রওশন এরশাদের অনুরোধে নির্বাচন থেকে সরে গেলেন মেয়র প্রার্থী গফফার বিশ্বাস
১৫ মে ২০২৩, ১১:১৯ পিএম | আপডেট: ১৬ মে ২০২৩, ১২:০১ এএম
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস। গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে আমি সরে দাঁড়িয়েছি। জাতীয় নির্বাচনে খুলনা-২ অথবা ৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে অংশ নিতেই আমি কেসিসি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, খুলনায় অসংখ্য শিল্পকলকারখানা থাকায় শিল্প নগরীতে পরিণত হয়। এসব শিল্পকলকারখানার শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খুলনা থেকে সাড়ে তিন লাখ মানুষ খুলনা ছেড়ে চলে গেছেন নির্মম বেদনা নিয়ে। বর্তমানে খুলনার সবেচেয়ে বড় সমস্যা বেকারত্ব। কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার উন্মেচিত হয়নি। দিন যত যাচ্ছে খুলনা এখন পিছিয়ে পড়ছে অর্থনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রে। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কর্মকা- না হওয়ায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই শহর বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে উঠছে। সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অভাব আর যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় দেশের অন্যান্য জেলা শহর ও সিটি কর্পোরেশন থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। এই মাটির সন্তান হিসেবে যা আমাকে ব্যথিত করে। তাই মাঝে মধ্যে খুলনার দাবি নিয়ে আমি সোচ্চার হই। যে কারণে আমি জীবনের শেষপ্রান্তে এসে আবারও খুলনার নাগরিকদের দাবির প্রেক্ষিতে আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি।
তিনি বলেন, বর্তমান খুলনা শহরের যে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তা নিয়ে অনেকের কাছে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকার খুলনার মানুষের জন্য বিপুল অংকের টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু সেই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছেনা। অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ না নেয়ায় সেটি এখন জন ভোগান্তিতে রূপ নিচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাওয়া সড়ক ও ড্রেনেজ প্রকল্প এখন নগরবাসীর গলার কাটা হিসেবে দেখা দিতে পারে। কেননা এই প্রকল্প শেষে দেখা যাবে রূপসা ও ভৈরব নদের পানি এবং সড়ক এবং ড্রেনের ময়লা আবর্জনা নগরবাসীর বসতঘরে প্রবেশ করবে। সৃষ্টি হবে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। যার কিছু কিছু প্রমাণ ইতোমধ্যে নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকা সহ অনেক স্থানের বাসিন্দারা ভুগছেন। এসব এলাকার বাসিন্দাদের নির্মিত ভবনের নিচু তলায় বসবাস বা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে গত পাঁচ বছর নগর জুড়ে খোড়াখুড়ির কারণে সড়কগুলো এখন বেহাল অবস্থা।
গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, এই খুলনা শহরকে সিটি কর্পোরেশন মর্যাদা দিয়েছে বিগত জাতীয় পার্টি সরকার। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালের ৩০ জানুয়ারি। ওই নির্বাচনে প্রতিকূল অবস্থায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস এম এ রব ৪২ হাজার ভোট পেয়ে চমক সৃষ্টি করেন। কিন্তু সেই অবস্থা আর ধরে রাখতে পারেনি জাতীয় পার্টি। আমি পরে বিএনপিতে যোগদান করি। আর এস এম এ রব আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আর নেতৃত্বে যারা ছিলেন, তারাও সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে ব্যর্থ হন। এদিকে গত ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দলীয়ভাবে জাতীয় পার্টি সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী পদে দুইজনকে মনোনয়ন দেয়। সেই দুই প্রার্থীর যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। ওই দু’টি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থী ৩ হাজার ৩৩ ভোট আর অপর প্রার্থী ১ হাজার ৭২ ভোট পান। ১৯৯৪ সালের প্রাপ্ত ৪২ হাজার ভোটের মধ্যে এখন কত সংখ্যক কমে গেছে। এসব চিন্তা করে এবং খুলনার প্রতি আমার মমত্ববোধ থেকে আমি শেষ বয়সে আবারও মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে মাঠে নামি। আমার নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ও সামর্থ্য রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচন করতে অটুট থাকি। কিন্তু জাতীয় পার্টির চিফ প্যাট্রন ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের যোগ্য সহধর্মিনী বেগম রওশন এরশাদ আমাকে সিটি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে অনুরোধ করেছেন। ইতোমধ্যে আমাকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দশম জাতীয় সম্মেলনের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করা হয়েছে। বেগম রওশন এরশাদ এমপির নিদের্শনায় আমি আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন মেয়র পদে নির্বাচন না করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে খুলনাবাসীর ন্যায় সংগত সকল দাবির সঙ্গে আমি আজীবন লড়াই করে যাবো।
তিনি আরো বলেন, আগামী সিটি নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের প্রতি আমার বিশেষ দাবি রাখতে চাই। আর তাহলো, অবিলম্বে খুলনার বেকার সমস্যা সমাধান করে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন। বন্ধ মিলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে কাজ করুন। উন্নত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করুন। অপরিকল্পিত উন্নয়ন না করে জনবান্ধব ও টেকসই পরিবেশ সম্মত উন্নয়ন করুন। যে নাগরিক সিটি কর্পোরেশনকে ট্যাক্স দেয় সেই নাগরিকের মর্যাদা রক্ষা করুন। একটি আধুনিক নান্দনিক নগরী উপহার দিন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ অফিসার নিহত অপর এক ঘটনায় নিহত ২
আখাউড়ায় রেলওয়ের জায়গা থাকা ৪০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬
সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন
ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে