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া-জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’, ‘মোখা’ কিংবা ‘মোচা’ ভোলা থেকে কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী জায়গা দিয়ে উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের অগ্রভাগ উপকূলে আঘাত শুরু করার সম্ভাব্য সময় ১৪ মে দুপুরের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রমের সম্ভাব্য সময় ১৪ মে দিবাগত রাত ১২ টা থেকে ভোর ৬টা। ঘূর্ণিঝড়ের পেছনের অংশ উপকূল অতিক্রমের সম্ভাব্য সময় ১৫ মে ভোর থেকে বিকেল।
ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাতের এটি ‘প্রবল শক্তিশালী’ অথবা ‘শক্তিশালী’ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সমুদ্রে অবস্থানকালে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার। উপকূলে আঘাত হানার সময় সর্বোচ্চ গতিবেগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ১৩০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নচাপ থেকে আজ বুধবার কোন এক সময় এটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভোটার এবার আগের মত ভোট হবে না-মৌলভীবাজারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন
ইহুদি খ্রিস্টানদের স্বর্গরাজ্য পুড়ে ছাই হচ্ছে!
জালিয়াতির প্রশ্ন তুলে শিরোপা হারালেন মিস ইউনিভার্স
‘হাসিনা জানুয়ারিতে দেশে আসবেন দাবি সঠিক নয়’
বকশীবাজারে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়: মামলার বিচারক
বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে : আমিনুল হক
১০ ঘণ্টা অবরোধের পর বকশীবাজার ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা
ভাঙারি দোকানে আদালতের নথির বস্তা
অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে সংঘর্ষ, ৫০ ছাগল পুড়ে অঙ্গার
‘ভ্যাট বাড়ানোর’ পরিকল্পনা থেকে সরে না এলে রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি
সুদহার বাড়ছে সঞ্চয়পত্রে
সুরমা নদীর তীরে জমে উঠেছে শীতকালীন সবজির হাট : প্রতিদিন প্রায় ১২ লক্ষ টাকার বেচাকেনা
মন্দিরে প্রবেশে ফ্রি টোকেন পেতে হুড়োহুড়ি, পদদলিতে নিহত ৬
লক্ষ্মীপুরে বহুতল ভবনের ফাইলিংয়ে বিধ্বস্ত সড়ক-দোকানপাট, ঝুঁকিতে ভবন
রাফির ব্যাংক লেনদেন নিয়ে যা বললেন সারজিস
পটুয়াখালী জেলা জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের সাবেক সভাপতির ইন্তেকাল
আশুলিয়া থানায় নতুন ওসি হিসেবে যোগ দিলেন নুরে আলম সিদ্দিক
বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে আগুন দেওয়া হয়েছে
জকিগঞ্জে ক্রসফায়ারের চার বছর পর ওসির বিরুদ্ধে মামলা
আজকের মধ্যে ন্যায় বিচারের ইঙ্গিত না পেলে শাহবাগ ব্লকেডে যাবেন বিডিআর পরিবারের সদস্যরা