পুরো ভোট বাতিলের ক্ষমতা পাচ্ছে না ইসি
১৮ মে ২০২৩, ১১:২০ পিএম | আপডেট: ১৮ মে ২০২৩, ১১:২০ পিএম
কেন্দ্রে সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকের কাজে বাধা দিলে ৭ বছরের সাজা
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার ৬৪.৮১ শতাংশ
পেশিশক্তি বন্ধ করার জন্য বা অন্য যেকোনো কারণে নির্বাচন চলাকালে যেকোনো মুহূর্তে এক বা একাধিক কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন। রিটার্নিং অফিসারের যে কোনো সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপিল করা যাবে এমন বিধান রেখে জনপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) আইন ২০২৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে গেজেট প্রকাশের পর পুরো ভোট বাতিলের ক্ষমতা সংক্রান্ত যে সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছিল ইসি। সেটিতে সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, যেসব কেন্দ্রে অনিয়ম হবে শুধুমাত্র সেসব কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন, এমন বিধান রেখে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) আইন ২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফলের প্রজ্ঞাপন (গেজেট) হওয়ার পরও প্রয়োজনে নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) সংশোধনী আনার যে প্রস্তাব ইসি দিয়েছিল। চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচন চলাকালে কোনো ভোটকেন্দ্রে বড় ধরনের অনিয়ম, কারসাজি ও ভোট প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার প্রমাণ পেলে ইসি সেই কেন্দ্রের ভোট বা ফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের বেসরকারি ফল প্রকাশের পরও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাবে। যদিও প্রাথমিক সংশোধনী প্রস্তাবে ইসি পুরো আসনের নির্বাচন বা ফল বাতিলের ক্ষমতা চেয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, খসড়ায় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। পূর্বে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার এক সপ্তাহ আগে ঋণ পরিশোধ করতে হতো। মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত প্রার্থীরা কৃষি ও ক্ষুদ্রঋণ এবং বিলখেলাপিরা তাদের খেলাপি টাকা জমা দিতে পারবেন। একইভাবে আয়করের রশিদ সাবমিট করতে হবে। তিনি বলেন, বৈধভাবে সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকের নির্বাচন কেন্দ্রে প্রবেশে ও কাজে যে কেউ বাধা দিলে দুই থেকে সাত বছরের সাজার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে (আরপিও)। এ ছাড়া কোনও কেন্দ্রে অনিয়ম ঘটলে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন।
মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে গুরুত্ব পেয়েছে ইসির নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা নিয়ে। কোনও কেন্দ্রে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা হলে ইসি নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল। গেজেট প্রকাশের পরও সেই ক্ষমতা চেয়েছিল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ইসির প্রস্তাবে রাজি নয় মন্ত্রিসভা। পুরো আসন নয়, শুধু এক বা একাধিক কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ বা বাতিল করতে পারবে ইসি। সবদিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলাভিত্তিক নন, আসনভিত্তিক করার বিধানও যুক্ত হয়েছে সংশোধনীতে। জাতীয় নির্বাচনের সময় আর বেশি নেই। এর আগেই সংশোধিত হচ্ছে গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের (আরপিও) কয়েকটি ধার।
তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন কৃষি ও ক্ষুদ্রঋণ এবং বিলখেলাপিরা তাদের খেলাপি টাকা পরিশোধ করলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে সুযোগ রাখা হয়েছে সংশোধনীতে। বিদ্যমান আইনে সাত দিন আগে এসব পরিশোধের বিধান রয়েছে। আরপিওতে যুক্ত হচ্ছে আরও কিছু নতুন ধারা। সে অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত ইউটিলিটি বিল জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। একইভাবে আয়করের রশীদ সাবমিট করতে হবে। রাজনৈতিক দলের গঠণতন্ত্র, আয়ব্যয় জমা দেওয়ার সময়সীমা ২০২০ থেকে বাড়িয়ে ২০৩০ সাল করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন অনুযায়ী একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা আগে জেলাভিত্তিক হতেন। এখন আসনভিত্তিক করার বিধানও সংশোধনীতে যুক্ত হয়েছে। মন্ত্রিসভা প্রকিউরমেন্ট অথরিটি আইন, সুরক্ষিত লেনদেন, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনসহ তিনটি আইনের খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
জানুয়ারি-মার্চে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার ৬৪.৮১ শতাংশ
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৬টি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৫৪টি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে ৩৫টি, বাস্তবায়নের হার ৬৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। ১৯টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। গত তিন মাসে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতি বা কর্মকৌশল দু’টি, পাঁচটি চুক্তি বা প্রোটোকল অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে আইন পাস হয়েছে ১০টি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এভারকেয়ারে অবহেলায় গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ
সাদপন্থি শীর্ষ নেতা জিয়া বিন কাসিমকে গ্রেপ্তার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন মিজানুর রহমান আজহারী
নীতীশ-সুন্দরের ব্যাটে ফলো-অন এড়ালো ভারত
বগুড়ায় বালু ব্যবসার দ্বন্দ্বে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
সউদীতে নিজ নামেই ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ
অলিভিয়া হাসি : কিংবদন্তি অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
ঈশ্বরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলার আসামি আটক
প্রকৃতির সাথে হাসছে সরিষা ফুল, সাথে মিশে আছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন
সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক :স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ছাত্রদের সহযোগিতা চাইলেন আইজিপি
উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী কাউন্সিলের নির্বাচন
শ্যামনগর জুয়ার মাস্টার এজেন্টরা রক্ষা পেতে রাজনৈতিক নেতাদের ছায়াতলে
‘অবৈধ দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ: রিজভী
আমাদের প্রধান কাজ গণহত্যার বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
কীর্তিমানসহ সব বাবাই হচ্ছেন আমাদের জন্য বটবৃক্ষ- মাহমুদুল হক রুবেল
রামগতিতে কৃষকের ধান পুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা
পানামা খাল নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ অমূলক : জোসে রাউল মুলিনো
৫৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও বিকাশের ডিএসও ইমরান গ্রেপ্তার